1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমাণু বিক্ষোভ

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২

ভারতে দু’টি বড়মাপের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার৷ কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় মানুষের পরমাণু বিরোধী আন্দোলন৷ তাই পথ পরিষ্কার করতে নানাভাবে প্রচেষ্টা শুরু করেছে নতুন দিল্লি৷

https://p.dw.com/p/14ALz
A woman living near Kudankulam atomic plant holds a placard as she participates in an anti-nuclear protest in New Delhi, India, Thursday, Dec. 8, 2011. The protesters demanded scrapping of projects that endanger people's safety and threaten livelihoods, according to a press release. (AP Photo/ Manish Swarup)
ভারতে পরমাণু বিরোধী বিক্ষোভছবি: AP

দক্ষিণাঞ্চলের তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য মহারাষ্ট্রে দু'টি বড়সড় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ভারত সরকার৷ কিন্তু জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের বিপর্যয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন পরমাণু কেন্দ্রের বিপর্যয়ে এখন স্থানীয় মানুষ অনেক সতর্ক হয়ে গিয়েছে৷ তাছাড়া জার্মানিসহ বেশ কিছু দেশ পরমাণু শক্তির বদলে পরিবেশ বান্ধব বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনের দিকে এগুচ্ছে৷ এ অবস্থায় নিজেদের ঝুঁকির কথা ভেবে সম্ভাব্য পরমাণু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছে তামিলনাড়ু এবং মহারাষ্ট্রের মানুষ৷

তবে জনতার এ বিক্ষোভ থামাতে ব্যর্থ হয়ে ভারত সরকার এর জন্য দায়ী করছে ঐ অঞ্চলে কর্মরত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে৷ নতুনদিল্লির অভিযোগ সমাজসেবামূলক সংস্থাগুলো বিদেশ থেকে যে অর্থ সহায়তা পাচ্ছে প্রতিবন্ধী ও দুস্থ মানুষকে সহায়তার জন্য, সেগুলো তারা সেখানে পরমাণু বিরোধী বিক্ষোভ উস্কে দিতে খরচ করছে৷ এটা বেসরকারি সংগঠনগুলোর জন্য বিদ্যমান বিধি-বিধানের পরিপন্থী৷ এ ব্যাপারে দু'দিন আগে স্পষ্টভাবে অভিযোগ তোলেন কেন্দ্রীয় সরকারের এক মন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী৷ তিনি বলেন, তিনটি ত্রাণ সংস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ থেকে অর্থ সহায়তা এনে তা পরমাণু বিরোধী আন্দোলনে খরচ করছে৷ তাঁর ভাষায়, প্রতিবন্ধী ও দুস্থ মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা এনে তা বিধি লঙ্ঘন করে পরমাণু বিরোধী আন্দোলনের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে৷

এছাড়া বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং'ও একই সুরে কথা বলেন৷ তিনি নতুন দু'টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-আন্দোলনের জন্য মার্কিন ত্রাণ সংস্থাগুলোর ইন্ধনকে দায়ী করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘পারমাণবিক শক্তি কর্মসূচি বাধার মুখে পড়েছে মূলত কিছু বেসরকারি সংস্থার কারণে৷ আমি মনে করি এসব সংস্থার অধিকাংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক৷ তারা চায় না যে, আমাদের দেশে জ্বালানি উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পাক৷''

পরমাণু বিরোধী আন্দোলনের জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলার পর এবার তিনটি উন্নয়ন সংস্থার তহবিল বন্ধ করে দিয়েছে নতুনদিল্লি৷ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিনটি বেসরকারি সংস্থার ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে৷ ভারতীয় গণমাধ্যমে বরাতে জানা গেছে, এই তিনটি সংস্থার মধ্যে একটি নাগেরকয়েল অঞ্চলের ‘গুড ভিশন'৷ দ্বিতীয়টি হলো পিপলস এডুকেশন ফর অ্যাকশন অ্যান্ড লিবারেশন-পিইএএল৷ আর তৃতীয় সংস্থাটি ক্যাথলিক রোমান খিষ্টানদের একটি সংস্থা ‘টিউটিকরিন ডিওসেজ অ্যাসোসিয়েশন৷

সংস্থাটির মুখপাত্র ফাদার উইলিয়াম সান্থানাম তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘‘আমরা সরকারের শিকারে পরিণত হয়েছি৷ সরকার আমাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দিয়েছে এবং তারা আমাদের বিরুদ্ধে পরমাণু বিরোধী আন্দোলন সমর্থনের অভিযোগ তুলেছে৷ কিন্তু তা সত্য নয়৷ আমরা আমাদের তহবিল বিদ্যালয় এবং গির্জার জন্য খরচ করি৷ আমাদের প্রতিটি পয়সা এ অঞ্চলে বসবাসকারী ক্যাথলিক রোমানদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়৷'' একইভাবে সরকারের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিইএএল-এর মুখপাত্র ও পরমাণু বিরোধী কর্মী এস পি উদয়কুমার৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য