1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিষ্টি দিয়ে মন জয়

৭ জুন ২০১৩

ইউরোপও কিন্তু মিষ্টি খাওয়াতে কিছু কম যায় না৷ কেক, চকলেট, আইসক্রিম, আর হরেকরকম লজেন্স – বাচ্চারা তো বটেই, বড়দেরও জিভে জল চলে আসবে পোল্যান্ড-এ ডানসিশ-এর এক ‘টফি' তৈরির কারখানা দেখে৷

https://p.dw.com/p/18ltg
ছবি: Elena Schweitzer - Fotolia.com

ফলের নির্যাস থেকে তৈরি টফিগুলো দেখতে ফল, ফুল কিংবা পশুপাখির মত৷ পোল্যান্ডে এক জার্মানের হাতে তৈরি টফিগুলি৷

ডানসিশ শহরের পুরানো অংশে ফ্লোরিয়ান বেলগার্ড-এর কারখানাটি অবস্থিত৷ এখানে তাঁর ক্রেতারা দেখতে পান, কীভাবে রংহীন চিনির মণ্ড থেকে রঙিন টফি তৈরি হচ্ছে৷ আট বছর আগে প্রেমিকার কাছে থাকার জন্য কোলোন থেকে ডানসিশ-এ এসে থিতু হন তিনি৷ মিষ্টি পছন্দ করেন ফ্লোরিয়ান৷ তাই মিষ্টিই হয়ে উঠেছে তাঁর নতুন পেশা৷ তিনি বললেন, ‘‘বাজার থেকে কিনেও টফি বিক্রি করা যায়৷ কিন্তু তার চেয়ে হাতে বানিয়ে টফি বিক্রি করলে বাচ্চাদের চোখগুলি যেন চকচক করে বেশি৷ এখানে চিনির মণ্ড থেকে ছোট ছোট জিনিস বানানোর সময় বাচ্চারা যে ভাবে তাকিয়ে দেখে, তা সত্যি আনন্দ দেয়৷''

আসল জিনিসটা হলো চিনির মণ্ড৷ গরম করা হয় ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উত্তাপে৷ কয়েকটি পরতে ভাগ করে একটির সঙ্গে আরেকটি পেঁচিয়ে দেওয়া হয়৷ ধীরে ধীরে প্রায় দশ কিলো ওজনের বিশাল টফি তৈরি হয়৷ এক ঘণ্টা সময় লাগে৷ স্বাদ ফলের মত৷ বেশ কঠিন কাজ৷ তারপর সেগুলি টুকরো-টুকরো করে তৈরি হয় ছোট টফি৷ ফ্লোরিয়ান বললেন, ‘‘আমি এখানে চিনির পিণ্ডটা টেনেটুনে লম্বা করছি৷ এর ফলে বাতাস ঢোকে এতে৷ এই বাতাসের কারণে চিনির মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আসে৷ এটিকে সাদা মনে হয়৷ অন্যরকমভাবে আলো ঢোকে বলেই এইরকম দেখা যায়৷ এছাড়া টানাটানি করার ফলে চিনির মণ্ডটি সুস্বাদু হয়ে ওঠে৷ ছোট ছোট বাতাসের খোপ তৈরি হয় বলে সুবাস ছড়িয়ে যায় তাতে৷''

Gebrannte Mandeln
মিষ্টির মজাই আলাদা!ছবি: Fotolia/mahey

নানা স্বাদ ও রঙের টফিগুলি ছোট-বড় সবাইকে আকৃষ্ট করে৷ ইদানীং ব্যবসাটি এতই ফুলেফেঁপে উঠেছে যে, ফ্লোরিয়ান বেলগার্ড পোল্যান্ডে চতুর্থ আরেকটি দোকান খুলেছেন৷ একই সঙ্গে টফি তৈরি ও তা চেখে দেখার সুযোগ – এই আইডিয়াটা দারুণ চলছে৷ নানারকম জিনিস ও অক্ষর তৈরি করা এবং পুরো শব্দটা একটি টফির মধ্যেই বসানো, এ এক উঁচু দরের শিল্পকলা৷

এক জায়গায় ইংরিজি অক্ষর ‘এ' তৈরি হচ্ছে৷ প্রতিটি চিনির ফিতা থেকে একটি করে অক্ষর৷ ফ্লোরিয়ান বললেন, ‘‘আমি একজন শিল্পী, আসলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নাপিত৷ আমি স্বাভাবিকভাবেই ফলাফল দেখতে চাই৷ যন্ত্রপাতি দিয়ে করার চেয়ে হাতে কাজ করা ভালো৷ কিছু টফি প্রস্তুতকারী যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করেন, সুইচ টিপেই খালাস৷ আমরা হাতের কাজ করি বলে আমাদের কাজে কিছুটা রোমাঞ্চও থাকে৷ যেমন বলা যায় না, কোনো অক্ষর বা জিনিস অদল-বদল হয়ে গেল না তো? স্ট্রবেরি ঠিক সেরকমই দেখতে হয়েছে তো? নাকি শেষমেশ এইগুলি রাস্পবেরি বলে বিক্রি করতে হবে?''

এই কলাকৌশল সপ্তদশ শতাব্দী থেকে চলে আসছে৷ ২০১২ সাল থেকে ফ্লোরিয়ান ‘জার্মান টফি' তৈরি করছেন৷ গতবারের ইউরোপীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার সময় লোকে লুফে নিয়েছে তা৷ এখনও ডানসিশ বেড়াতে এলে জার্মান পর্যটকরা এই টফি কিনতে পছন্দ করেন৷ ফ্লোরিয়ান বললেন, ‘‘আমরা ১৬০ ডিগ্রি তাপে কাজটা শুরু করি৷ এই যে এখানে আমি ভাঙলাম৷ দেখা যাচ্ছে জার্মানির পতাকার রঙ, শব্দটা ঠিক কিনা?''

প্রতিদিন এখানে নানা ধরনের রঙ ও স্বাদের টফি প্রস্তুত হয়৷ কল্পনার কোনো সীমা নেই৷ কেউ চাইলে নিজের ইচ্ছা মত টফি ডিজাইন করে ফ্লোরিয়ানকে দিয়ে তা তৈরি করাতে পারেন৷ এতে পাওয়া যাবে ডানসিশ থেকে আনা একেবারে নিজস্ব এক স্যুভেনির৷

আরবি / এসবি