জার্মানিতে ফেসবুকের ‘ফেসিয়াল রেকগনিশন’ এর সমালোচনা
১৯ জুন ২০১১ধরুন, আপনি একটা ছবি তুললেন৷ কোনো এক রাস্তার ছবি সেটি৷ তাতে কয়েকজন মানুষও রয়েছে৷ তবে আপনি তাদের চেনেন না৷ এখন সেই ছবি যদি আপনি ফেসবুকে আপলোড করেন তাহলে ফেসবুকই আপনাকে সাহায্য করবে ঐ মানুষগুলোকে চেনাতে৷ তবে এজন্য ঐ মানুষগুলো ফেসবুকের অন্য কোনো ছবিতে ‘ট্যাগ' করা থাকতে হবে৷ যে প্রযুক্তিতে ফেসবুক এটা করবে সেটার নামই ‘ফেসিয়াল রেকগনিশন'৷
এর ফলে যে কেউ চাইলে ফেসবুক ব্যবহারকারী অথচ অপরিচিত - এমন মানুষ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবে৷ যেটা আদতে সুবিধা করে দিতে পারে বিভিন্ন বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানকে, বলছেন সমালোচকরা৷ এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়েও কেউ কেউ এই সুবিধাকে ভাল বা খারাপ কাজে লাগাতে পারে৷ বিশেষ করে উঠতি বয়সের ছেলেরা সুন্দরী কোনো মেয়ের বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবে এই সুবিধার কারণে৷
আর এজন্যই সমালোচনা হচ্ছে ফেসবুকের নতুন এই সেবার৷ শুরুটা করেছেন ইন্টারনেট নিরাপত্তা কোম্পানি ‘সোফোস' এর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গ্রাহাম ক্লুলে৷ এরপর একে একে বিভিন্ন দেশ এটা নিয়ে কথা বলছে৷ যেমন জার্মানির তথ্য নিরাপত্তা বিষয়ক কমিশনার পেটার শার বলছেন, ব্যবহারকারীদের না জানিয়ে ফেসবুক ‘প্রাইভেসি ডিক্লারেশন'এ পরিবর্তন এনেছে৷ তবে এজন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের নিন্দা করা বা এর প্রতিবাদ জানানো, এমন কোনো কিছু করার কথা এখনো বলেন নি জার্মান কর্মকর্তারা৷
উল্লেখ্য, যুদ্ধপূর্ব নাৎসি আমলের ও যুদ্ধোত্তর পূর্ব জার্মানির গোপন পুলিশ সদস্যদের গোয়েন্দাগিরির কারণে জার্মানির যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেজন্য অনলাইনে তথ্য শেয়ারের বিষয়টি দেশটিতে খুব সংবেদনশীল বলে ধরা হয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, তারা ফেসবুকের এই নতুন সেবার ব্যাপারে তদন্ত করবে৷
এসব সমালোচনার জবাবে ফেসবুক বলছে, ব্যবহারকীরারা চাইলে ‘অ্যাকাউন্ট সেটিংস'এ গিয়ে সুবিধাটা ‘ডিজ্যাবল' করতে পারে৷ তাহলে আর তাদের নাম কেউ ট্যাগ করতে পারবে না৷ তবে এই সুবিধা চালুর আগে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে মতামত নেয়া উচিত ছিল বলে মনে করছে ফেসবুক৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক