1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে সৌরচুল্লি

৭ আগস্ট ২০১২

বাড়ির মাথায় সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ, বা সরাসরি জল গরম করা, এ সব জার্মানিতে ইতিমধ্যেই চালু৷ কিন্তু শুধুমাত্র সূর্যালোক থেকে আড়াই হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপ সৃষ্টি করা? এবার সেটাও সম্ভব করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/15kyu
Häuser mit Solaranlagen im Ort Freiamt, Ortsteil Ottoschwanden Von Fotograf. Reiner Heß aus Freiamt in Süddeutschland die Bilder wurden von Herrn Heß der DW kostenlos unbegrenzt zur Verfügung gestellt.
ছবি: Reiner Heß

কোলোন-বন বিমানবন্দরে পাওয়া যাবে জার্মান বিমান ও মহাকাশযাত্রা কেন্দ্রের প্রাঙ্গণ৷ তার ঠিক মাঝখানে একটি আট মিটার উঁচু ও সাত মিটার চওড়া আয়না, অর্থাৎ আয়নার কাচ বসানো দেওয়াল৷ এটিকে পরিভাষায় বলে হেলিওস্ট্যাট৷ হেলিওস্ট্যাটটিকে কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে এমনভাবে নড়ানো-চড়ানো যায়, যাতে তার আয়নাগুলি থেকে প্রতিফলিত সূর্যালোক সবসময়েই একটি তথাকথিত কন্সেনট্রেটর'এর উপরে গিয়ে পড়বে৷

নাম কন্সেনট্রেটর কেননা এর কাজ হল প্রতিফলিত সূর্যালোককে অধিশ্রয়ণবদ্ধ অর্থাৎ ফোকাস করা৷ কন্সেনট্রেটরটি আসলে একটি অধিবৃত্ত বা প্যারাবোলা আকৃতির আয়না বা আয়নার সমষ্টি: তাতে ১৫৯টি ষড়ভুজ আয়না মৌমাছির চাকের পদ্ধতিতে লাগানো আছে৷ এই কন্সেনট্রেটর'এর আয়তন এবং বাইরে হেলিওস্ট্যাট'এর আয়তন এক৷ কন্সেনট্রেটর'এর আয়নাগুলিকে প্রতিবার নতুন করে বিন্যাস করার কোনো প্রয়োজন নেই, সেগুলি আগে থেকেই এমনভাবে অ্যাডজাস্ট করা আছে যে, তারা একটি অধিশ্রয়ণবিন্দুর দিকে সূর্যালোক নিক্ষেপ করছে৷ এই ফোকাল পয়েন্টে একত্রিত, সমষ্টিবদ্ধ সূর্যরশ্মির তীব্রতা সাধারণের চেয়ে ৫,০০০ গুণ বেশি৷

ল্যাবরেটরির ভিতরে একটি এক্সপেরিমেন্টের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ক্রিস্টিয়ান রেডার৷ একটি বায়ুশূন্য বাক্স, তার একদিকে কাচ লাগানো৷ মহাশূন্যযাত্রা সংত্রান্ত একটি কোম্পানি তাদের একটি পণ্য এই বাক্সে পরীক্ষা করতে চায়৷ পণ্যটি পরে একটি কৃত্রিম উপগ্রহে লাগানো হবে৷ কাজেই মহাশূন্যে বায়ুশূন্য অবস্থায় সেটি কি পরিমাণ সূর্যালোক ও তাপ সহ্য করতে পারে, সেটাই পরীক্ষা করে দেখা হবে৷ কিন্তু যেহেতু এই সোলার ওভেন বা সূর্যচুল্লিটি অতি তাড়াতাড়ি অতীব গরম হয়ে ওঠে, তাই মাত্র স্বল্পসময়ের জন্য পরীক্ষা চালানো হবে৷ এবং সেটা যখন আকাশ পুরোপুরি মেঘশূন্য৷ এ ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সমস্যাটা সেখানেই, বললেন ক্রিস্টিয়ান রেডার:

Foto Sarah Steffen DW-RADIO/DW-WORLD.DE
ছবি: DW

‘‘কখনো-সখনো আমরা সারা সকালটা ধরে দেখি, মেঘ হচ্ছে কি হচ্ছে না৷ কি ধরণের পরীক্ষা করা হচ্ছে, তার ওপরেও সেটা নির্ভর করবে৷ গতবার আমাদের বলা ছিল, ৭০ সেকেন্ড সোলার ওভেনে রাখবে৷ এর পরের এক্সপেরিমেন্টে দশ সেকেন্ডের বেশি রাখলে চলবে না৷ আবার এমন এক্সপেরিমেন্টও আছে, যেখানে সারাদিন ধরে বস্তুটিকে ওভেনে রাখতে হবে৷''

জার্মান বিমান ও মহাকাশযাত্রা কেন্দ্র বা ডিএলআর'এর পদার্থবিদরা এভাবে মোটরগাড়ির বার্নিশ ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখেন৷ যেমন এক বছর ধরে সূর্যালোকে গাড়ি চললে বিশেষ করে অতিবেগুনি রশ্মির দরুণ গাড়ির রঙ বা বার্নিশের কি ক্ষতি হয়, সেটা জানার জন্য এক বছর ধরে পরীক্ষা চালানোর দরকার নেই৷ ডিএলআর'এর সোলার ওভেনে সেটা একদিনের মধ্যেই জানা যেতে পারে৷ এ কাজে সোলার ওভেনে ৩০০ থেকে ৫০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপ উৎপন্ন করা হয়৷ তবে ডিএলআর'এর সোলার ওভেন তার চাইতে অনেক বেশি তাপমাত্রা সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে, জানালেন সৌরশক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ গের্ড ডিবোভস্কি:

‘‘আমরা ২,৫০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের তাপমাত্রা সৃষ্টি করতে পারি৷ মহাকাশযানগুলি পৃথিবীর বাযুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় যে তাপ সৃষ্টি হয়, তা থেকে সুরক্ষার জন্য সেরামিক বা চীনেমাটির টালি ব্যবহার করা হয়৷ সেগুলো এখানে খুবই সহজে টেস্ট করা যায়৷''

সোলার ওভেনে ৮০০ থেকে ১,০০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপে পানিকে বাষ্পে পরিণত করে সেই বাষ্প থেকে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করা যায়৷ আবর্জনা পোড়ানো থেকে শুরু করে অ্যালুমিনিয়াম গলিয়ে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করা, এ সব কাজেই ডিএলআর'এর সূর্যচুল্লি কাজে লাগানো যেতে পারে৷ এবং এই সূর্যচুল্লি পদ্ধতিতে তাপ সৃষ্টি করে বাষ্পচালিত টারবাইন থেকে শিল্পপর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে, স্পেনের আলমেরিয়ায় ইতিমধ্যেই যা করা হচ্ছে৷

খেয়াল করতে হবে, সৌরশক্তি দিয়ে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে, ডিএলআর'এর বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়াতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন, কেননা তা অনেক বেশি কার্যকরি, যেমন হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনের ক্ষেত্রে৷ অপরদিকে টারবাইন চালানোর জন্যও সৌরশক্তির ব্যবহার অনেক বেশি কার্যকরি প্রমাণিত হয়েছে৷

প্রতিবেদন: ফাবিয়ান স্মিট / এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য