1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তফসিলের প্রতিবাদ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৬ নভেম্বর ২০১৩

৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে৷ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ সোমবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন৷ সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে – তিনি এ আশা করলেও, বিএনপি তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে৷

https://p.dw.com/p/1AOPu
A Bangladeshi laborer sweeps the pavement outside the national parliament building in Dhaka, Bangladesh, Friday, April. 6, 2007. Bangladesh's national elections, already delayed amid deadly violence over allegations of ballot-rigging will not be held for at least a year and a half, the top election official in the military-backed interim government said. (ddp images/AP Photo/Pavel Rahman)
ছবি: AP

সোমবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, তাঁরা আশা করছিলেন যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হওয়ার পর এই তফসিল ঘোষণা করবেন৷ কিন্তু ২৪শে জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায়, তাঁদের পক্ষে আর অপেক্ষা করা সম্ভব নয়৷ তফসিল অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন-পত্র দাখিলের শেষ দিন ২রা ডিসেম্বর৷ মনোনয়ন-পত্র বাছাই ৫ এবং ৬ই ডিসেম্বর৷ মনোনয়ন-পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৩ই ডিসেম্বর৷ আর নির্বাচন হবে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি৷

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর৷ তিনি আশা করেন, শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে৷ তাই তিনি আবারো দেশের ও জনগণের স্বার্থে রাজনৈতিক সমঝোতার আহ্বান জানান৷ প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সারা দেশে সেনা মোতায়েন করা হবে৷

এদিকে তফসিল ঘোষণার পর, রাতের দিকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের গুলশান অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি সংবাদ সম্মেলনে এই তফসিল প্রত্যাখ্যান করে রাজনৈতিক সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত তফসিল স্থগিতের দাবি জানান৷ তিনি বলেন, মেরুদণ্ডদীন নির্বাচন কমিশন সরকারের একলীয় নির্বাচনের নীলনকশা বাস্তবায়নে সহায়তা করছে৷

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণের আকাঙ্খা এবং ভোটের অধিকার পদদলিত করা এই ষড়যন্ত্র দেশের মানুষ মানবে না৷ তফসিলের প্রতিবাদে এবং নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে কৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল৷ এই কর্মসূচিতে রাজপথ, রেলপথ এবং নৌপথ অবরোধ করে দেশ অচল করে দেয়া হবে বলে জানান মির্জ ফখরুল৷

ওদিকে তফসিল ঘোষণার আগেই ঢাকাসহ বাংলাদেশের বড় বড় শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়৷ জোরদার করা হয় নির্বাচন কমিশনের নিরাপত্তা৷ কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর রাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহনে আগুন, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ দেশের কয়েকটি জেলায় সড়ক, মহাসড়ক অবরোধেরও খবর পাওয়া গেছে৷ প্রসঙ্গত, বিরোধী দল বিএনপি আগেই তফসিল ঘোখণার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশ অচল করার ঘোষণা দিয়েছিল৷

অন্যদিকে তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাতেই আনন্দ মিছিল বের করে৷ শোনা যায়, রাতে পুলিশ গুলশান এলাকা থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহকে আটক করেছে৷

সুশীল সমাজের প্রতিক্রিয়া

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধানের মধ্যে থেকেই রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য আরো কয়েকটি দিন অপেক্ষা করতে পারত৷ কিন্তু তারা রাজনৈতিক সমঝোতার কথা বললেও, তফসিল ঘোষণায় তার প্রতিফলন দেখাতে পারেনি৷ তিনি বলেন, সমঝোতা ছাড়া একতরফা নির্বাচনে সংঘাত অনিবার্য৷

এছাড়া, টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, তফসিল ঘোষণা হলেও এখনো সমঝোতার সুযোগ আছে৷ সমঝোতার মাধ্যমে যদি সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে সবার জন্য মঙ্গল৷ আর তা না হয়ে বিরোধী দল যদি নির্বাচন প্রতিহত করতে মাঠে নামে, তাহলে তার সুযোগ নেবে জামায়াতে ইসলামী৷ তাতে দেশে বড় ধরণের সংঘাত এবং রক্তপাত ঘটতে পারে, যা দেশকে দীর্ঘকালীন সংকটের মধ্যে ফেলে দিতে পারে৷

অপরদিকে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল সংলাপের প্রয়োজনীয়তাকে আরো তীব্র করেছে৷ তিনি মনে করেন, নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে হলে সব দলের অংশগ্রহণ জরুরি৷ আর এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সমঝোতা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য