1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের চন্দ্রাভিযান

৩ সেপ্টেম্বর ২০১২

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে টেক্কা দিতে যুক্তরাষ্ট্র চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছিল৷ ফলে নিল আর্মস্ট্রং আর এডউইন অলড্রিনের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল চাঁদের বুকে পা রাখার৷

https://p.dw.com/p/162Rb
ছবি: NASA/Newsmakers

এরপর প্রায় ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও অন্য কোনো মানুষের পক্ষে আর চাঁদে যাওয়া সম্ভব হয়নি৷

চাঁদে পা রেখেই নিল আর্মস্ট্রং বলেছিলেন ‘‘দ্যাটস ওয়ান স্মল স্টেপ ফর (অ্যা) ম্যান, ওয়ান জায়ান্ট লিপ ফর ম্যানকাইন্ড৷'' অর্থাৎ ‘‘এটা মানুষের জন্য ছোট্ট একটি পদক্ষেপ, আর মানবজাতির জন্য বড় এক অগ্রগতি৷''

ঠিক তাই৷ ঘটনাটা তখন সেরকমই ছিল৷ ১৯৬১ সালে সোভিয়েত নভোচারী ইউরি গ্যাগারিন বিশ্বের প্রথম মানুষ হিসেবে মহাকাশে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা তাদের একজনকে প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদে পাঠাবে৷ এবং এর মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নকে টেক্কা দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ প্রায় আট বছর পর ১৯৬৯ সালের ২১শে জুলাই জার্মান সময় রাত ৩টা ৫৬ মিনিটে প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদে পা রাখেন নিল আর্মস্ট্রং৷ সারা বিশ্বের প্রায় ৫০ কোটি মানুষ সেই দৃশ্য টেলিভিশনে দেখেছিল৷ আর্মস্ট্রং এর ২০ মিনিট পর চাঁদের বুকে নামেন সহ-নভোচারী এডউইন অলড্রিন৷ তাঁরা দুজন মোট ২১ ঘণ্টা চাঁদে হাঁটাহাঁটি করেন এবং সংগ্রহ করেন মাটি, পাথর সহ অনেক কিছু৷

Mondlandung 1969 Neil Armstrong
১৯৬৯ সালের ২১শে জুলাই চাঁদে পা রাখেন নিল আর্মস্ট্রংছবি: picture-alliance/dpa

এরপর কেটে গেছে প্রায় ৪৩ বছর৷ এই দীর্ঘ সময়ে চাঁদকে স্পর্শ করতে পারেনি আর কেউ৷ এর কারণ কী?

এই প্রশ্নের একটা উত্তর হতে পারে এই যে, চাঁদে মানুষ পাঠানোর জন্য অন্য কোনো দেশ হয়তো সেভাবে চেষ্টা করেনি৷ এছাড়া স্নায়ু যুদ্ধের সময় মহাকাশ গবেষণায় সাফল্যের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রভাব দেখানোর চেষ্টা করতো৷ সেজন্য গবেষণা কাজে সরকারের পক্ষ থেকে ‘ব্ল্যাংক চেক' মানে যত টাকা প্রয়োজন দিয়ে দেয়া হতো৷ কিন্তু সেই সময় আর নেই৷ ফলে দেশের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এখন মহাকাশ গবেষণার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়৷ যেমন ২০১০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আর্থিক সমস্যা দেখিয়ে নক্ষত্রপুঞ্জ বিষয়ক গবেষণা কর্মসূচি বাতিল করে দেন৷ ফলে ভবিষ্যতে চাঁদে মানুষ পাঠানোর মার্কিন পরিকল্পনা সেখানেই শেষ হয়ে যায়৷ সেসময় ওবামার সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন আর্মস্ট্রং৷ তিনি বলেছিলেন, এভাবে চলতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্র একদিন মহাকাশ গবেষণায় ‘তৃতীয় শ্রেণির' দেশে পরিণত হবে৷

যুক্তরাষ্ট্রের এই পিছটানের কারণে চাঁদের বুকের পরবর্তী মানুষটি হতে পারেন এক চীনা৷ কেননা এক্ষেত্রে তাঁরা অনেকদূর এগিয়েছে৷ আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধের যে কোনো সময় চীন চাঁদে একটি যান নামানোর চেষ্টা করবে৷ তবে কবে নাগাদ চাঁদে মানুষ পাঠানো সম্ভব হবে সেটা অবশ্য জানায় নি চীন৷

তবে মরিস জোনস নামের এক মহাকাশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বলছেন, মহাকাশ গবেষণায় চীন যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ তারা একজন নভোচারীকে চাঁদে পাঠাতে সক্ষম হতে পারে৷

জোনস চীনের যে অগ্রগতির কথা বলছেন এবার সে সম্পর্কে আমরা কিছু জানবো৷ ১৯৯৯ সালে দেশটি প্রথম মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা শুরু করে৷ এর মাত্র চার বছরের মাথায় ২০০৩ সালে তারা তাদের এক নভোচারীকে সফলভাবে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়৷ আর ২০০৮ সালে প্রথম এক চীনা নভোচারী সফলভাবে ‘স্পেসওয়াক' সম্পন্ন করেন৷

China Shenzhou 8 Andockmanöver
চীনের শেনঝু ৮ মহাকাশযানছবি: Xinhua/dapd

চীনের পরবর্তী বড় সাফল্যটি এসেছে কয়েক মাস আগে৷ সেসময় চীনা এক নভোচারী সফলভাবে ‘ম্যানুয়াল ডকিং' সম্পন্ন করেন৷ এর ফলে মহাকাশে নিজেদের একটি স্টেশন তৈরির কাজে অনেক এগিয়ে গেছে চীন৷ ম্যানুয়াল ডকিং অভিযানে ছিলেন চীনের প্রথম নারী নভোচারী৷

সাম্প্রতিক সময়ে চীনের অর্থনীতি বেশ এগিয়ে যাওয়ায় বিশ্বে তাদের অবস্থান এখন অনেক উপরে৷ এই অবস্থান আরও মজবুত করতে মহাকাশ গবেষণায় চীন ভাল করতে চাইছে৷ চাঁদে মানুষ পাঠিয়ে এক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চায় চীন৷

জেডএইচ / এসবি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য