1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আরেক পৃথিবীর সন্ধান!

৭ ডিসেম্বর ২০১১

বিজ্ঞানীরা কত কিছুই না করতে পারেন৷ সম্প্রতি তারা আমাদের পৃথিবীর মতোই আরেকটি গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন বলে জানা গেছে৷

https://p.dw.com/p/13Njy
ফাইল ফটোছবি: picture-alliance/dpa

পৃথিবীর মতো গ্রহের খোঁজে ২০০৯ সালের মার্চ মাসে কেপলার নামের একটি স্পেসক্রাফট পাঠায় অ্যামেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা৷ এই মহাকাশযানে যে ক্যামেরা রয়েছে তার চেয়ে বড় ক্যামেরা আগে কখনো মহাকাশে পাঠানো হয়নি৷ আগামী বছরের নভেম্বর পর্যন্ত কেপলার বিজ্ঞানীদের তথ্য পাঠিয়ে যাবে৷ এই কেপলারই সন্ধান দিয়েছে নতুন গ্রহের, যার নাম দেয়া হয়েছে কেপলার-২২বি৷

মহাকাশে কেপলারকে পাঠানোর কিছুদিন পরই আসলে সম্ভাব্য নতুন গ্রহ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া গিয়েছিল৷ কিন্তু এবার নিশ্চিত হতে পেরেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা৷

ক্যালিফোর্নিয়াতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে নতুন গ্রহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়৷ নাসার অ্যামস রিসার্চ সেন্টারের কেপলার প্রকল্পের বিল বোরুকি বলেন, ‘‘কেপলার-২২বি নামে যে পৃথিবীর মতো আরেকটি গ্রহ রয়েছে সে ব্যাপারে এখন আমরা নিশ্চিত''৷ তাঁদের ধারণা, ছয়শ' আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই গ্রহটি পৃথিবীর মতোই বাসযোগ্য৷

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অনুসন্ধান গবেষণায় কেপলার- ২২বি'র আবিষ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মন্তব্য বিজ্ঞানীদের৷

Schwarm von Sternen
ছবি: NASA

নাসার বিজ্ঞানীরা কেপলারের মাধ্যমে আরও ১,০৯৪টি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বলে জানা গেছে, যেটা এর আগের ধারণার প্রায় দ্বিগুন৷ তবে এই গ্রহগুলোর মধ্যে উপরিপৃষ্ঠে তরল পানি থাকার মতো সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে কেপলার -২২বি গ্রহটি৷ উল্লেখ্য, তরল পানির উপস্থিতি প্রাণ সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে জরুরি৷

কেপলার- ২২বি আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে ২ দশমিক ৪ গুণ বড় এবং এর গড় তাপমাত্রা প্রায় ২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, যা পৃথিবীর নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলের বসন্তকালের তাপমাত্রার মতোই৷ এই তাপমাত্রার কারণে গ্রহটি পৃথিবীর মতো প্রাণপ্রাচুর্যের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে৷

আমাদের সৌরজগতে পৃথিবীর অবস্থান সূর্য থেকে যে দূরত্বে, কেপলার-২২বি গ্রহটি তার সূর্য থেকে মাত্র ১৫ শতাংশ কম দূরত্বে অবস্থান করছে৷ সৌরজগতে পৃথিবীর অবস্থানের এলাকাটি ‘বাসযোগ্য অঞ্চল' হিসেবে চিহ্নিত৷ কেপলার-২২বি'র অবস্থানও তার সৌরজগতের বাসযোগ্য অঞ্চলে৷

কেপলার- ২২বি তার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে ২৯০ দিন সময় নেয়৷ তবে গ্রহটি পৃথিবীর মতো কঠিন, নাকি নেপচুনের মতো গ্যাসীয় তা এখনো জানা না গেলেও বিষয়টি নিয়ে গবেষণা অব্যাহত আছে৷

নতুন এই গ্রহটি নিয়ে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর মতো মোট তিনটি গ্রহের উপস্থিতির কথা জানালেন৷ এর মধ্যে গত মে মাসে ফ্রান্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ‘গ্লিজে ৫৮১ডি' নামের একটি গ্রহের কথা প্রথম নিশ্চিত করেছিলেন৷

এরপর এই আগস্টে সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা ‘এইচডি ৮৫৫১২ বি' নামের দ্বিতীয় গ্রহটির কথা জানিয়েছেন৷ এই গ্রহটি বিজ্ঞানীদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে৷ কারণ, এটি তার নক্ষত্র থেকে এমন সঠিক দূরত্বে রয়েছে, যেখানকার পরিবেশ খুব উষ্ণও নয়, আবার খুব শীতলও নয়, যা থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, সেখানে জীবনধারণ উপযোগী পরিবেশ থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল৷ তাঁরা মনে করছেন, সেখানে জীবসত্তার প্রয়োজনীয় পরিবেশ থাকতে পারে৷

জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল মেয়র বলছেন, এইচডি ৮৫৫১২ বি নামের গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে ৩ দশমিক ৬ গুণ বড়৷ আর সেখানে তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট পর্যন্ত ওঠানামা করে৷ এ কারণে বিজ্ঞানীদের ধারণা, এখানকার আবহাওয়া খুবই আর্দ্র৷ গ্রহটি তার কাছ থেকে ৩৫ আলোকবর্ষ দূরে থাকা নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য