1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী দিবসের ভাবনা

দেবারতি গুহ৮ মার্চ ২০০৯

আন্তর্জাতিক নারী দিবস৷ নারীদের জন্য নিবেদিত একটা গোটা দিন৷ তাই শুধু এক দিনের জন্য হলেও, আমরা স্মরণ করি বিশ্বের অগণিত নারীকে যারা কখনও বিরাঙ্গনা, কখনও বা মোনালিসার রূপে কোমল, অথবা কখনও একুশ শতকের একজন অতি সাধারণ নারী৷

https://p.dw.com/p/H7sF
আফগান চিত্রশিল্পী খাদিজা হাশেমির তুলিতে নারীছবি: AP

বিশ্বে এখনও এমন বহু নারী আছেন, যারা ধরেই নেন যে তাদের জন্ম হয়েছে পরের সেবা করার জন্য৷ কন্যা-জায়া-জননী রূপে তারা সৃষ্টির প্রথম লগ্ন থেকে আমাদের সেবা করেছেন, আপন করেছেন৷ অথচ সেই নারীকে বারে বারেই বঞ্চিত করেছে সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি পরিবারও৷ নারী স্বাধীনতার টেউ এখনও পৌঁছোয় নি বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে৷ আর পৌঁছোলেও, তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থেকে গেছে শুধু কাগজে-কলমে৷ নারীকে নারী হিসেবে তো নয়ই, মানুষ হিসেবেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিতে চায় নি পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ৷

তবে তারপরেও, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও নারীবাদি সংস্থা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন দলিল প্রকাশ করেছে৷ ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে, ভারত-বাংলাদেশের মতো দেশও নারীর অধিকার বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়েছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় নারী অগ্রগতির জন্য প্রশংশিতও হয়েছে তারা৷

কেন না, মানুষ আজ হয়তো বুঝতে পেরেছে, যে কিছু পশ্চাদপদ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের হুমকিতে যে কোন দেশের সরকারই নারীর অগ্রযাত্রায় সহায়তার পথ থেকে সরে আসতে পারে না৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই দাবি উঠেছে নারীকে কোন ধর্মীয় পরিচয়ে নয়, বরং একজন মানুষ ও নাগরিক হিসাবে সমান সুযোগ, অধিকার ও মর্যাদা প্রদানের৷

Somalische Frauen eröffnen Kampagne gegen Mädchenbeschneidung
নারীর ওপর শারীরিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে চলছে প্রতিবাদছবি: picture-alliance / dpa/dpaweb

সে পথ ধরেই, পুরুষতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও নারীতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ব্যাখ্যা উঠে এসেছে৷ খাতা-কলমে তো বটেই, মানষের চেতনাতেও৷ দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র, ইটালি, জপান সহ কিছু পুরুষতান্ত্রিক দেশ ছাড়া, সুইডেন, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও সমাজে নারীর অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে নারী-শিশু-বৃদ্ধ-বেকারদের জন্য কল্যানকর শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা, খাদ্য বা বাসস্থানের মতো মৌলিক অধিকারকে৷

কিন্তু এরপরও, দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী বিশ্বের মোট ১০০ কোটি মানুষের দুই-তৃতীয়াংশই নারী৷ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ উইমেন বা এনওডাব্লিউ৷ তারা জানায়, যে বিশ্বের তিনজন নারীর প্রতি একজন এখনও নির্যাতন, শ্লীলতাহানী এবং বঞ্চনার শিকার হয়ে থাকে৷ আর বিশ্বের কোন কোন দেশে এই সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ৷

তাই স্বাভাবিকভাবেই, বিশ্বের অগুন্তি নারীর সমস্যা অনুধাবন করতে হবে আন্তর্জাতিক নয়, জাতীয় আঙ্গিকে৷ কারণ, সমাজ ও প্রগতি অনুযায়ী বিশ্বের সব দেশে, সব ক্ষেত্রে নারীর অবস্থা সমান নয়৷ নারীরা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক৷ সুতরাং, তাদের মালিকানা ও অংশ থেকে বঞ্চিত রেখে সমাজে প্রগতি আনা যায় না৷ কিন্তু, কোন একক পদ্ধতি আবিষ্কার করে এই প্রগতি কি সম্ভব ?