1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সহায়তায় আগ্রহী ব্লগাররা

১১ জুলাই ২০১২

বিশ্বব্যাংকের ঋণ চুক্তি বাতিলের পর পদ্মা সেতু প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন এই সেতু নির্মাণে৷ সরকার এখন চাইছে নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু তৈরি করতে৷ এতে সায় দিচ্ছেন ব্লগাররাও৷

https://p.dw.com/p/15V5N
ছবি: Fotolia/Claudia Paulussen

পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে৷ এই সেতু নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে বিশ্বব্যাংক৷ পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংক সেতু নির্মাণে যে ঋণচুক্তি করছিল, তা বাতিলের ঘোষণা করে৷ ফলে সেতু প্রকল্পে অন্যতম অর্থ যোগানদাতাকে হারায় সরকার৷ বিশ্বব্যাংক'এর সিদ্ধান্তের পর আরো কয়েক দাতা এখন পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে৷

তবে পদ্মা সেতু নির্মাণে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ সরকার৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে বলেছেন, ‘‘আমরা ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা নিজেরাই পদ্মা সেতু করবো৷ কোনো ডোনার আসলে ভাল, আর কারো কাছে ধর্না দেব না৷''

বলাবাহুল্য, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে৷ নিজস্ব অর্থায়নের বিষয়ে সাধারণ মানুষ সহায়তায় আগ্রহী৷ একইভাবে দুর্নীতির যে অভিযোগে বিদেশি দাতারা সরে দাঁড়াচ্ছে সেটি নিয়েও উদ্বিগ্ন অনেকে৷ গণমানুষের অন্যতম প্রচার মাধ্যম ব্লগ এবং সামাজিক মিডিয়াতে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে৷ ব্লগার নজরুল ইসলাম সাকিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে এই বিষয়ে লিখেছেন, ‘‘পদ্মা সেতু আমরাই করব৷ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাত রয়েছে৷''

ব্লগার কৌশিক আহমেদ পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্লগারদের সহায়তার বিষয়ে কিছু পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ব্লগাররা কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি৷ তারমধ্যে একটি হচ্ছে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি তুলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু তৈরি করার জন্য একটা ফান্ড তৈরি করুন৷ এবং সেটা হবে জনগণের পদ্মা সেতু ফান্ড৷ হতে পারে এই ফান্ডের জন্য কোন একটি সরকারি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকবে৷ এই অ্যাকাউন্টটা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার হবে এবং সেটা সুইফ্ট কোডসহ, যেন দেশের বাইরে থেকেও মানুষ টাকা পাঠাতে পারে৷ প্রধানমন্ত্রী নিজে বিভিন্ন ব্লগ সাইট এবং ফেসবুকের মাধ্যমে এই বিষয়টি মানুষের কাছে প্রকাশ করবেন৷''

The river Padma Bangladesch
পদ্মা নদীছবি: DW/Swapan

বলাবাহুল্য, পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজন প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার৷ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে অল্প সময়ে এই প্রকল্পের জন্য বড় অঙ্কের অর্থের সংস্থান সম্ভব কিনা সেটাও একটি বড় প্রশ্ন৷ সম্প্রতি সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ মোবাইল কল চার্জ থেকে অর্থ সংগ্রহের প্রস্তাব করেছেন৷ ব্লগার আরিফ জেবতিক এই প্রসঙ্গে ফেসবুকে একটি গণিত ধাঁধা প্রকাশ করেছেন৷ সেটি হচ্ছে, ‘‘পদ্মাসেতুর বাজেট হল ২২ হাজার কোটি টাকা৷ দেশের ৩ কোটি অ্যাকটিভ মোবাইল ফোনের প্রতিটি থেকে গড়ে ৫টি কল করা হলে, আর সেই প্রতি কলে ২৫ পয়সা করে কাটলে কতদিনে পদ্মাসেতু তৈরি করা সম্ভব? সঠিক উত্তর কমেন্টের ঘরে জানান৷'' বলাবাহুল্য, মন্তব্যের ঘরে অনেকেই লিখেছেন, এভাবে সেতু নির্মাণে অর্থ সংগ্রহ করতে ১৬ বছরের বেশি সময় প্রয়োজন৷

কৌশিক আহমেদ অবশ্য আশাবাদী৷ তিনি মনে করেন, জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সরকারের অন্যান্য খাত মিলিয়ে বর্তমান সময়েই সেতু নির্মাণ সম্ভব৷ কৌশিক বলেন, ‘‘ ইতিমধ্যে ১২'শ কোটি টাকার মতো বাংলাদেশ সরকার নিজেদের অর্থেই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ করে ফেলেছে৷ সুতরাং কাজ চলছে, কাজ শুরু হয়ে গেছে৷''

তবে জনগণের ‘চাঁদায়' পদ্মা সেতু বানানোর চিন্তার সমালোচনা করেছেন ব্লগার পারভেজ আলম৷ সামহোয়্যার ইন ব্লগে তিনি লিখেছেন, ‘‘জনতার কাছে চান্দা তুলে পদ্মা সেতু বানাও' এহেন আবেগি প্রচারণা আমাদের তেমন কোন কাজে আসবেনা৷ নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতু বানাতে হলেও সেইটা সঠিক এবং বাস্তব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়া করতে হবে৷ আমি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধী, আমার অবস্থান দেশীয় শিল্পের বিকাশের পক্ষে৷ আমরা দাবি করবো যে শেয়ার বাজার থেকে পদ্মাসেতুর বিনিয়োগ সংগ্রহ করা হোক৷''

উল্লেখ্য, দুর্নীতির যে অভিযোগে বিদেশি দাতারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করছে, সেই বিষয়েও ব্লগে রয়েছে আলোচনা৷ আমরাবন্ধু ব্লগে শওকত মাসুম এই বিষয়ে লিখেছেন, ‘‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে৷ আর এ জন্য মূলত দায়ী মাত্র একজন ব্যক্তি৷ আর তিনি হলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন৷ তাঁর কারণেই বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন প্রথমে স্থগিত করে রাখে, আর সর্বশেষ বাতিলই করে দিয়েছে দাতা সংস্থাটি৷''

গ্রন্থনা: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য