1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে তুর্কি অতিথি শ্রমিকদের উপস্থিতির ৫০ বছর

২৯ অক্টোবর ২০১১

৫০ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬১ সালের ৩০শে অক্টোবর জার্মানি এবং তুরস্ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল৷ সেই চুক্তি অনুযায়ী তুরস্ক থেকে অভিবাসী কর্মীরা প্রথম আসে জার্মানিতে কাজ করতে৷

https://p.dw.com/p/131Sk
ডোনার বিক্রেতা রেমজি কাপলানের মত বহু তুর্কি জার্মানিতে স্থায়ী হয়েছেছবি: picture-alliance/dpa

সুলেয়মান কসমেস জার্মানিতে বসবাস করেন কিন্তু বাড়ি বলতে তিনি তুরস্ককেই বোঝান৷ তবে তার নাতি কোনদিনই তুরস্কের জীবন-যাপন সম্পর্কে তেমন একটা স্বচ্ছ ধারণা পাবে না৷

প্রায় ৫০ বছর আগে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন জার্মানির উদ্দেশ্যে৷ মনে সংশয়, অজানা আশঙ্কা৷ সম্পূর্ণ অপরিচিত দেশে কীভাবে কাটবে তার জীবন৷ লক্ষ্য ছিল অর্থ উপার্জন এবং ভালভাবে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা৷ ইস্তানবুল থেকে তাই সরাসরি পরিবার নিয়ে তিনি চলে এসেছিলেন কোলন শহরে৷

সেই সময় কোলনের অন্যান্য কোম্পানির মত মোটর নির্মাতা ফোর্ড কোম্পানিও কারখানার কর্মী খুঁজছিল৷ ষাট এবং সত্তরের দশকে কোলনে অবস্থিত ফোর্ড কোম্পানির শাখা প্রায় বারোশো তুর্কি কর্মী নিয়োগ করেছিল৷ কসমেসও ছিলেন তাদের একজন৷

জার্মানিতে আজ হাজার তুর্কি অভিবাসী চোখে পড়বে যারা কাজের সন্ধানে জার্মানিতে এসে ঠাঁই নিয়েছে৷ কসমেস এখন অবসর নিয়েছেন৷ তার ছেলে এবং নাতি নিয়ে তিনটি প্রজন্ম জার্মানিতে কাটিয়েছেন৷ তার ছেলেরাও কাজ করে ফোর্ড কোম্পানিতে৷

Gastarbeiter Türkei Anwerbeabkommen
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হাজার হাজার তুর্কি শ্রমিক জার্মানির পুনর্গঠনে ভূমিকা রেখেছিলোছবি: picture-alliance/dpa

পুরনো দিনের কথা মনে করতে গিয়ে কসমেস বলেন,‘‘জার্মানদের অত্যন্ত বন্ধুসুলভ মনে হয়েছে৷ সবকিছুতেই তারা সাহায্য করতো৷ কেনাকাটা করার সময় প্রথম দিকে আমি হাত নেড়ে, আকারে ইঙ্গিতে কথা বলতাম৷'' এরপরই তিনি ভর্তি হয়ে যান জার্মান ভাষা শিক্ষা কোর্সে৷ কসমেস জানান,‘‘শুধুমাত্র ভাষা দিয়েই অন্য আরেকটি দেশে নিজেকে সম্পৃক্ত করা যায়৷ যারা জার্মান ভাষাটা রপ্ত করে ফেলত তাদের বেতনও বাড়িয়ে দেয়া হত৷''

৫০ বছর আগে যে চুক্তি সই করা হয়েছিল তাতে চাকরির নিশ্চয়তার কথা উল্লেখ ছিল, থাকার জায়গা দেয়া হবে, একটি নির্দির্ষ্ট মজুরি দেয়া হবে– এর বেশি কিছু নয়৷ তখন ধরে নেয়া হয়েছিল তুর্কিরা কাজের মেয়াদ শেষে একসময় তুরস্কে ফিরে যাবে৷ কিন্তু তা হয়নি৷ জার্মান সমাজের মূল ধারায় তুর্কিদের সম্পৃক্ত করার প্রশ্নও কারো মাথায় আসেনি৷ গোটা জার্মানিতে তুর্কিদের সংখ্যা এখন প্রায় পঁচিশ লক্ষ এবং শিকড় রয়ে গেছে তুরস্কে৷ জার্মানদের একটা অংশ মনে করে যে তুর্কিরা নিজেদের জার্মান সমাজে মানিয়ে চলতে পারেনি, পারছে না৷ তবে সবার মত এমন নয়৷

সংস্কৃতি গবেষক মিশায়েল হফমান মনে করেন, তুর্কিরা এই সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে৷ তিনি বলছেন,

জার্মান সমাজে তুর্কিরা নিজেদের সাফল্যের সঙ্গেই সম্পৃক্ত করতে পেরেছে৷ জার্মান জাতীয় দলের ফুটবল তারকা মেসুত ওয়েজিল তার এক বিশেষ দৃষ্টান্ত৷ এছাড়া তুর্কিদের ‘ডোয়েনার কাবাব' জার্মানদের অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবারের একটি৷ বার্লিনের রেমজি কাপলান ডোয়েনার কাবাব দিয়েই বহু জার্মানের হৃদয় জয় করেছেন৷ অভিবাসী তুর্কি শ্রমিকের সন্তান তিনি৷ কিন্তু এই ‘কাবাব কিং' ক্রোড়পতি৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য