1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানি কি মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে মধ্যস্থতায় সৎ?

২০ নভেম্বর ২০২৩

ইসরায়েলের সঙ্গে জার্মানির স্বঘোষিত বিশেষ সম্পর্ক ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যকার সংঘাত নিয়ে ইউরোপের দেশটির অবস্থানের উপর প্রভাব ফেলছে৷ তা সত্ত্বেও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট প্রায় সবপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান৷

https://p.dw.com/p/4ZEOa
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চান৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকছবি: Michael Kappeler/dpa/picture alliance

ইসরায়েলের সঙ্গে জার্মানির স্বঘোষিত বিশেষ সম্পর্ক ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যকার সংঘাত নিয়ে ইউরোপের দেশটির অবস্থানের উপর প্রভাব ফেলছে৷ তা সত্ত্বেও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট প্রায় সবপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান৷

হামাস সন্ত্রাসীরা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উপর হামলা চালানোর পর এখন অবধি তিনবার মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক৷ সেই হামলায় বারোশর মতো মানুষ, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক, নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল৷ সেই হামলায় প্ররোচিত হয়ে ইসরায়েল গাজায় গত কয়েকদশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র বোমাবর্ষণ করেছে৷ 

সর্বশেষ সফরে বেয়ারবক ইসরায়েল, ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব সফর করেছেন৷ তার প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে গাজায় বেসামরিক মানুষদের ভোগান্তি লাঘব করা এবং ইসরায়েলে হামলার সময় হামাস যাদের জিম্মি করেছে তাদের মুক্ত করতে কাজ করা৷ একইসঙ্গে বেয়ারবক এটা নিশ্চিত করতে চান যে এই সংঘাত যেন আর না ছড়ায় এবং ভবিষ্যতে একটি শান্ত পরিস্থিতি তৈরিতেও কাজ করতে চান তিনি৷

তবে, এই ইস্যুতে জার্মান কূটনীতি সামঞ্জস্য রক্ষা করতে গিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে৷ ‘‘কাউন্টার এক্সট্রিমিজম প্রজেক্টের'' রাজনৈতিক বিশ্লেষক হান্স ইয়াকব শিন্ডলার এই বিষয়ে বলেন, ‘‘এটির (জার্মানির) সবপক্ষের উপর প্রভাব খাটিয়ে এমনভাবে সংকটের দ্রুত অবসান ঘটানো উচিত যাতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়৷''

বেয়ারবক হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বলে লিখেছে সংবাদমাধ্যম৷ পাশাপাশি তিনি পশ্চিম তীরে চরমপন্থি ইহুদি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বেড়ে চলা সহিংসতা নিয়েও কথা বলেছেন৷ তার বক্তব্য হচ্ছে, ‘‘গাজা থেকে বিতাড়ন বা গাজা দখল বা সেটির আকার হ্রাস করা উচিত হবে না৷'' এই বক্তব্য এমন এক সময়ে তিনি দিয়েছেন যখন ফিলিস্তিনি অঞ্চলের জন্য চলতি বছর মানবিক সহায়তার পরিমান বাড়িয়ে ১৬০ মিলিয়ন ইউরো করেছে জার্মানি৷

অবশ্য তাতে সবাই সন্তুষ্ট নন৷ বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে৷ ‘‘যুদ্ধের সমাপ্তি আহ্বান না করা, ইসরায়েলকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করা, গাজায় আমাদের মানুষের বিরুদ্ধে এটির আগ্রাসনকে উৎসাহিত করা'' বলে বেয়ারবকের পশ্চিম তীর সফরের পর এক বিবৃতিতে মন্তব্য করেন ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শতায়েহ৷ 

বিশ্বের জ্বালানি বাজারে ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের প্রভাব

চলতি বছরের শুরুতে ইসরায়েলকে তিনটি জার্মান সাবমেরিন দিতে সম্মত হয় জার্মানি৷

‘‘গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধবিরতি জার্মান কূটনীতির বিবেচনায় এক স্পর্শকাতর ব্যাপার৷ জার্মানি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো থেকে বিরত থেকেছে কেননা তা শুধুমাত্র হামাস সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী করবে,'' বলেন জার্মানির বিদেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ার মিশায়েল রোথ৷

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস তারচেয়ে ‘‘মানবিক বিরতির'' পক্ষে মত দিয়ে ‘‘হামাসকে পরাস্ত করতে ইসরায়েলের সক্ষম হওয়ার'' দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন৷

হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযান শেষ হওয়ার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য গাজা উপত্যকার নিরাপত্তার পুরো দায়িত্ব তার দেশে নেবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷ সেটা কেমন হবে তা অবশ্য পরিষ্কার হয়নি৷

বেয়ারবক এখনও দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন৷ ৩০ বছর আগে অসলো অ্যাকর্ড এই স্বপ্নই দেখিয়েছিল৷ তেল আবিবে বক্তব্য দেয়ার সময় বেয়ারবক এই সমাধানকে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী শান্তি এবং নিরাপত্তার একমাত্র টেকসই মডেল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন৷

প্রতিবেদন: ক্রিস্টোফ হ্যাসেলবাখ/এআই