1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী কর্মী

৮ মার্চ ২০১২

বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রযোজক হিসেবে বর্তমানে অনেক নারী কাজ করছেন৷ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান বা সংবাদ বুলেটিন, সবখানেই নারীর ভূমিকা উজ্জ্বল৷

https://p.dw.com/p/14Gys
ছবি: Sherzaad Entertainment

সংবাদ ও বিনোদন মাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশনের যাত্রাটা শুরু হয়েছে মোটে এক যুগ৷ প্রথম দিকে টেলিভিশনে যারা অনুষ্ঠান বা সংবাদ প্রযোজনা করতেন তাদের প্রায় শতভাগই ছিলো পুরুষ৷

টেলিভিশন প্রযোজক পেশায় নারীদের এই যাত্রাটা বাংলাদেশে নতুন৷ এই যাত্রারই সফল মুখ সুমি শাহাবুদ্দিন৷ সংবাদ ভিত্তিক টিভি চ্যানেল সময় টিভি'র নিউজ এডিটর এবং শিফট ইনচার্জ হিসেবে কাজ করছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনো নারী পুরুষের অনেক বৈষম্য আছে৷'' তবে টেলিভিশনে বা গণমাধ্যমে  এই ব্যবাধানটা দিন দিনই ঘুচে আসছে বলেই মনে করেন তিনি৷

আজ থেকে পাঁচ সাত বছর আগেও কোনো একজন মেয়েকে টেলিভিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিতে কর্তাব্যাক্তিরা আশঙ্কা পেতেন৷ কিন্তু মেয়েরা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই আজ সবার আস্থা অর্জন করে নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

বর্তমানে দেশ টিভিতে কাজ করছেন অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন, সুমনা সিদ্দিকী৷ তাঁর মতে, নারীরা ভালো কাজ করছে৷ নিউজ রুমেও আছে তাদের নিয়ে প্রশংসা৷ কিন্তু তবুও অনেক চ্যানেলেই এখনো নারীদেরকে কাজ দেবার ব্যাপারে একধরণের প্রথাবদ্ধ ধারণা প্রকাশ পায়৷

17.07.2010 DW-TV kultur.21 Women Without Men
ডয়চে ভেলে টিভির একটি বিশেষ অনুষ্ঠান থেকে

এই প্রথাবদ্ধা ধারণার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সাধারণত মানুষ ভাবে যে, সৌন্দর্য বিষয়  বা ঘর সজ্জা ইত্যাদি মেয়েদের বিষয়৷ তাই এই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং তারকাদের আমন্ত্রণ করে আলোচনা অনুষ্ঠানের করার মতো হালকা অনুষ্ঠানগুলোই মেয়েদের বেশি করতে দেয়া হয়৷''

তবে সময় টিভির বার্তা প্রধান তুষার আব্দুল্লাহ'র বলেন, ‘‘নারী পুরুষের ব্যাবধান বা বৈষম্য যে একেবারে ঘুচে গেছে এমনটা বলা যাবে না৷ হয়তো এখনো কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু সমস্যা থাকতে পারে৷ কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের পরিবেশই আজ পাল্টেছে এবং তারা এখন নারী সহকর্মী গ্রহণে সক্ষম৷'' তিনি আরো বলেন, এখন যোগ্যতাটাই হলো আসল প্রশ্ন৷ মেয়ে না-কি ছেলে এটার চেয়েও এখন ব্যাক্তির যোগ্যাতাটাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়৷

তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠান সময় টিভির উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার চ্যানেলে পলিটিক্যাল রিপোর্টার থেকে শুরু করে ক্রাইম রিপোর্টার, সংবাদ সম্পাদক, প্যানেল প্রডিউসার এমনকি সিরিয়াস টক শো-এর প্রডিউসার-ও মেয়ে৷ সুতরাং নারীদের এখন আর শুধু ঘর গোছানো বা শিশু-কিশোরের যত্ন নেয়া বিষয়ক অনুষ্ঠান করতে দেবার দিন আর নেই৷''

পাঁচ বছর আগের তুলনায় বর্তমানে টেলিভিশনে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে৷ কিন্তু সুমি শাহাবুদ্দীন বলছেন, রিপোর্টিং-এ নারীর সংখ্যা যে হারে বেড়েছে, অনুষ্ঠান বা সংবাদ প্রযোজকের সংখ্যা তেমনটা বাড়ে নি৷ বরং ‘‘এই সংখ্যাটি এখনো পুরুষের তুলনায় মোটে একভাগ'' বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

সুমী শাহাবুদ্দীন, সুমনা সিদ্দিকী এবং তুষার আব্দুল্লাহ সবাই বলছেন, পর্দার পেছনে কাজ করার ক্ষেত্রে এখনো নারীর সংখ্যা কম৷ এর পেছনে কারণও আছে অনেক৷ তবে তারা এটিও বলছেন যে, ‘‘সময় পাল্টাচ্ছে৷ আর সে পরিবর্তনই দেখা যাচ্ছে টেলিভিশনে নারীদের পেশা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে৷''

প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ