1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যাটম ভাঙার মেগা যন্ত্রের সাফল্যে বিজ্ঞানীরা উল্লসিত

আব্দুল্লাহ আল-ফারুক১০ সেপ্টেম্বর ২০০৮

জেনেভা শহরের অদূরে সুইস-ফরাসী সীমান্তে ইউরোপীয় পরমাণু গবেষণা সংস্থা (সিইআরএন)র বিজ্ঞানীরা কণার রশ্মি ভাঙার মেগাযন্ত্র সাফল্যের সঙ্গে চালু করেছেন বুধবার৷ এই যন্ত্রের নাম লার্জ হেডরন কোলাইডার৷

https://p.dw.com/p/FFcY
সিইআরএন-র বিজ্ঞানীরা কণার রশ্মি ভাঙার মেগাযন্ত্র সাফল্যের সঙ্গে চালু করেছেন বুধবারছবি: picture alliance/dpa

বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল বলে অভিহিত এই পরীক্ষার লক্ষ্য বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের অজানা তথ্য খুঁজে বের করা৷

Forschungszentrum Cern: Blick auf das Gelände
সুইস-ফরাসী সীমান্তে ইউরোপীয় পরমাণু গবেষণা সংস্থা সিইআরএন-এর গবেষণাগার বুধবার গ্রিনিচ মান সময় ০৭৩০-এর ঠিক পর পর প্রোটোন কণার প্রথম রশ্মি ছুঁড়ে দেয়া হয় কোলাইডারেছবি: picture alliance/dpa

কোন কৃষ্ণ গহ্বর পৃথিবীকে গ্রাস করে নি৷ কোন মহাবিস্ফোরণের প্রচন্ড ধাক্কায় শিহরিত হয় নি বিশ্ববাসী৷ অথচ এক মহাপ্রলয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল কেউ কেউ৷ বরং ইউরোপের বিজ্ঞানীরা তাঁদের সাফল্যের আনন্দে আপ্লুত৷ ইউরোপীয় পরমাণু গবেষণা সংস্থার মহাপরিচালক ফরাসী পদার্থবিজ্ঞানী রোবেয়ার আইমার বলেছেন, এ হল সিইআরএন-এর জন্য - গোটা মানবজাতির জন্য এক ঐতিহাসিক দিন৷

তিনি জানান, মানুষ কোথা থেকে এসেছে, কোথায় তারা যাবে, বিশ্বব্রহ্মান্ডের কোন শেষ আছে কিনা, ভবিষ্যতেই বা ব্রহ্মান্ড কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে এই সব তথ্যের সন্ধানে ব্রতী মানুষ৷

সেই অজানাকে জানার মহাযন্ত্র হল এই লার্জ হেডরন কোলাইডার (এলএইচসি)৷ তা নির্মিত হয়েছে ভূগর্ভের একশো মিটার নীচে বৃত্তাকার এক টানেলে যার ব্যাস ২৭ কিলোমিটার৷ বিজ্ঞানের ইতিহাসে এত বড় আর এত জটিল মেশিন আর কখনও তৈরি হয় নি৷ খরচ হয়েছে ৩.৭৬ বিলিয়ন ইউরো৷ প্রায় দুই দশক সময় লেগেছে এটা তৈরি করতে৷

BdT Schweiz CERN Teilchenbeschleuniger LHC gestartet
সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য কম্পিউটারকে যুক্ত করা হয়েছে এক বিশেষ নেটওয়ার্কে যার নাম দেয়া হয়েছে 'দ্য গ্রিড'ছবি: AP

বুধবার গ্রিনিচ মান সময় ০৭৩০-এর ঠিক পর পর প্রোটোন কণার প্রথম রশ্মি ছুঁড়ে দেয়া হয় কোলাইডারে৷ এবং ঐ কণারশ্মি ঘড়ির কাঁটার মত ডান দিকে এগিয়ে গেছে এবং গোটা ত্বরণ যন্ত্র ঘুরে এসেছে সাফল্যের সঙ্গে৷ এটাই ছিল এলএইচসি-র প্রথম বড় দায়িত্ব৷

এরপর বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য - দুদিকে রশ্মি পাঠিয়ে আলোর প্রায় কাছাকাছি গতিতে ছোট ছোট সংঘর্ষ ঘটানো৷ এভাবে তাঁরা চান অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র আকারে বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের সময়কার উত্তাপ ও শক্তি তৈরি করতে৷ বিজ্ঞানী মহলে প্রচলিত ধারণা হল ১৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন বছর আগে ক্ষুদ্র এক মুদ্রার আকারের অসম্ভব ঘন ও তপ্ত এক বস্তু শূণ্যতার মাঝে প্রচন্ড শব্দে ফেটে পড়ে৷ আর সেই মহাবিস্ফোরণের ফলে দ্রুত গঠিত হতে থাকে নক্ষত্রের পর নক্ষত্র, একের পর এক গ্রহ এবং এক সময় আমাদের এই পৃথিবী গ্রহে ঘটে প্রাণের বিকাশ৷

Teilchenbeschleuniger in Cern: Kollision von Atomkernen
বুধবার গ্রিনিচ মান সময় ০৭৩০-এর ঠিক পর পর প্রোটোন কণার প্রথম রশ্মি ছুঁড়ে দেয়া হয় কোলাইডারেছবি: picture alliance/dpa

পূর্ণ শক্তিতে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন প্রোটন এলএইচসি ত্বরণ যন্ত্রের চার পাশে অতি দ্রুত বেগে ছোটাছুটি করবে৷ প্রতি সেকেন্ডে ১১,২৪৫ বার৷ আলোর ৯৯.৯৯ শতাংশ গতিতে ছুটে যাবে প্রোটনগুলো৷ প্রতি সেকেন্ডে ৬০ কোটি সংঘর্ষণ ঘটানো সম্ভব হবে৷ দুটি প্রোটন রশ্মির মধ্যে সংঘর্ষের ফলে সূর্যের কেন্দ্রভাগের চেয়ে এক লক্ষ গুণ বেশি গরম তাপ সৃষ্টি হবে ছোট্ট এক পরিসরে৷ তবে ঠান্ডা রাখার এক ব্যবস্থার মাধ্যমে এলএইচসি-র অ্যাক্সেলারেটর রিং-এর চার দিকে ছড়িয়ে দেয়া হবে অতি তরল হেলিয়াম৷ এর ফলে এই মহাযন্ত্রে তাপমাত্রা থাকবে মাইনাস ২৭১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

এলএইচসি ত্বরণ যন্ত্র থেকে কী তথ্য উপাত্ত পাওয়া যায় তার জন্য বিশ্বের হাজার হাজার বিজ্ঞানী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন৷ সারা বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য কম্পিউটারকে যুক্ত করা হয়েছে এক বিশেষ নেটওয়ার্কে যার নাম দেয়া হয়েছে 'দ্য গ্রিড'৷ এখানেই ধরা থাকবে সব তথ্য৷

পদার্থ কীভাবে ভর অর্জন করে এই রহস্যের জবাব দিতে বৃটিশ পদার্থবিজ্ঞানী প্রফেসর পিটার হিগস ১৯৬৪ সালে হিগস বোসন নামে অভিহিত এক তাত্ত্বিক কণার অস্তিত্বের কথা জানান৷ এই কণাই তাঁর মতে পদার্থকে তার ভর দেয়৷ কিন্তু তা কখনও চাক্ষুষ করা সম্ভব হয় নি৷ এই কণা গড পার্টিকেল নামেও পরিচিত৷ এলএইচসি চালু হবার ঘটনায় আনন্দিত হিগস বলেছেন, এই কণার অস্তিত্ব এবার পাওয়া যাবে বলেই তাঁর ধারণা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান