1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ড্যোর্ফলার: ইউরোপে অনুঃপ্রবেশকারীদের একটা অংশকে বৈধ পরিচয়পত্র দেওয়া উচিত

সিলভিয়া এঙ্গেলস / সঞ্জীব বর্মন৯ জুলাই ২০০৮

ডয়চে ভেলের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত্‌কারে ইউরোপে অভিবাসনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী SPD দলের সাংসদ ভল্ফগাং ক্রাইস্‌ল ড্যোর্ফলার৷

https://p.dw.com/p/EZO2
ফ্রান্সের কান্ শহরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকছবি: AP

প্র. অভিবাসনের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রস্তাব সম্পর্কে আপনার কী মত?

উ. ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে যে শেঙেন এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে, তার মধ্যে অভিবাসন, অনুঃপ্রবেশ, অযাচিত অতিথিদের বহিস্কারের মত ক্ষেত্রে একক নীতি অপরিহার্য৷ সবার আগে এটা মনে রাখতে হবে৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজ়ি এই মুহূর্তে যে প্রস্তাব দিচ্ছেন, তা নতুন কিছু নয়৷ তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেই এই ধরনের কড়া পদক্ষেপের কথা বলে এসেছেন৷ ইটালির প্রধানমন্ত্রী সিলভিয়ো ব্যার্লুস্কোনিও একই সুরে কথা বলেন৷ এসব শুনলে প্রথমে মনে হয় - প্রস্তাব একেবারেই মন্দ নয়৷ কিন্তু সব খুঁটিনাটি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, যে এই সব প্রস্তাবের মাধ্যমে এত রকমের বাধা তৈরী করা হবে, যার ফলে ইউরোপে আসা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে৷

প্র. আপনার সমালোচনার পেছনে মূল যুক্তি কী?

আমার সমালোচনা হল, সদস্য দেশগুলি অভিবাসন, মানে আইনগত অভিবাসনের ক্ষেত্রে কী করছে, সেবিষয়ে প্রায় কিছুই শোনা যাচ্ছে না৷ অবশ্যই এক্ষেত্রে তাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ কিন্তু ইউরোপীয় স্তরে এখন যে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে, তার মধ্যে শুধু অভিবাসনই একমাত্র বিষয় নয়৷ যেমন স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বা অনুঃপ্রবেশকারীরা প্রায়ই যে আইনী স্বীকৃতি পাচ্ছেন, তা বন্ধ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ ফ্রান্সে অনুঃপ্রবেশকারীদের সমস্যার আদৌ কোনো সমাধান হয় নি৷ যারা বহুকাল ধরে সেদেশে বসবাস করছে এবং সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পেরেছে, তাদের বৈধ পরিচয়পত্র পাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি৷ কিন্তু এবিষয়ে কিছুই শোনা যাচ্ছে না৷

প্র. কিন্তু অন্যদিকে আপনার প্রস্তাবের যারা বিরোধী, তাঁরা বলছেন - এভাবে অনুঃপ্রবেশকারীদের আইনী স্বীকৃতি দিলে আরও অনুঃপ্রবেশকারী ইউরোপে প্রবেশ করতে উত্‌সাহ পাবে৷

বিষয়টি মোটেই এত সহজ নয়৷ যেসব দেশ থেকে মানুষ বাধ্য হয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে, একবার তাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন৷ দেশ ছেড়ে বেরিয়ে আসা ছাড়া তাদের সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই৷ চিরকালই অনুঃপ্রবেশ ঘটবে৷ তাই অভিবাসনের ক্ষেত্রে এক ধরনের Circular migration বা চক্রাকার পথের প্রয়োজন৷ আমাদের এমন এক সার্বিক অভিবাসন কাঠামোর প্রয়োজন, যার আওতায় রাষ্ট্রগুলিকে সহযোগিতা করতে হবে৷ কিন্তু সেক্ষেত্রে সব রাষ্ট্রকে একযোগে শরণার্থীদের বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে৷

প্র. আপনি দীর্ঘমেয়াদী নীতির কথা বলছেন৷ কিন্তু স্বল্পমেয়াদী ভিত্তিতে কী করা উচিত ? কারণ ইউরোপের বহির্সীমানার উপর চাপ তো বেড়েই চলেছে৷

হ্যাঁ, স্বল্পমেয়াদী ভিত্তিতে আমাদের Circular migration-এর এক কর্মসূচির প্রয়োজন৷ এর মাধ্যমে মানুষ আমাদের এখানে সীমিত সময়ের জন্য ইউরোপে থাকার এবং কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন৷ ইতিমধ্যেই যে সব অনুঃপ্রবেশকারী ইউরোপে বসবাস করছে, তাদের একটা অংশকে বৈধ পরিচয়পত্র দেওয়া উচিত৷ প্রতিটি সদস্য দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী এক কোটা ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে৷ ইউরোপের বহির্সীমানা অতিক্রম করে যারা সীমান্তবর্তী দেশগুলিতে আশ্রয় খুঁজছে, তাদের একটা অংশকে ইউরোপের অন্যান্য দেশে পাঠানো যেতে পারে৷ এক্ষেত্রে সদস্য দেশগুলির উচিত, আর্থিক ব্যয়ভার নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া৷ ইটালি বা স্পেনের পক্ষে একা এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় - ইউরোপীয় ইউনিয়নকে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে৷ তাছাড়া যে সব শিল্প সংস্থা বিদেশী অনুঃপ্রবেশকারীদের শোষণ করছে, তাদের কীভাবে শাস্তি দেওয়া যায়, সেবিষয়েও ভাবনা-চিন্তা করা উচিত৷

প্র. বে-আইনী অনুঃপ্রবেশকারীদের বিষয়ে তো কথা হল৷ কিন্তু জার্মানির মত দেশে অভিবাসন নিয়ে বর্তমানে যে আলোচনা চলছে, তার মূল সুর হল, উচ্চশিক্ষিত বিদেশীদের অভিবাসন আরও সহজ করা হোক৷ ইউরোপে কি নতুন এক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে - একদিকে সাধারণ শ্রমিকদের জন্য কড়াকড়ি বাড়ছে, উচ্চশিক্ষিতদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে?

না, শুধু জার্মানিতেই এমন এক আতঙ্ক রয়েছে, যে পোল্যান্ড বা রুমানিয়ার মত দেশ থেকে শ্রমিকেরা এসে অনেক কম মজুরিতে কাজ করতে প্রস্তুত৷ জার্মানি ছাড়া অন্য কোনো দেশে এই সমস্যা তেমন গুরুত্ব পায় না৷ ইউরোপীয় কমিশন এক্ষেত্রে বেশ ভালো কিছু প্রস্তাব রেখেছে - যেমন বছরের নির্দিষ্ট সময় প্রয়োজন অনুযায়ী পূর্ব ইউরোপের শ্রমিকদের কাজ দেওয়া ইত্যাদি৷ সব রকম শ্রমিক বা কর্মীর জন্যই এমন কাঠামো চালু করা যেতে পারে৷