1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপের অর্থনীতি

৩০ মে ২০১২

গত সপ্তাহে ঘরোয়া বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রশ্নে ঐকমত্যে আসতে পারেন নি৷ জুন মাসের শেষে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের আগে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করবেন৷

https://p.dw.com/p/1545V

সংস্কার বনাম স্টিমুলাস প্যাকেজ

গত সপ্তাহের বৈঠকের পর চলতি সপ্তাহে ইউরোপের নেতারা আপাতত হাতে কিছুটা সময় পাচ্ছেন৷ আগামী ২৮ ও ২৯শে জুনের শীর্ষ সম্মেলনের আগে সম্মিলিতভাবে তাঁদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে না৷ তবে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কারের পাশাপাশি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য চাপ এখনো রয়েছে৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ ইউরোপীয় স্তরে অবিলম্বে ইউরোবন্ড সহ বিভিন্ন সুস্পষ্ট পদক্ষেপ দেখতে চাইছেন৷

Defekte Sterne am Eurozeichen vor der EZB
ইউরো এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে নাছবি: picture alliance/dpa

খোদ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের স্পিকার ও জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী দলের নেতা মার্টিন শুলৎস রাষ্ট্রীয় বন্ডের বাজারে ইউরোপীয় স্তরে বৈষম্যের সমালোচনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ইউরোপের অন্যান্য কিছু দেশকে ৬ শতাংশ সুদ গুনতে হয়৷ ভারসাম্যের এই অভাবের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে৷ তাই ইউরোবন্ড নিয়ে বিতর্কের মূলমন্ত্র হলো, আমরা এই ইউনিয়নের মধ্যে কীভাবে টিকে থাকবো৷ এটা হতে পারে না, যে একজন কোনো সুদই দেবে না, অর্থাৎ লগ্নিকারীরা আমাদের, মানে জার্মানদের অর্থ দেবে৷ অন্যরা ফাটকাবাজির চাপে পড়ে তলিয়ে যাবে৷''

জার্মানির পরিকল্পনা

এই অবস্থায় জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল হাত গুটিয়ে বসে নেই৷ নিজের অবস্থানে অটল থেকেও তিনি কিছু পদক্ষেপের কথা ভাবছেন৷ ইউরোপের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে – ও দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে সেই সাফল্য ধরে রাখতে তিনি একগুচ্ছ প্রস্তাব প্রস্তুত করছেন৷ তবে জার্মানির দাওয়াইয়ের মূলমন্ত্র হলো, সস্তার চমক নয় – যা করার, তা ভেবেচিন্তে, দায়িত্বের সঙ্গে করতে হবে৷

Cuts, Crises and Bailouts - Chancellor Angela Merkel and the Euro Crisis

ইউরোপের যেসব দেশ আর্থিক সংকটে ভুগছে, তাদের সামনে বাজেট ঘাটতি সামলানো ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই৷ জার্মানির বক্তব্য, তারপরই টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে ফেরা সম্ভব৷ শ্রম বাজারকেও জার্মানির মতো ঢেলে সাজাতে হবে – অর্থাৎ অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো, সহজে কর্মী ছাঁটাই করার ছাড়পত্র, বেতন কাঠামোর বিকেন্দ্রীকরণের মতো পদক্ষেপ নিতে হবে৷ গ্রিস ও পর্তুগালের মতো দেশে বেসরকারি লগ্নি আকর্ষণ করতে ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন' বা বিশেষ এলাকা ঘোষণা করা যেতে পারে, যেখানে কর ও শুল্কের হার কম এবং অন্যান্য বাধানিষেধও অনেকটাই শিথিল৷ তবে এসবই খসড়া প্রস্তাব হিসেবে আলোচিত হচ্ছে৷ আগামী ১৩ই জুন জার্মান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত প্রস্তাব পেশ করবে৷ বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এক্ষেত্রে জাতীয় স্তরে ঐক্যমত গড়ে তুলতে চান ম্যার্কেল৷

Belgien EU Gipfel Finanzkrise Angela Merkel und Helle Thorning-Schmidt
ম্যার্কেল’এর দিকেই সবার নজরছবি: Reuters

বাস্তব চিত্র

ইউরোপের দক্ষিণের সংকটে জর্জরিত দেশগুলি এই ধরণের সংস্কারের কাজ আগেই শুরু করে দিয়েছে৷ কিন্তু তার ফল পেতে আরও অনেক বছর সময় লেগে যাবে৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলঁদ এখনই যে বাড়তি সরকারি অর্থের বিনিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন, তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে৷ স্পেনের মতো দেশে ইইউ তহবিল থেকে এমন কৃত্রিম বিনিয়োগের ফলেই রিয়েল এস্টেট বা বাড়িঘর তৈরির জোয়ার উঠেছিল৷ তারপর আচমকা নির্মাণ ক্ষেত্রে ধস নামে৷

সোমবার ইউরোপের অনেক দেশে ছুটি থাকায় মঙ্গলবার পুঁজিবাজার খুলেছে৷ গত দুই বছরের তুলনায় ইউরো'র বিনিময় মূল্য রেকর্ড মাত্রায় পড়ে গেছে৷ এর মূল কারণ স্পেনের ব্যাংকিং জগতের বেহাল অবস্থা৷ ব্যাংকগুলিকে সাহায্য করতে হলে যে অর্থের প্রয়োজন, তা ব্যয় করলে রাষ্ট্র হিসেবে স্পেনের আর্থিক সংকট আরও প্রকট হবে বলে পুঁজিবাজারের আশঙ্কা৷ স্পেনের রাষ্ট্রীয় বন্ডের উপরও এই সংকটের প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা – এই অবস্থায় দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত না নিলে বন্ড বাজারে স্পেনের আরও ক্ষতি হতে পারে৷ এছাড়া প্রায় দুই সপ্তাহ পর গ্রিসে নির্বাচন এবং বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাজেট চুক্তির প্রশ্নে আয়ারল্যান্ডে গণভোটের কারণেও পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হতে পারছে না৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য