1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্থবিরতায় আক্রান্ত ভারতীয় সংসদ

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৬ আগস্ট ২০১৩

ভারতীয় সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে কি চিত্রনাট্যটা পাল্টাবে? আগের দিনে সর্বদলীয় বৈঠকে অধিবেশন নির্বিঘ্নে চলতে দেবার সেই প্রথাগত আশ্বাস৷ কিন্তু বাস্তবচিত্র তার বিপরীত৷

https://p.dw.com/p/19K2U
ছবি: AP

হৈ হট্টগোল, সাংসদদের শান্ত করতে স্পিকারের বৃথা চেষ্টা এবং অবশেষে অধিবেশন মুলতুবি৷

সংসদের বাদল অধিবেশনের মেয়াদ ৩০শে আগস্ট পর্যন্ত৷ এই কয়েকদিনের মধ্যে সরকারকে পাস করাতে হবে ৪৪টি গুরুত্বপূর্ণ বিল, যার শীর্ষে আছে খাদ্য সুরক্ষা বিল৷ ঐ বিল পাস হলে দেশের ৬৭ শতাংশ মানুষ পাবে খাদ্য সুরক্ষার আইনি অধিকার৷ পাবে মাথাপিছু পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য, ১ থেকে তিন টাকা কিলো দরে৷ তিন মাস পরে দিল্লি, মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থানসহ পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা ভোট৷ আগামী বছর সাধারণ নির্বাচন৷ স্বাভাবিকভাবেই খাদ্য সুরক্ষা বিল সেদিক থেকে ভোট ধরার বড় হাতিয়ার৷ কিন্তু এই বিল পাস হওয়া এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে৷

উত্তর প্রদেশে বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় ইন্ডিয়ান অ্যাডনিস্ট্রেশন সার্ভিসের এক মহিলা অফিসার দুর্গাশক্তি নাগপালকে সাসপেন্ড করে তাঁর বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙার অভিযোগে চার্জশিট দিয়েছে রাজ্যের সমাজবাদী সরকার৷ অন্যায় অভিযোগে একজন সৎ মহিলা অফিসারের সাসপেনশনের ঘটনা সংসদের ভেতরে ও বাইরে একটা রাজনৈতিক সংঘাতের চেহারা নিতে চলেছে৷ কংগ্রেস, বিজেপি, বিএসপি ও বামদলসহ অন্যসব রাজনৈতিক দল এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়৷ কংগ্রেস দুর্গাশক্তির পাশে দাঁড়ানোয়, খাদ্য সুরক্ষা বিলে সরকারের বিপক্ষে দাঁড়াবে বলে হুমকি দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি৷ উল্লেখ্য, সংসদে সমাজবাদী পার্টির ২২ জন সাংসদ৷

Indien Religion Islam Ramadan
খাদ্য সুরক্ষা বিল পাস হবে কি?ছবি: DW/S.Waheed

সংসদের বর্তমান অধিবেশনে এছাড়া রয়েছে জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন বিল, বিমা ও পেনসন বিল, লোকপাল বিল, তথ্য জানার অধিকার আইনের সংশোধনী বিল, পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন বিল ইত্যাদি৷ অথচ উভয়সভার অধিবেশন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে আরম্ভ হয়ে যায় এক নাগাড়ে চিৎকার-চেঁচামেচি, স্লোগান৷ অন্ধ্র প্রদেশ বিভাজনের সপক্ষে ও বিপক্ষে এবং পৃথক বোড়োল্যান্ড গঠনের দাবিতে অধিবেশন তোলপাড়৷ জিরো আওয়ার অর্থাৎ প্রশ্নোত্তর পর্বের পর তাঁদের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেয়া হবে বলে স্পিকারের বারংবার আশ্বাসে কেউ কান না দেয়ায়, অধিবেশন মুলতুবি রাখতে হয়৷

নাগরিক সমাজের প্রশ্ন, এভাবে প্রতিবার সংসদের অধিবেশন চলতে না দিয়ে জনপ্রতিনিধিরা দেশের ভালো করছেন না মন্দ করছেন? সরকারের সমালোচনা করা, সরকারের পদক্ষেপের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দেয়া, শুধরে দেয়া সাংসদ বা বিধায়কদের দায়িত্ব ও অধিকার৷ কিন্তু তার জন্য পুরো ইস্যু নিয়ে বিতর্ককালে যুক্তিসহ সরকার ও বিপক্ষ নিজেদের বক্তব্য রাখবেন, এটাই সংসদীয় রীতিনীতি৷ শুধু হৈচৈ করে সভার কাজকর্ম পণ্ড করে সংসদকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রাখাটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না সুশীল সমাজের কাছে৷ সংসদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আস্থা, সাংসদদের দায়বদ্ধতা তলানিতে এসে ঠেকেছে এইসব কারণে – এমনটাই ধারণা আমজনতার৷ গুরুত্বপূর্ণ সব বিল অনেক সময় বিনা আলোচনাতেই তাই পাশ করাতে হয়৷

অভিযোগ, অনেক সাংসদ নির্বাচিত হন যোগ্যতার ভিত্তিতে নয়, অর্থ ও পেশিশক্তির বলে৷ অনেকের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, তোলাবাজির অপরাধে মামলা চলছে৷ কেউ কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন৷ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, দোষী সাব্যস্ত সাংসদ বিধায়করা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না৷ এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলি এককাট্টা৷ তারা এই সংক্রান্ত আইন সংশোধন করতে চলেছে৷ ফলে অদূর ভবিষ্যতে সংসদ আর গণতন্ত্রের পবিত্র মন্দির হয়ে থাকতে পারবে কি?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য