1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ

জন ব্লাউ/জেডএইচ২০ নভেম্বর ২০১২

ডিসেম্বরের ৩ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস’ বা ডাব্লিউসিআইটি৷ জাতিসংঘের উদ্যোগ আয়োজিত এই সম্মেলনে আলোচনার মূল বিষয় টেলিযোগাযোগ নীতিমালা৷

https://p.dw.com/p/16m5k
ছবি: Fotolia/alphaspirit

ইন্টারনেটের কারণে আমাদের জীবন এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে৷ বিশ্বের যে কেউ চাইলেই এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার মনের কথা সবাইকে জানিয়ে দিতে পারছে৷ তাদের স্বাধীন মত প্রকাশে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না৷

তবে কয়েকটি দেশ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম৷ সেখানকার বাসিন্দারা পুরোপুরি স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছেন না৷ তারা সরকার বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করলে তাদেরকে গ্রেপ্তার বা নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে৷ এ সব দেশের মধ্যে রয়েছে চীন, রাশিয়া, ইরান৷ এই দেশগুলো ইন্টারনেটকে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে চাইছে৷ তারা জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন' বা আইটিইউ'র মতো একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের পক্ষে৷

ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা চলছে অনেকদিন ধরেই৷ ডিসেম্বরে দুবাইয়ে যে সম্মেলন হতে যাচ্ছে সেখানেও বিষয়টা গুরুত্ব পাবে৷ কেননা ঐ সম্মেলনের আলোচনার মূল বিষয়ই হচ্ছে, টেলিযোগাযোগের জন্য বর্তমানে যে নীতিমালা রয়েছে, সেটার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা করা৷ কেননা ১৯৮৮ সালে এই নীতিমালা প্রণীত হয়েছিল৷ সে সময় ইন্টারনেট সম্পর্কে ধারণা ছিল শুধুমাত্র শিক্ষাবিদদের মধ্যে৷

Netzwerkkabel
ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা চলছে অনেকদিন ধরেইছবি: picture-alliance/dpa

কিন্তু এখন ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে ‘নেটওয়ার্ক অফ নেটওয়ার্কস'৷ সেটা যেমন সত্য সামাজিক বিবেচনায়, তেমনি সত্য রাজনৈতিকভাবেও৷ এছাড়া ইন্টারনেটকে ঘিরে এখন ই-কমার্সের পরিমাণ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে৷

ইন্টারনেট এখন কোনো কোনো দেশে সরকার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে৷ যেমন ‘আরব বসন্ত'এ মূল ভূমিকা ছিল ফেসবুক তথা সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমগুলোর – এমন কথা এখন প্রায় সবাই স্বীকার করেন৷ কেননা অতীতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশের নাগরিকরা সন্তুষ্ট না হলে তা থেকে যেতো শুধু তাদের মনের ভেতর৷ কেউ কারও ক্ষোভের কথা জানতো না৷ কিন্তু ইন্টারনেট তথা ফেসবুক, টুইটার আসায় এখন এই ক্ষোভ আর শুধু নিজের ভেতরই থাকছে না, সেটা ছড়িয়ে পড়ছে অন্যের মধ্যে৷

জেনেভা ভিত্তিক সংস্থা ‘ইন্টারনেট সোসাইটি'র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মার্কুস কুমেয়া বলছেন, ইন্টারনেট মানুষকে বিশাল তথ্যভান্ডারের সন্ধান দেয় এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে স্বাধীনভাবে তথ্য আদানপ্রদানের সুযোগ করে দেয়৷

তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকারগুলো পরিচালিত হয় ‘আপ-বটাম' ভিত্তিতে৷ কিন্তু ইন্টারনেটটা চলছে ‘বটাম-আপ' পদ্ধতিতে৷ এখানে তদারকির কেউ নেই৷ তাই হয়তো অনেক সরকার ইন্টারনেটকে নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে৷

টোকিও ভিত্তিক সংস্থা ‘সেন্টার ফর গ্লোবাল কমিউনিকেশনস' এর গবেষক অ্যাডাম পেকে বলছেন, কয়েকটি দেশ দুবাই সম্মেলনে ইন্টারনেটের স্বাধীনতার উপর রাশ টেনে ধরার প্রস্তাব উত্থাপনের পরিকল্পনা করছে৷ তারা চায় আইটিইউ এর মতো কোনো বৈশ্বিক সংস্থা, যেটা ইন্টারনেটের তথ্য ও ব্যবসায়িক মডেল নিয়ন্ত্রণ করবে; অথবা আইটিইউ এর কর্তৃত্ব বাড়াতে যেন সংস্থাটি নিজেই ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারে৷ কেননা এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের এই সংস্থাটি শুধু টেলিযোগাযোগ ও বেতার নিয়ে কাজ করছে৷ ইন্টারনেট পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে৷

এখন পর্যন্ত, ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হওয়ার মতো কোনো ইচ্ছার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি আইটিইউ৷ সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সংস্থার মহাপরিচালক হামাদুন টুরে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ বলতে শুধু ‘ডোমেইন নেম' আর ‘অ্যাড্রেস'এর কথা বলেছেন৷

তবে গবেষক অ্যাডাম পেকে বলছেন, আইটিইউ অন্য উপায়েও নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় যেতে পারে৷ তিনি বলেন, আইটিইউ'র পরামর্শ মানতে দেশগুলো বাধ্য হবে – এমন প্রস্তাবের কথা বলা হচ্ছে৷ এটা যদি হয় তাহলে আইটিইউ অনেক বড় ক্ষমতা পেয়ে যাবে বলে মনে করছেন পেকে৷

ইন্টারনেট সোসাইটির পল রেন্ডেক মনে করেন, দুবাই সম্মেলনে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও ভবিষ্যতে এটা নিয়ে আলোচনা চলতেই থাকবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য