1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১১ বছরে পায়ে হেঁটে বিশ্ব ভ্রমণ

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১

ক্যানাডার এক মানুষ ১১ বছর ধরে পায়ে হেঁটে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে দেশে ফিরেছেন৷ অসাধারণ সেই অভিজ্ঞতার কিছু অংশ জানা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/12iID
Blick auf die Hochhäuser im Zentrum von Montreal, aufgenommen 2001.
ক্যানাডার এই শহর থেকেই বিশ্ব ভ্রমণ শুরু করেছিলেন জঁ বেলিভোছবি: picture-alliance / dpa

বয়স তখন ৪৫৷ বেশ অবসাদে ভুগছিলেন ক্যানাডার মন্ট্রিয়াল শহরের জঁ বেলিভো৷ মনে হচ্ছিল, আর বেঁচে থেকে কী লাভ? সবে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে৷ দুই সন্তান থাকে মায়ের কাছে৷ নিজের ছোট একটা ব্যবসা ছিল৷ তাও লাটে উঠেছে৷ অতএব পিছটান বলতে কিছুই নেই৷

না, আত্মহত্যার পথে এগোলেন না বেলিভো৷ ২০০০ সালের ১৮ই অগাস্ট নিজের ৪৫তম জন্মদিনেই তিনি হাঁটতে বেরিয়ে পড়লেন৷ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ থেকে পায়ে হেঁটে গোটা পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে আবার নিজের শহর মন্ট্রিয়াল'এ ফেরার গোঁ ধরে বেরিয়ে পড়লেন তিনি৷ সঙ্গে ৩ চাকার একটা ট্রলি সুটকেস৷ তার মধ্যে স্লিপিং ব্যাগ, কিছু জামাকাপড়, প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু সরঞ্জাম৷ সঙ্গে মাত্র ৪,০০০ ক্যানেডীয় ডলার৷ কোথায় রাত কাটাবেন, কখন কী খাবেন, কিছুই জানা নেই৷ শুধু হেঁটে চলেছেন৷ রওয়ানা হওয়ার পর প্রায় ১১ বছর কেটে গেছে৷ সত্যি পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে তিনি মন্ট্রিয়ালের কাছাকাছি এসে পড়েছেন৷ এবার সামান্য যে পথ বাকি রয়েছে, তা অতিক্রম করে আগামী ১৬ই অক্টোবর তাঁর আবার নিজের শহর মন্ট্রিয়াল পৌঁছনোর কথা৷ ৬৪টি দেশ ঘুরে প্রায় ৭৫,০০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে তিনি সম্ভবত দীর্ঘতম পদযাত্রার রেকর্ড গড়তে চলেছেন৷

এতদিন পর কার কাছে ফিরবেন বেলিভো? তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন দীর্ঘদিনের বান্ধবী লুস আর্শাম্বো৷ তিনি ও তার দুই সন্তানও বেলিভো'কে বাধা দেন নি৷ ঘরে থেকেই তিনি বেলিভো'র এই অভিযানে মদত দিয়ে চলেছেন৷ তৈরি করেছেন বিশেষ ওয়েবসাইট, যার ঠিকানা ‘ওয়াক ডট অর্গ'৷ তবে ‘ওয়াক' শব্দে একটার বদলে তিনটে ডাব্লু রয়েছে৷ অসাধারণ এই পদযাত্রাকে কাজে লাগিয়ে শান্তি ও অহিংসার বাণী প্রচার করার জন্য বেলিভো'কে উৎসাহ দিয়েছেন তিনি৷ জাতিসংঘের শিশু কল্যাণ সংস্থা ইউনেস্কো'র এক ঘোষণাই হয়ে উঠলো এই পদযাত্রার মূলমন্ত্র৷ অবসাদগ্রস্ত এক মানুষের অভিযান যে এত অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে, বেলিভো তা ভাবতে পারেন নি৷

এই ১১ বছর কীভাবে কাটালেন বেলিভো? কীভাবে তিনি অক্ষত অবস্থায় দেশে ফিরতে পারলেন? আশ্চর্যের বিষয়, যাত্রাপথে তেমন কোনো অপ্রিয় ঘটনা ঘটে নি৷ শুধু আলজেরিয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, ইথিওপিয়ায় অকারণে তাঁকে একরাত হাজতবাস করতে হয়েছিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই মাতাল তাঁর উপর চড়াও হয়েছিল৷  তিনি মেক্সিকোয় ৯ দিনের জন্য এক নারীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন, সুদানে থাকতে পাগড়ি পরে লম্বা দাড়ি রেখেছিলেন৷ আফ্রিকায় পোকামাকড়, দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুর ও চীনে সাপ খেয়েছেন৷ ইথিওপিয়ায় থাকতে বেলিভো'র একবার মনে হয়েছিল, মাঝপথে পদযাত্রা ছেড়ে দেশে ফিরে যাবেন৷ কিন্তু বান্ধবীর উৎসাহে তিনি হাল ছাড়েন নি৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ