ওয়েটলিফটিং-এর সোনা অকালপ্রয়াত স্ত্রীকে
২০ আগস্ট ২০০৮বিজয় মঞ্চে সোনার মেডেল গলায় প্রয়াত স্ত্রী সুজানের ছবিতে আলতো করে চুমু খেলেন জার্মান ভারোত্তলক মাটিয়াস স্টাইনার৷ বাঁধ ভাঙা চোখের জল সামলাতে গিয়ে গলাটা তাঁর ধরে আসে৷
২০০৭-এর জুলাই মাসে এক ভয়াবহ কার অ্যাকসিডেন্টে গুরুতর আহত সুজানকে হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মাটিয়াস, বেইজিং-এ সোনা আমি জিতবই৷ সেই প্রতিশ্রুতি তিনি রেখেছেন৷ রাশিয়ার এভগেনি চিগিশেভ-এর চেয়ে এক কিলো ভার বেশি তুলে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মানবের শিরোপা তাঁর করায়ত্ত হল৷ 'এই ভার ওঠাতে পেরেছি তার কারণ আমার অন্তরের অন্ত:স্থলে সাংঘাতিক এক তাগিদ ছিল', বলেছেন মাটিয়াস স্টাইনার৷
২৬ বছর বয়স্ক ভারোত্তলক মাটিয়াস স্টাইনার-এর জন্ম অস্ট্রিয়ায়৷ টেলিভিশনে ওয়েটলিফটিং-এর এক প্রতিযোগিতায় তাঁকে প্রথম দেখেন জার্মানির মেয়ে সুজান৷ দেখে মোহিত হন৷ ইমেল করেন তাঁকে৷ দেখা হয় তাঁদের৷ আর প্রথম দর্শনেই প্রেম৷ একদিকে সুজানের গভীর টান৷ অন্যদিকে অস্ট্রিয়ায় ওয়েট লিফটিং-এর দুর্বল অবস্থা৷ মাটিয়াস অস্ট্রিয়া ছেড়ে চলে আসেন জার্মানিতে৷ বিয়ে হয় তাঁদের৷ জার্মান নাগরিকত্বের আবেদন করেন মাটিয়াস৷ নাগরিকত্ব পেয়েছেন তিনি জানুয়ারি মাসে৷
মাটিয়াস স্টাইনার কিন্তু ডায়েবেটিস-এর রোগী৷ দিনে বেশ কয়েকবার রক্তে শর্করার মাত্রা তাঁকে মাপতে হয়৷ নিতে হয় ইনসুলিন ইঞ্জেকশন৷ মাত্র ২৩ বছর বয়সে স্ত্রী সুজানের আকস্মিক মৃত্যুর পর নিজের ট্রেনিং হয়ে ওঠে তাঁর থেরাপি৷ ভিতর থেকে জারিত হয় অমিত শক্তি৷ সেই শক্তির পরিচয় রাখলেন তিনি বেইজিং-এ৷
ক্রীড়া ক্ষেত্রে মাদক গ্রহণের বিরুদ্ধে লড়াই-এর প্রবল সমর্থক মাটিয়াস৷ ক্রীড়াবিদদের জন্য বারবার মাদক পরীক্ষার ব্যবস্থাকে তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক বলে তিনি মনে করেন৷
সবকিছু ছাপিয়ে প্রয়াত স্ত্রীর ছবি মাটিয়াস-এর অন্তরে৷ সবসময় আমার মনে হয় কেউ আমার সঙ্গে আছে৷ সুজান নেই অথচ সে আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী, বলেছেন মাটিয়াস৷