1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৌরবিদ্যুৎ

২৩ মার্চ ২০১২

২০২০ সালের মধ্যে ইইউ’এর সদস্যদেশগুলিকে তাদের বিদ্যুতের চাহিদার অন্তত ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে মেটাতে হবে, যেমন সৌরশক্তি৷ জার্মানি তা পারবে কিনা সন্দেহ৷ তাই নতুন পরিকল্পনা: সূর্যস্নাত গ্রিস থেকে সৌরবিদ্যুৎ আনা৷

https://p.dw.com/p/14Pfb
ছবি: AP

চলতি দশক শেষ হবার আগেই দেশের মোট বিদ্যুৎ খরচের ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে মেটানো বিশেষ করে জার্মানির পক্ষে দুরূহ হবে৷ কেননা জার্মানি আগামী ১০ বছরে তার আণবিক চুল্লিগুলিও বন্ধ করবে৷ কাজেই বিপুল সরকারি অর্থব্যয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়টিকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে৷

অপরদিকে ধীরে ধীরে এটাও উপলব্ধি করা যাচ্ছে যে, জার্মানির সৌরশক্তিতে টাকা ঢেলে বিশেষ কোনো লাভ নেই৷ স্বয়ং চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সমালোচনা করে বলেছেন: জার্মানিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহ প্রদানের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থের ৫০ শতাংশ যায় সৌরশক্তি খাতে; অথচ সৌরশক্তি থেকে মাত্র দুই শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়৷ ম্যার্কেলের প্রস্তাব: নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারে উৎসাহ প্রদানের ব্যাপারটি ইইউ পর্যায়ে সমন্বয় করা হোক৷ এছাড়া গ্রিসে সূর্যালোকের কোনো অভাব নেই; সেখান থেকে সৌরবিদ্যুৎ আনা হোক৷

গ্রিস থেকে সৌরবিদ্যুৎ আমদানির ধারণাটা প্রথম এসেছিল অর্থমন্ত্রী ভোল্ফগাং শয়েবলে'র মাথায়৷ এক বছরের বেশি আগে তিনি এ'বিষয়ে গ্রিসের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমান পরিবেশ মন্ত্রী গিয়র্গোস পাপাকনস্তান্তিনু'র সঙ্গে কথা বলেন৷ ইত্যবসরে সেই ধারণা থেকেই হেলিওস প্রকল্প জন্ম নিয়েছে৷ পাপাকনস্তান্তিনু জানান, ‘‘হেলিওস একটি সরকারি শিল্পসংস্থা হবে৷ তার শাখাসংস্থাগুলি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করবে৷ বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা এই শাখাসংস্থাগুলিতে অংশীদার হতে পারবেন৷''

হেলিওস প্রকল্পে প্রায় দু' লাখ বর্গমিটার এলাকায় প্যানেল বসিয়ে একাধিক ‘সৌরকানন' সৃষ্টি করা হবে৷ বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা এই সব সৌরকানন ইজারা নিতে আগ্রহী হবে বলে পাপাকনস্তান্তিনু আশা করছেন৷ কিন্তু সেই বিনিয়োগকারীরা প্রথমেই জানতে চাইবে, এই বিদ্যুৎ কোথায় বিক্রি করা হবে৷ ইইউ'এর সদস্যদেশগুলির হাতে ২০১৭ সাল অবধি সময় রয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে ভরতুকি দিয়ে তাদের নিজেদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি শিল্প গড়ে তোলার৷ এবং ঠিক এই ভরতুকির কারণেই গ্রিসে উৎপাদিত সৌরবিদ্যুৎ দামের হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে উৎপাদিত বিদ্যুতের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না৷ যেমন জার্মান গ্রিড বা সরবরাহ প্রণালীতে দেবার পক্ষে গ্রিসে উৎপাদিত সৌরবিদ্যুতের দাম বড় বেশি৷

কিন্তু একটা সমাধানের আভাস দিয়েছেন গ্রিক পরিবেশ মন্ত্রী গিয়র্গোস পাপাকনস্তান্তিনু৷ তাঁর কথায়, ‘‘জার্মান সরকার প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা করেছেন যে, তারা আপাতত জার্মান বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রণালীতে বিদেশি সরবরাহকারীদের ঢুকতে দিতে রাজি নন৷ তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২০০৯ সালে প্রদত্ত একটি নির্দেশ আছে৷ তা অনুযায়ী ইইউ সদস্যদেশগুলির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করা চলতে পারে৷ এর ভিত্তিতে আমরা জার্মান সরকার ও অপরাপর সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি, কীভাবে হেলিওস প্রকল্পের প্রথম পর্যায়টিকে মদত দেওয়া যায়৷''

অর্থাৎ গ্রিসে উৎপাদিত সৌরবিদ্যুতের জন্য বিদেশে ক্রেতা না খুঁজে পেলে, কেউ হেলিওস প্রকল্পে পুঁজি বিনিয়োগ করবে না৷ ওদিকে জার্মানিতে ভরতুকি দিয়ে সস্তা করা সৌরবিদ্যুৎ গ্রিক সৌরবিদ্যুতের চেয়ে অনেক কম মূল্যের হলে চলবে না৷ কিন্তু জার্মানির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুতের দামের একটা কাঠামো নির্ধারণ করা সম্ভব৷ মুশকিল এই যে, সেই চুক্তির অর্থ যদি ভরতুকি কমানো হয়, তাহলে জার্মানিতে সৌরবিদ্যুতের ভবিষ্যৎ অন্ধকার৷ এবং সেটা জার্মান সরকারের কাম্য হতে পারে না৷

তাই জার্মান সরকার এবং গ্রিক সরকারের প্রচেষ্টা হল সহযোগিতা৷ জার্মান সৌরশক্তি ও সৌরবিদ্যুৎ সংস্থাগুলি গ্রিসে অর্থ বিনিয়োগ করবে, এবং গ্রিক সরকারকে সেই সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে৷ এমনকি গ্রিসের বিপুল ঋণের ভার কমানোর প্রক্রিয়াতেও এই জার্মান বিনিয়োগকে ইতিমধ্যেই ধরা হয়েছে৷ কাজেই পাপাকনস্তান্তিনু'র আশা: ‘‘আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হেলিওস প্রকল্পের কাঠামো তৈরি হয়ে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস এবং প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হতে পারবে৷... ২০১৩ সালে ফোটোভোলট্যাইক পদ্ধতিতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি নির্মাণ শুরু হতে পারবে এবং ২০১৪ সালে সেগুলি চালু হতে পারবে৷''

প্রতিবেদন: পানাগিওটিস কুপারানিস / অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য