1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছবি'র জবাবে ছবি

আরাফাতুল ইসলাম৬ মে ২০০৮

এবার আর আত্মঘাতী বোমা হামলা বা বিমান ছিনতাই নয়, আল-কোরআন বিরোধী ছবি ফিত্না'র জবাবে আরেকটি দশ মিনিটের ছবি প্রকাশ করেছে একজন ইসলামী জেহাদী৷ অর্থাত্ ছবি'র মাধ্যমে ছবি'র প্রতিবাদ৷

https://p.dw.com/p/DuP4
ফিত্না'র একটি দৃশ্যছবি: picture-alliance/ dpa

আল-কায়দার সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি ওয়েব সাইটে গত ত্রিশ এপ্রিল দশ মিনিট দৈর্ঘ্যের একটি নতুন ছবি প্রকাশ করা হয়৷ ওই ছবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের উপর বর্বর নির্যাতনের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জর্জ ডাব্লিউ বুশের হাত রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে৷ ছবিটির প্রথম অর্ধেকে ইরাক, প্যালেস্টাইন, আফগানিস্তান এবং ভিয়েতনামের বিভিন্ন স্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্বরোচিত বোমা হামলার ফুটেজ ও শিশুদের আহাজারি দেখানো হয়৷ এরপর ছবিটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের কিছু কথা দেখানো হয়৷ নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর এসব কথা বলেছিলেন বুশ৷ সেখানে বুশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন৷

ওই ছবিতে আরো বলা হয়, ইসলামের আসল শত্রু হচ্ছেন পোপ আর ইসলামের বিরুদ্ধে যে ধর্মযুদ্ধ চলছে তার নেতা হচ্ছেন বুশ৷ ছবিটিতে বুশকে সন্ত্রাসী হিসেবে দেখানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয়েছে৷ এজন্য বুশের বিভিন্ন ভিডিও চিত্র জোড়া দেয়া হয়েছে ছবিটির বিভিন্ন অংশে৷

ছবিটির শেষ অংশে বিভিন্ন জ্ঞানী ব্যক্তির মন্তব্য তুলে ধরা হয়৷ সেখানে মহাত্মা গান্ধী থেকে লিও টোলস্টয় পর্যন্ত নানান ব্যক্তির মন্তব্য রয়েছে৷ হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে জর্জ বার্নাড শ এর প্রশংসামূলক মন্তব্যও গুরুত্ব সহকারে স্থান পেয়েছে ওই ছবিতে৷ এভাবে ১০ মিনিটের এই ছবিতে হযরত মোহাম্মদ (সা:) ও ইসলামকে সম্পূর্ন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখানো হয়েছে৷

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআন বিরোধী ছবি তৈরি করে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন ডাচ পার্লামেন্টের সদস্য খেয়ার্ট ভিল্ডার্স৷ গত ২৭ মার্চ রাতে একটি ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইটে তিনি ১৭ মিনিট দৈর্ঘ্যে'র আল-কোরআন বিরোধী ছবি ফিত্না'র মুক্তি দেন৷ সেখানে নাইন ইলেভেনসহ বিভিন্ন সহিংসতা এবং বোমা হামলা'র সঙ্গে আল-কোরআনের বিভিন্ন সুরা ও আয়াতের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছেন ভিল্ডার্স৷ এজন্য তিনি আল কোরআনের বেশ কিছু আয়াতের ভাষান্তর করেছেন এবং বিভিন্ন স্পর্শকাতর ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করেছেন৷ ছবিটির শেষের দিকে ভিল্ডার্স আল কোরআনের পাতা ছেড়ার একটি দৃশ্য দেখান এবং বিশ্ববাসী'র কাছে আল-কোরআন এর অংশ বিশেষ প্রত্যাখ্যান করার আহবান জানান৷

Indonesien Proteste von Islamisten gegen Koranfilm
খেয়ার্ট ভিল্ডার্স এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদছবি: AP

ফিত্না'র মুক্তির কয়েক ঘন্টা পরই নেদারল্যান্ডস এর প্রধানমন্ত্রী ইয়ান পেটার বাল্কেন-এন্ডে সংবাদ সম্মেলন করেন৷ সেখানে তিনি বলেন, এই ছবিটিতে ইসলাম এবং সহিংসতাকে সমানভাবে তুলে ধরা হয়েছে৷ আমরা এর বিষয়বস্তু প্রত্যাখ্যান করছি৷ বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমানই ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং সহিংসতার বিরোধী৷ তাছাড়া অনেক সময় মুসলমানরাই সহিংসতা'র শিকার হয়৷

এর আগে বাল্কেন-এন্ডে এই ছবিটি মুক্তি না দেওয়ার জন্য ভিল্ডার্সকে অনুরোধও করেছিলেন৷ কারণ এটি ডাচ নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্যও একটি বড় হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে৷

বাল্কেন-এন্ডে'র ঐ অনুরোধের উত্তরে ভিল্ডার্স বলেছিলেন, ডাচ মন্ত্রীসভা ইসলামের কাছে মাথা নত করতে পারে বা আত্মসমর্পনও করতে পারে৷ কিন্তু আমি কখনোই তা করবো না৷

ফিত্না নিয়ে ইসলামী বিশ্বও ছিলো প্রতিবাদমূখর৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডাচ দুতাবাসে হামলাসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটে এর প্রতিবাদে৷ অনেক দেশে ডাচ পণ্য বর্জন করার ঘোষণা দেয়া হয়৷ ছবিটির নির্মাতা খেয়ার্ট ভিল্ডার্সকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে একাধিক দেশে৷ তবে সবচেয়ে মোক্ষম প্রতিবাদটা করলেন একজন জেহাদী৷ এবং সেটা করা হলো আরেকটি ছবি মুক্তি'র মাধ্যমে৷ যেখানে ইসলামের ভাবমুর্তিকে সম্মুন্নত করা হয়েছে- অন্তত বিশেষজ্ঞরা তাই মনে করছেন৷