1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘স্টুডেন্ট উইদাউট বর্ডার্স’

২৭ আগস্ট ২০১২

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স কিংবা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স এর নাম আমরা শুনেছি৷ এই দুটি আন্তর্জাতিক সংগঠন সঙ্কটপূর্ণ এলাকাতে কাজ করে থাকে৷ এবার তাদের আদলে গঠিত হয়েছে স্টুডেন্ট উইদাউট বর্ডার্স৷

https://p.dw.com/p/15x81
ছবি: Studieren ohne Grenzen e.V.

ছাত্রদের নিয়ে গঠিত সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যুদ্ধ কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা আক্রান্ত দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা৷ তাদের পড়াশোনা যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ করে দেওয়া৷ জার্মানির ১৩টি রাজ্যে এখন কাজ করছে ‘স্টুডিয়েরেন উনে গ্রেনসেন' বা স্টুডেন্ট উইদাউট বর্ডার্স৷ উল্লেখ্য, জাতিসংঘ এই দশকটিকে ঘোষণা করেছে ‘টেকসই উন্নয়নের শিক্ষা'র দশক হিসেব৷ জার্মান শিক্ষার্থীদের এই সংগঠনটি জাতিসংঘের সেই প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করছে৷

এই সংগঠনের হাত ধরেই জার্মানির ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনির মেয়ে আডা৷ রাশিয়া থেকে স্বাধীন হওয়ার জন্য দুই-দুইবার যুদ্ধ করেছে চেচনিয়া৷ সেকারণে সংঘর্ষপীড়িত চেচনিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থাও অনেকটা ভেঙে পড়েছে৷ এই অবস্থায় তাই ২০০৯ সালে আডা পাড়ি দেন জার্মানিতে৷ তিনি বলেন, ‘‘সেখানে ভালো মানের শিক্ষকের খুবই অভাব৷ আসলে যুদ্ধ চলাকালে শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য কোন ব্যবস্থা ছিল না৷ আর এখানে আমি একেবারে নতুন একটি শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত হয়েছি যেখানে পড়াশোনার জন্য অনেক রকম সুযোগ সুবিধা রয়েছে৷''

Studieren ohne Grenzen
ছাত্রদের নিয়ে গঠিত সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যুদ্ধ কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা আক্রান্ত দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের সহায়তা করাছবি: Studieren ohne Grenzen e.V.

জার্মানিতে পড়াশোনার এই সুযোগ পাওয়ার জন্য সংঘর্ষপীড়িত এলাকা থেকে অনেক ছাত্রছাত্রীই আবেদন করে থাকে৷ তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে অল্প কয়েকজনকে সুযোগ দেওয়া হয়৷ এই কাজটি করে থাকে স্টুডেন্ট উইদাউট বর্ডার্স এর বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ৷ আবেদন করার পর কয়েক সপ্তাহ লাগে তাদের আবেদনপত্রগুলো যাচাই বাছাই করতে, জানালেন চেচনিয়া ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মি ইউলিয়া মিলেভস্কি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় আমরা দশ থেকে বিশের মধ্যে আবেদন পত্র পেয়েছি৷ এগুলোকে পরীক্ষা করতে হয়েছে যে, যারা আবেদন করেছে তারা ঠিকঠাক মত আবেদন করেছে কিনা৷ এগুলোর তথ্যগুলোকে যাচাই করতে হয়েছে৷ দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে হয়েছে, ভিসা দেখতে হয়েছে, যে তাদের মধ্যে কেউ আগে থেকেই জার্মানিতে বাস করছে কিনা৷''

যেসব ছাত্রছাত্রী জার্মানিতে পড়তে আসার সুযোগ পায় তাদের জন্য রয়েছে প্রতি মাসে ৬৫০ ইউরোর একটি বৃত্তি৷ থাকছে তাদের জন্য বিনা পয়সায় জার্মান ভাষা শেখার কোর্স৷ এছাড়া ছাত্রাবাসে তাদের থাকারও ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়৷ জার্মানিতে এইসব ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার পাশাপাশি এখানকার সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গেও পরিচিত হয়৷ পড়াশোনাকালেই তারা তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তাভাবনা করে৷ যেমন গ্রোজনির আডা ইতিমধ্যেই ঠিক করে ফেলেছেন পড়াশোনা শেষে তিনি কী করবেন৷ তিনি বলেন, ‘‘পড়া শেষে আমি একটি যুবকেন্দ্র খুলবো৷ এর উদ্দেশ্য হবে চেচনিয়ার তরুণ সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করা আর তাদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করা৷ আমরা চেচেন সরকারের সঙ্গে সংলাপের সম্পর্ক গড়ে তুলবো এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুবকদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করবো৷''

Studenten beim Studium
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের দশক প্রকল্পে এই সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেছবি: dpa+

কেবল চেচনিয়া নয়, আফ্রিকার কঙ্গো এবং দক্ষিণ এশিয়ার আফগানিস্তান থেকেও অনেকে ‘স্টুডিয়েরেন উনে গ্রেনসেন' এর কল্যাণে জার্মানিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে৷ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের দশক প্রকল্পে এই সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে৷ এই সংগঠনের কর্মীরাও পড়াশোনা করছে৷ তাদের একজন গিনা বুরগার৷ ছয় বছর ধরে তিনি এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত৷ এই বছর তার পড়াশোনা শেষ হবে৷ তবে এরপরও তিনি চান এর সঙ্গে লেগে থাকতে৷ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘এখন দেখার বিষয় জার্মানিতে তরুণ সম্প্রদায় কেমন রয়েছে এবং এই প্রকল্প কেমন সফলতা পাচ্ছে৷ এই মোটিভেশন এই প্রকল্পের সঙ্গে লেগে থাকার অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে৷''

প্রতিবেদন: পিয়া ফ্রুথ/আরআই

সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য