1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আত্মাহুতি ইস্যু

২১ আগস্ট ২০১২

তিব্বতে একের পর এক ভিক্ষুর আত্মাহুতির ঘটনা ঘটছে৷ আর এতে ব্যথিত হচ্ছেন হিমালয়ের অন্যপাশে অবস্থিত ধর্মশালার মানুষ৷ কারণ তিব্বতের ভিক্ষুদের আত্মাহুতি আর তাদের নির্বাসন যে একই সূত্রে গাঁথা৷

https://p.dw.com/p/15tEP
ছবি: AP

তাদের পক্ষে সম্ভব না মৃত ভিক্ষুদের জীবন ফিরিয়ে দেওয়া, তবে তাদের স্মরণ করা সম্ভব৷ তাই যখনই কোনো ভিক্ষু নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মাহুতি করেন, হিমালায়ের এই পাশে আরও একটি বেশি মোমবাতি জ্বালানো হয়৷

ভারতের এই ধর্মশালাই তিব্বতিদের স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু৷ এর আগেও তিব্বতে ভিক্ষুদের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মাহুতির ঘটনা ঘটেছে৷ তবে এই বছর যেন ভিক্ষুদের আত্মাহুতির ঘটনা ছিল অনেক বেশি৷ এইসব আত্মাহুতি দেওয়া ভিক্ষুরা বীর হিসেবে আখ্যায়িত হন ধর্মশালাতে৷ কারণ তাঁরা নিজেদের জীবন দিয়ে তিব্বতিদের স্বাধীনতার দাবিকে গোটা বিশ্বের কাছে হাজির করেন৷ তবে ধর্মীয় দিক থেকে তাঁদের এই আত্মাহুতি আবার অগ্রহণযোগ্য৷ কারণ বৌদ্ধ ধর্মে আত্মহত্যা নিষিদ্ধ৷ পরিস্থিতিটা আসলেই জটিল৷

এ ব্যাপারে তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী লোবসাং সাংগে বললেন, ‘‘আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট৷ কারণ মানুষ হিসেবে আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোখের সামনে কারো মৃত্যু দেখতে পারি না৷ এবং আমরা বারবার বলেছি, তিব্বতে কেউ যেন এই ধরণের চরমপন্থা অবলম্বন না করে৷ কিন্তু আমরা জানি তারা কেন এটা করছে৷ চীনে প্রতিবাদ জানানোর জন্য কোনো ধরণের উপায় নেই৷ তাই মানুষ হিসেবে তাদেরকে এই ধরণের আত্মাহুতি থেকে নিষেধ করা যায়, কিন্তু অন্যদিকে একজন তিব্বতি হিসেবে তাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে হয় আমাদের৷''

তিব্বতি ভিক্ষুদের এই আত্মাহুতির কারণে গোটা বিশ্ববাসীর সহানুভূতি তৈরি হয় সেখানকার মানুষগুলোর জন্য৷ আবার অন্যদিকে নির্বাসিত তিব্বতি সরকারও চাপের মুখে পড়ে একটা কিছু করার জন্য৷ কারণ আলোচনার মধ্য দিয়ে বছরের পর বছর চলে গেলেও তিব্বতিদের ভাগ্যের কিন্তু কোনো পরিবর্তন হয়নি৷

চাপের কথা স্বীকার করে লোবসাং সাংগে বলেন, ‘‘আমাকে এমনিতেই কঠিন দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, তার ওপর এই ধরণের ঘটনা আমার কাজকে আরও কঠিন করে তোলে৷ আমাদের অবস্থান স্পষ্ট৷ আমরা অহিংসতার পক্ষে, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে৷ এই দুটি হচ্ছে আমাদের মূল নীতি যা নিয়ে কোনো আপস সম্ভব নয়৷''

বিগত ২০১১ সালের এপ্রিল মাস থেকে নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন লোবসাং সাংগে৷ এই মুহূর্তে তিনিই তিব্বতকে রাজনৈতিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন৷ কারণ তিব্বতের ধর্মীয় গুরু দলাই লামা তিব্বতের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আরও সামনে ঠেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ গত মার্চ মাসে তিনি সেই কথাও জানান৷ এরপর দলাই লামা সিদ্ধান্ত নেন পুরোপুরি অবসরে চলে যাওয়ার৷ দলাই লামার পর এখন সাংগের কাঁধে অনেক দায়িত্ব এসে পড়েছে৷ বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের সাবেক ছাত্র লোবসাং সাংগে৷

পশ্চিমা বিশ্বে দলাই লামার অনেক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র থাকা সত্ত্বেও তিব্বত নিয়ে চীনকে একবিন্দুও টলানো সম্ভব হয়নি৷ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে থাকা অনেক তিব্বতি তরুণ এখন অস্থির হয়ে উঠেছে৷ তাই এখন মাঝে মধ্যেই দেখা যায় তিব্বতের ভিক্ষুদের আত্মাহুতির ঘটনা৷ চীনের কঠোর বাধানিষেধের মধ্যে সেটা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে আগামী দিনগুলোতে৷

প্রতিবেদন: কাই ক্যুস্টনার / আরআই

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য