1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১০ বছরের কারাদণ্ড

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২২ জুলাই ২০১৪

ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবনে ৭৬ শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তার প্রত্যেককে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত৷ তাদের দুই লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়৷ ওষুধ আইনে এটি সর্বোচ্চ দণ্ড৷

https://p.dw.com/p/1Cgba
Symbolbild Kindesmissbrauch
প্রতীকী ছবিছবি: picture alliance / ZB

প্রায় ২১ বছর আগে ১৯৯৩ সালে সারাদেশে এই শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে৷

তবে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর রেজাউল রোমেল ডয়চে ভেলেকে বলেন, অপরাধের তুলনায় এই শাস্তি নগণ্য৷ সঠিক আইনে মামলা করা হলে হত্যার দায়ে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারত৷

১৯৯৩ সালে অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালস নামের একটি ওষুধ কোম্পানির প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারা দেশে ৭৬ জন শিশু মারা যায়৷ এ ঘটনায় ওই বছরই ড্রাগ আইনে ওষুধ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবুল খায়ের বাদী হয়ে মামলা করেন৷ মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৪ সালে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়৷ দীর্ঘ সময় ধরে মামলার শুনানি এবং যুক্তি-তর্ক শেষে মঙ্গলবার ঢাকা বিভাগীয় বিশেষ জজ আবদুর রশীদ রায় দেন৷

রায়ে ভেজাল প্যারাসিটামল তৈরির দায়ে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক চিকিৎসক হেলেন পাশা, ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান ও ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা নগেন্দ্র নাথ বালাকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ ও দুই লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয়া হয়৷ এর মধ্যে প্রথম দু'জন জামিনে রয়েছেন৷ তৃতীয়জন পলাতক৷ জামিনে থাকা দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়েছে৷ মামলায় অ্যাডফ্লেমের মালিক আজফার পাশা ও মান নিয়ন্ত্রক আরেক কর্মকর্তা মো. নোমানকে খালাস দিয়েছেন আদালত৷ মামলার প্রধান আসামি ও কোম্পানির পরিচালক আনোয়ার পাশা তদন্ত চলাকালেই মারা যান৷ পরে তাঁর নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়৷

১৯৯৩ সালে অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালসের প্যারাসিটামল সিরাপে ডাই-ইথিলিন গ্লাইকলের উপস্থিতি ধরা পড়ে৷ মামলায় বলা হয়, অ্যাডফ্লেমের প্যারাসিটামলে বিষাক্ত উপাদান থাকায় বহু শিশু কিডনি সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়৷ তাদের মধ্যে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়৷

রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন চারজন৷ মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর নাদিম মোস্তফা৷ অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট বশির আহমেদ৷

আদালত বলেন, আসামিরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে৷ তাই তাদের ড্রাগ আইনে সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হয়েছে৷

কিন্তু অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর রেজাউল রোমেল ডয়চে ভেলেকে বলেন ৭৬ শিশুর মৃত্যু নিঃসন্দেহে হত্যাকাণ্ড৷ তাই আসামিদের বিরুদ্ধে প্রচলিত ফৌজদারি আইনে হত্যা মামলা দায়ের করা উচিত ছিল৷ তাহলে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারত৷ তাদের অপরাধ মৃত্যুদণ্ডযোগ্য৷ কিন্তু ড্রাগ আইনে মামলা হওয়ায় তাদের মাত্র ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে৷ কারণ এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তিই হলো ১০ বছরের কারাদণ্ড৷ তিনি বলেন পুলিশ চাইলে তদন্ত পর্যায়েও মামলার ধারা পরিবর্তন করে হত্যার অভিযোগে চার্জশিট দিতে পারত৷ কিন্তু তা করা হয়নি, যা দুঃখজনক৷

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন ড্রাগ আইনটি এখন পরিবর্তনের সময় এসেছে৷ নকল বা ভেজাল ওষুধে কারুর মৃত্যু হলে সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার প্রস্তাব করেন তিনি৷

মামলার রায়ের সময় লায়লা বেগম নামে একজন মা তাঁর ঘটনার সময় দেড় বছরের শিশু আরিফের ছবি নিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ আরিফ ঐ সিরাপ খেয়ে মারা যায়৷ এখন সে বেঁচে থাকলে ২২ বছরের যুবক হত৷ তার ছবি নিয়ে আদালত এলাকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য