1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুসলমানদের রক্ষা

বেটিনা ব়্যুল/আরবি২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

ধর্মীয় সংহিসতা সেন্ট্রাল আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ মানুষকে ছুরি-চাপাতি দিয়ে আহত করা হচ্ছে৷ গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে এক যাজক সাহস দেখিয়ে এগিয়ে এসেছেন৷ রক্ষা করছেন নির্যাতিত মুসলিমদের৷

https://p.dw.com/p/1BDnp
যাজক সাভিয়ে-আর্নো ফাগবাছবি: Bettina Rühl

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের শহর বোয়ালির এক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৭০০ ব্যক্তি৷ তাঁরা সবাই মুসলমান৷ অত্যাচার নির্যাতনের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যই এই সব মানুষ ক্যাথলিক গির্জা-চত্বরে নির্মিত সাময়িক এক আশ্রয়স্থলে মাথা গুঁজেছেন৷

গির্জার ভবনে তাঁরা বাস করেন ও ঘুমান৷ শুধু রান্নাবান্না করা হয় বাইরে৷ গির্জার যাজক সাভিয়ে-আর্নো ফাগবা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এইসব অসহায় মানুষের দিকে৷

ধর্মীয় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে এটি ‘এথনিক ক্লিনসিং বা ‘জাতিগত শোধন'৷ জাতিসংঘ কয়েক মাস ধরেই দেশটিতে গণহত্যার ব্যাপারে সতর্ক করে আসছে৷ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে বছর খানেক আগে মুসলিম সেলেকা বিদ্রোহীরা স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগ এনে প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া বোসিসেকে ক্ষমতাচ্যুত করে৷ এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের অনুগত খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও ‘অ্যান্টি-বালাকা' নামে বিদ্রোহী গ্রুপ তৈরি করে৷ দেশটির উত্তরাঞ্চলে মুসলিম সশস্ত্র যোদ্ধাদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা৷ সাধারন মুসলমানরাও সহিসংতার শিকার হয়৷ ঘরবাড়ি ত্যাগ করে পালাত থাকে তারা৷ এদের এক অংশ খ্রিষ্টানদের এক গির্জায় আশ্রয় পেয়েছে৷ এই প্রসঙ্গে যাজক সাভিয়ে-আর্নো ফাগবা বলেন, ‘‘প্রয়োজনের তুলনায় আমি সামান্যই করতে পারি৷ আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও এই কাজটি করতেন৷''

Zentralafrikanische Republik Muslimische Flüchtlinge
আশ্রয় পাওয়া মুসলিম পরিবারছবি: Bettina Rühl

কিন্তু খুব কম মানুষই এক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে৷ যদিও নিরীহ মুসলিমদের রক্ষা করতে এই ধরনের আরো সাহসী পদক্ষেপের প্রয়োজন৷

শেষ মুহূর্তে আত্মরক্ষা

যাজক ফাগবা ও তাঁর এক সহকর্মী শহরে গিয়ে দেখতে পান রাস্তার ধারে ভীতসন্ত্রস্ত মুসলিমদের৷ শেষ মুহূর্তে পালাবার আশা করেন অনেকে৷ তিনি এইসব মানুষকে আশ্বাস দিয়ে তাঁকে অনুসরণ করতে বলেন৷ এরপর তাঁরা দ্বারে দ্বারে আতঙ্কিত মুসলমান জনগোষ্ঠীকে খুঁজতে চেষ্টা করেন৷ অনেকে ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে গিয়েছেন৷ ‘‘সেখানে গিয়েও কয়েক জনকে আমরা ফিরিয়ে আনি৷ খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কয়েকজন তৎপর তরুণ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন৷ ইতোমধ্যে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়েরও কেউ কেউ আমাদের গির্জায় আশ্রয় নিয়েছেন, যাঁরা বিতাড়িত মুসলিমদের পানি ও খাদ্য দিয়ে সাহায্যের চেষ্টা করেছেন'', জানান ফাগবা৷

Zentralafrikanische Republik Muslimische Flüchtlinge
ছবি: Bettina Rühl

আশ্রয়দাতার জীবনও ঝুঁকির মুখে

তাঁকেও এখন ভয় দেখানো হচ্ছে৷ একবার তো জীবন নিয়ে কোনরকমে ফিরেছেন তিনি৷ এক রোববার গির্জা কমিউনিটির এক অসুস্থ সদস্যকে দেখতে যাওয়ার সময় ঘটে ঘটনাটি৷ গির্জা চত্বর পার হয়ে রাস্তায় আসা মাত্রই খ্রিষ্টান মিলিশিয়ারা ঘিরে ধরে তাঁর গাড়িটিকে৷

কোনোরকমে গাড়ি থেকে নেমে ফাগবা জিজ্ঞেস করেন৷ ‘‘ঠিক আছে আমাকে নিয়ে যা ইচ্ছা করতে পার৷ আমার মৃত্যুর ভয় নেই৷'' সেই মুহূর্তে তাদের এক নেতা হাজির হয় ও গ্রুপটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷

জীবন রক্ষা পাওয়ায় সাহায্য চালিয়ে যান সাভিয়ে-আর্নো ফাগবা৷ খ্রিষ্টান মিলিশিয়ারা গির্জা-চত্বরে দু'জন মুসলমানকে আহত করার পর আশ্রিতরা আর কারো ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না৷ শুধুমাত্র মানবদরদী সাভিয়ে-আর্নো ফাগবার ওপর কিছুটা ভরসা করতে পারেন এই অসহায় মানুষগুলি৷ তাও পালাবার চিন্তাটা মাথায় থাকে তাঁদের৷ যত শিগগির সম্ভব দেশ ছাড়তে চান তাঁরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য