1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনের আগে ইইউ অর্থনীতিতে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির চাপ

৪ মার্চ ২০২৪

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইইউভুক্ত দেশগুলোতে সামরিক ব্যয় বাড়ছে৷ ইইউ সংসদের নির্বাচনি প্রচারণাতেও গুরুত্ব পাচ্ছে বিষয়টি৷ সামরিক ব্যয় বাড়াতে গিয়ে সামাজিক কল্যাণ খাতের ব্যয় সংকোচনের আশঙ্কাও উঠে আসছে আলোচনায়৷

https://p.dw.com/p/4d9Ue
আসন্ন ইইউ সংসদ নির্বাচনে সোশাল ডেমোক্র্যাটদের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর বক্তব্য রাখছেন নিকোলাস শ্মিট
শনিবার ইটালিতে ইইউ অঞ্চলের দেশগুলোর সোশাল ডেমোক্র্যাট নেতাদের নির্বাচনি সভা অনুষ্ঠিত হয়ছবি: Remo Casilli/REUTERS

শনিবার রোমে ইটালির সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান কার্যালয়ে ইইউ অঞ্চলের দেশগুলোর সোশাল ডেমোক্র্যাট নেতাদের নির্বাচনি সভা অনুষ্ঠিত হয়৷

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও ছিলেন সেখানে৷ সভায় ইইউ সংসদের সোশালিস্ট ও ডেমোক্র্যাটদের নেতা গার্সিয়া পেরেস বলেন, ‘‘এই নির্বাচনি প্রচারণায় আমাদের সবচেয়ে বড় ইস্যু মূল্যবোধ, গণতন্ত্রএবং আমাদের নিরাপত্তাকে রক্ষা করা৷ ইউরোপের (ইইউ সদস্য) ২৭টি দেশে সেই প্রস্তাবই রাখছি আমরা৷ সেখানে আমরা সকলের জন্য সংহতি, সমতা এবং সুযোগের ভিত্তিতে একটি ভবিষ্যৎ গড়ার প্রস্তাব করছি।’’

ইইউ সদস্য ২৭ দেশে এ নির্বাচন হবে আগামী জুনে৷ ধারণা করা হচ্ছে এ নির্বাচনে ইইউ পার্লামেন্টে দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের অবস্থান ধরে রাখবে সোশাল ডেমোক্র্যাটরা৷

সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের কয়েকটি দেশে সোশাল ডেমোক্র্যাটদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে৷ জার্মানি, স্পেন, রোমানিয়া ও ডেনমার্কে সরকারে রয়েছে তারা৷ পর্তুগালের কেয়ারটেকার সরকারেও রয়েছে সোশাল ডেমোক্র্যাটরা৷

কিন্তু এমন এক অবস্থায় দেশ পরিচালনার দায়িত্বে তারা, যখন করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের জোড়া আঘাতে অর্থনীতি নাজুক৷ তার ওপর ক্রমাগত বেড়ে চলেছে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির চাপ৷ এই চাপ সামলাবে কী করে ইইউভুক্ত দেশগুলো?

মিউনিখভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইফো ইন্সটিটিউট-এর অর্থনীতিবিদ এবং সামরিক নীতিমালা বিশেষজ্ঞ মার্সেল শ্লেপার মনে করেন, চলতি সময়ে ‘‘(ইইউ অঞ্চলে) সামরিক খাতের ব্যয় বহনে নাগরিকদের সমর্থন বেশ ভঙ্গুর৷’’

এমনিতে ইইউ অঞ্চলের দেশগুলোর নাগরিকদের মাঝে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধিতে সমর্থন য়থেষ্ট কম৷ইউরোপের মাত্র চারটি দেশ সুইডেন, বুলগেরিয়া, জার্মানি এবং নরওয়ের ৫০ ভাগের বেশি মানুষ সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির পক্ষে৷ এই চার দেশের মধ্যে নরওয়ে আবার ইইউ সদস্য নয়৷

অথচ ২৭ সদস্যের মধ্যে মাত্র তিনটির নাগরিকদের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধিতে সায় থাকলেও অন্যান্য দেশেও প্রয়োজনে কর বৃদ্ধির মাধ্যমেও তা করার প্রস্তাব বিবেচনায় আসছে৷

জার্মানির সোশাল ডেমোক্র্যাট নেতা  ইইউ পার্লামেন্ট সদস্য ইওয়াখিম শুস্টার মনে করেন,  এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অন্য বিকল্পগুলো বিবেচনায় নেয়া জরুরি৷

এমনটি মনে করার কারণও আছে৷ একে তো অর্থনীতি গত কয়েক বছর ধরেই চাপের মুখে, তার ওপর ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সামরিক খাতের ব্যয় ইতিমধ্যে রাশিয়ার সামরিক ব্যয়ের তিনগুণেরও বেশি হয়ে গেছে৷

রোমের সভায় তারপরও ইইউ সংসদের সোশালিস্ট ও ডেমোক্র্যাটদের নেতা গার্সিয়া পেরেস বলেন, ‘‘আমাদের নিরাপত্তা এবং ইউরোপীয় মডেল, অর্থাৎ সোশ্যাল মডেল – দুটোকেই রক্ষা করতে হবে৷''

এস্তোনিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বর্তমানে ইউরোপীয় সংসদে সামাজিক গণতন্ত্রীদের প্রতিনিধি স্ভেন মিকসার মনে করেন, ইউরোপীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য খাতের খরচ কমিয়ে হলেও সামরিক খাতে ব্যয় বাড়াতে হবে, তবে, ‘‘সামাজিক কল্যাণ খাত থেকেই যে কমাতে হবে এমন কোনো কথা নেই৷’’

মিকসার আরো বলেন, ‘‘সেনাবাহিনী এবং আমাদের নিরাপত্তার জন্য আরো অবদান রাখতেই হবে এখন৷ কারণ, নইলে কয়েক বছরের মধ্যে হয়ত আমরা অসহনীয় একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো৷ এটা এমন এক বিষয় যা নিয়ে কখনো ভোটারদের কাছে আমরা মিথ্যা বলতে পারি না৷''

আলেকজান্দ্রা ফন নামেন/এসিবি