1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশু যৌনকর্মী

দেবারতি গুহ৫ জানুয়ারি ২০১৩

শিশুদের জগৎ বড়দের চেয়ে শুধু আলাদাই নয়, অনেক বেশি রঙিন আর প্রাণবন্ত৷ অথচ এই শিশুদের নিয়ে অপরাধের ঘটনা বেড়েই চলেছে৷ এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিশু যৌনকর্মীর সংখ্যা৷ যারা নিজেরাই এগিয়ে এসেছে এর প্রতিকারে৷

https://p.dw.com/p/17ETJ
ছবি: Lauren Farrow

‘চিলড্রেন ইন ইন্ডিয়া-২০১২' শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, শিশুকে কেন্দ্র করে অপরাধের দিক থেকে সবচেয়ে দুরবস্থা উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, বিহার এবং অন্ধ্র প্রদেশের৷

জানা গেছে, মেয়ে শিশুদের যৌনকর্মী হিসেবে কেনার অভিযোগে গত বছর দেশটিতে অন্তত ২৭টি মামলা করা হয়৷ এর মধ্যে ৭৪ শতাংশ মামলা করা হয়েছে মহারাষ্ট্রে৷ অন্যদিকে, যৌনকর্মী হিসেবে মেয়ে শিশুদের বিক্রি করার অভিযোগ আনা হয়েছে অন্তত ১১৩ বার৷ এ কারণেই, এবার নিজেদের অধিকার আদায়ে স্বচেষ্ট হয়েছে শিশুরাই৷

বিহারের মুজাফফারাবাদ এলাকার একটি পতিতালয়ে যৌন কর্মী হিসেবে কাজ করছে ফারজানা, হায়দার এবং নীতা৷ তাদের প্রত্যকের বয়সই ১০ থেকে ১৪ বছর৷ কি স্বপ্ন তাদের? সামনে রাখা সাদা খাতায় একজন ‘লেডি ডাক্তার'-এর ছবি আঁকতে আঁকতে ১০ বছর বয়সি ফারজানা বললো: ‘‘বড় হয়ে আমি ডাক্তার হতে চাই৷''

১৩ বছরের হায়দার হতে চায় ইঞ্জিনিয়ার৷ আর নীতা? তার উত্তর শুনে আপনার-আমার হৃৎপিণ্ডে যেন একটা মোচড় লাগে৷ বেশ কবিতা করেই সে বললো: ‘‘আমি পাখির মতো খাঁচা ছেড়ে উড়ে যেতে চাই দূরে, অনেক দূরে৷''

এরা তিনজনই এখন একটি বেসরকারি সংগঠন ‘পার্চাম'-এর সদস্য৷ সংগঠনের বড় বড় দাদা-দিদিদের সঙ্গে এরাও যোগ দিয়েছে এবার একটি মাসিক পত্রিকা বের করার কাজে৷ ৩২ পাতার এই পত্রিকাটির নাম রাখা হয়েছে ‘জুগনু', বাংলায় যাকে বলে ‘জোনাকি'৷ ঐ যে ছোট ছোট, খুদে খুদে পোকারা যারা অন্ধকারে আলোর বার্তা বয়ে আনে!

নিজেদের পেট চালাতে যাদের যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে হয়, পত্রিকা ছাপানোর টাকা তাদের আর থাকবে কি করে? তাই সে সবের ঝামেলায় না গিয়ে, হাতে করে লিখেই নিজেদের স্বপ্ন আর কল্পনা মিশ্রিত বাস্তব জগতের একটা ছবি ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করছে ফারজানা, হায়দার আর নীতার মতো শিশুরা৷

আশা একটাই৷ সমাজের সাধারণ মানুষের কাছাকাছি নিজের কথা, তাদের নিত্যদিনের লড়াই, প্রতিদিনকার যুদ্ধের গল্প পৌঁছে দেয়া৷ এ বিষয়ে ‘পার্চাম'-এর প্রেসিডেন্ট নাসিমা জানান, ‘‘পতিতালয়ের শিশু মানেই সমাজ বহির্ভূত৷ অন্যদের উচ্ছিষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়৷ আমাদের সংগঠনে যে ছেলেমেয়েরা আসে, তাদের অধিকাংশকেই প্রাতিষ্ঠানিক স্কুল থেকে নাম কাটিয়ে দেয়া হয়েছে৷ তাই আমরা চেষ্টা করছি হাতে লেখা এই পত্রিকার মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন, তাদের প্রতিভাগুলিকেই তুলে ধরতে৷ এতে করে সমাজে একটা মর্যাদার জায়গা যদি তাদের জন্য তৈরি করা যায়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য