1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কৃত্রিম পেট্রল

২৩ অক্টোবর ২০১২

কিছু পানি নিন, আর নিন কিছু হাওয়া – ব্যাস, এই থেকে পেয়ে যাবেন পেট্রল৷ এ-ও সম্ভব! ব্রিটেনের প্রকৌশলিরা কিন্তু তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/16UoN
ছবি: AP

ধরুন মানুষ আর প্রকৃতি, কিংবা মানুষ আর গাছের মধ্যে একটা বিতর্ক চলছে৷ মানুষ খুব জোরালোভাবে দাবি করছে, তাঁরা পরিবেশ দূষণ এড়াতে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট না করতে সদা তৎপর৷ খুশিতে গদগদ হয়ে একটা আবিষ্কারের খবরও দিলো, জানালো, আমরা সম্প্রতি এমন পেট্রল আবিষ্কার করেছি যা পরিবেশ দূষণ করবে না৷ গাছের প্রশ্ন, ‘‘কিভাবে?'' মানুষ জানালো, ‘‘পানি থেকে হাইড্রোজেন আর হাওয়া থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ে৷'' গাছ জানতে চাইলো, ‘‘এই পেট্রলে পরিবেশ দূষিত হবে না, তা না হয় মানলাম, কিন্তু গাছের জীবন ধারণের জন্য তো কার্বন ডাই অক্সাইড অত্যাবশ্যক৷ পেট্রল তৈরি করতে গিয়ে হাওয়া থেকে ব্যাপক হারে কার্বন ডাই অক্সাইড নিতে থাকলে গাছ সমস্যায় পড়বে না? যদি গাছ মারা যেতে থাকে, তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হবার ঝুঁকি আরো বাড়বে না? তাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে না?'' প্রশ্ন শুনে মানুষ তখন আমতা আমতা করছে!

বিতর্কটা কাল্পনিক৷ তবে যুক্তরাজ্যের কয়েকজন বিজ্ঞানী যে হাওয়া আর পানি থেকে পেট্রল উৎপন্ন করতে পেরেছেন এটা পুরোপুরি সত্যি৷ কল্পিত বিতর্কে গাছের পক্ষ থেকে তোলা প্রশ্নগুলো খুবই বাস্তবসম্মত৷ আশা করা যায়, এসব বিবেচনায় নিয়েই এক সময় এই কৃত্রিম পেট্রল বাজারজাতকরণের ভাবনায় যাবেন বিজ্ঞানীরা৷

Formel 1 Südkorea Vettel
ফর্মুলা ওয়ান রেসের গাড়িও নাকি চলবে কৃত্রিম পেট্রলেছবি: Reuters

এখনো বিষয়টা ততটা এগোয়নি৷ শুধু জানা গেছে, উত্তর ইংল্যান্ডের টি সাইড এলাকার এয়ার ফুয়েল সিনথেসিস (এএফএস) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা পানি আর হাওয়া নিয়ে দারুণ একটা কাজ করে ফেলেছেন৷ পানি থেকে হাইড্রোজেন আর হাওয়া থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ে একটা প্রভাবকের সহায়তায়  পেট্রল তৈরি করেছেন তাঁরা৷ গত তিন মাসে তাঁরা ৫ লিটার পেট্রল উৎপাদন করেছেন গবেষণাগারে৷ বানিজ্যিক পর্যায়ে কাজ শুরু করলে উৎপাদন অনেক বাড়ানো যাবে, তবে বিজ্ঞানীরা এক্ষুনি সেটা চাচ্ছেন না৷ এএফএস-এর প্রধান নির্বাহী পিটার হ্যারিসন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একটা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷ সেখানে এ পেট্রলের ভালো দিক সম্পর্কে বলতে গিয়ে দুটো বিষয় তুলে ধরেছেন তিনি৷ প্রথমে জানিয়েছেন, বাজারে এখন যেসব পেট্রল পাওয়া যায় তার চেয়ে এই পেট্রল অনেক পরিষ্কার৷ সিনথেটিক বা কৃত্রিম বলেই এ পেট্রল তুলনামূলকভাবে বেশি পরিষ্কার৷ এর আরেকটা ভালো দিক হলো, এতে ক্ষতিকর সালফার থাকে না, আর তাই পরিবেশ দূষণের আশঙ্কাও থাকেনা একদম৷

কিন্তু অন্য সমস্যা আছে৷ এবং সেই সমস্যা অগ্রাহ্য করে ব্যাপক উৎপাদনে যাওয়াটা সমীচীন মনে করছেন না বিজ্ঞানীরা৷ এএফএস দু'বছরের এক প্রকল্পের আওতায় নতুন উপায়ে পেট্রল তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে৷ এ প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ১৬ লাখ ডলার৷ শেষ পর্যন্ত যে পেট্রল পাওয়া গেছে তার দাম বাজার-চলতি পেট্রলের দামের চেয়ে অনেক বেশি৷

পিটার হ্যারিসন অবশ্য দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশি দিন থাকবেনা বলে জানিয়েছেন৷ তিনি বললেন, ‘‘দামটা যাতে সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসে সে ব্যবস্থা একটা সময় অবশ্যই করতে পারবো বলে আশাবাদী আমরা৷''  তা দাম কমার আগ পর্যন্ত কি এই পেট্রল ব্যবহার করা যাবে না? এএফএস-এর প্রধান নির্বাহী জানালেন, যাবে, তবে জরুরি অবস্থায়৷

মানে বুঝলেন না?  হ্যারিসন বলেছেন, ‘‘তেলের খুব বড় সংকট দেখা দিলে, গাড়িকে সচল রাখতে বা কোনো বিমানকে ওড়াতে যে পরিমাণ তেল লাগবে তা দিতে পারবো আমরা৷'' আপাতত ৩ মাসে মাত্র ৫ লিটার পরিবেশবান্ধব পেট্রল উৎপাদন করলেও অদূর ভবিষ্যতে উৎপাদন বেশ বাড়াবে এএফএস৷ আগামী দু'বছরের মধ্যে ফর্মুলা ওয়ান বা এ ধরণের কিছু মোটর স্পোর্টসের জন্য দিনে ১২০০ লিটার পেট্রল উৎপাদন শুরু করবে তারা৷

এসিবি/আরআই (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য