1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপীয়রা কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন!

ব্রিগিটে ওস্টারাথ/আরবি৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

গবেষকরা স্পেনের এক শিকারি ও সংগ্রাহকের দাঁতের জেনোটাইপ বা জিনসত্তা বিশ্লেষণ করে এক বিস্ময়কর ব্যাপার আবিষ্কার করেন৷ তাঁর ছিল নীল চোখ, ও বাদামি চুল৷ কিন্তু গায়ের রং কালো৷

https://p.dw.com/p/1B3hK
ইউরোপীয়দের পূর্বপুরুষছবি: CSIC

এতদিন ধারণা করা হতো, ইউরোপের মানুষের গাত্রবর্ণ অনেক আগেই অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৪০,০০০ থেকে ১০,০০০ শতাব্দীতে তৈরি হয়েছে৷ বলেন সংবাদ সংস্থা এএফপি-র বিবর্তনবিষয়ক জীববিজ্ঞানী চার্লস লালুয়েঞ্জা-ফক্স৷ কিন্তু এখন স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে বিষয়টি সেই রকম নয়৷

কঙ্কালের দাঁত পরীক্ষা

চার্লস লালুয়েঞ্জা-ফক্স-ও তাঁর সহকর্মীরা একটি কঙ্কালের দাঁতের জেনোটাইপ পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে আসেন৷ এটি ২০০৬ সালে স্পেনের পূর্ব পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুহায় পাওয়া গিয়েছে৷ পরীক্ষা-নীরিক্ষার সম্পূর্ণ ফলাফল একটি সংশ্লিষ্ট ম্যাগাজিনে প্রকাশ করেছেন তাঁরা৷ এতে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, সেই যুগে শিকার ও সংগ্রহ করে যে সব মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন তাঁদের গায়ের রং কালো ছিল৷

কঙ্কালটি ৭০০০ বছরের পুরানো৷ তার মানে সেই সময় স্পেনে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষরা বসবাস করতেন৷ গবেষকরা মনে করেন, ইউরোপের মানুষের ত্বকে শ্বেতবর্ণ আরো পরে, ৫০০০ বছর আগে তৈরি হতে পারে৷

Skelettfund in La Brana Spanien
স্পেনে পাওয়া যাওয়া কঙ্কালছবি: CSIC

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন

জেনোটাইপ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ইউরোপীয়দের পূর্বপুরুষরা দুধ ও স্টার্চ হজম করতে পারতেন না৷ এই ক্ষমতা তাঁরা নব্য প্রস্তরযুগে আয়ত্ত করেন, যখন থেকে তাঁরা কৃষিকাজে হাত পাকাতে শুরু করেন৷ এই সময় শিকারি ও সংগ্রাহকরা তাঁদের খাদ্যাভ্যাস বদলাতে শুরু করেন৷ শরীরে ভিটামিন সরবরাহেও পরিবর্তন শুরু হয়৷

কৃষিকাজ শুরু করার পর বন্য প্রাণীর মাংসের পরিমাণ কমিয়ে শস্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন তাঁরা৷ এইভাবে খাদ্যের সঙ্গে তাঁরা আগের চেয়ে অনেক কম ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে থাকেন৷ কেননা মাংসের চেয়ে শস্যাদিতে এই ভিটামিন অনেক কম থাকে৷ লালুয়েঞ্জা-ফক্স বলেন, হয়ত ইউরোপীয়দের শ্বেতকায় হওয়ার এটাও একটা কারণ৷ সাদা চামড়া কালো চামড়ার চেয়ে অনেক বেশি ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে৷ মানুষের ত্বকে ভিটামিন ডি নিজে থেকেই তৈরি হয়, যদি তাতে সূর্য রশ্মি পড়ে৷

ভিটামিন ডির অভাবে ক্ষতিকর প্রভাব

বাস্তবিকই আজও সূর্যের আলোর বদান্যতা যেসব অঞ্চলে কম, সেখানে বসবাসরত কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে ভিটামিন ডি-র ঘাটতিতে ভোগেন বেশি৷ এর ফলে হাড়, পেশি ও স্নায়ুর ক্ষতি হয়৷ ক্লান্তি, পেশির দুর্বলতা, ঝাঁকুনি, ঘুমের ব্যাঘাত ইত্যাদি দেখা দেয়৷

ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হয়

পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির নৃতত্ত্ববিদ নিনা জেবলোনস্কি আবিষ্কার করেছেন, মানুষের ত্বকের রং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ওপর নির্ভরশীল৷ যেখানে এই রশ্মির তীব্রতা যত বেশি, সেখানকার মানুষের গায়ের রং তত কালো৷ ঘন কালো রং ত্বককে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করে৷ সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি রক্তে গুরুত্বপূর্ণ ফলিক অ্যাসিড নষ্ট করে, যার অভাবে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হতে পারে৷ কালো ত্বক এই বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে৷ তাই ত্বকের রঙকে একটা ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হয়৷ এটা ততটাই কালো হয়, যাতে রক্তের ফলিক অ্যাসিড সুরক্ষিত থাকে৷ অন্যদিকে ততটাই ফরসা হয়, যাতে শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি প্রস্তুত করতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য