1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্টাসি’র গোপন নথি প্রকাশ হবার ২০ বছর

৬ জানুয়ারি ২০১২

মানচিত্র থেকে লুপ্ত সাবেক পূর্ব জার্মান রাষ্ট্রের গোয়েন্দা পুলিশ ‘স্টাসি’ নামেই কুখ্যাত ছিল৷ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল তাদের কাজ৷ কিন্তু এজন্য সন্দেহজনক ব্যক্তিদের উপর যে ধরণের নজরদারি করা হতো ইতিহাসে তা বিরল৷

https://p.dw.com/p/13f5p
Ein Mann steht am Samstag (16.01.2010) im Archiv der Birthler-Behörde in Berlin. Dort fand anlässlich des 20. Jahrestages der Besetzung der Stasi-Zentrale ein Tag der offenen Tür statt. Foto: Klaus-Dietmar Gabbert dpa +++(c) dpa - Bildfunk+++
ফাইল ছবিছবি: picture alliance/dpa

১৯৯২ সালের ২ জানুয়ারি স্টাসির সব নথিপত্র সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়৷ ফলে বেরিয়ে আসে আশ্চর্যজনক সব তথ্য৷ যেমন খ্রিষ্টিয় গণতন্ত্রী দলের রাজনীতিক ভেরা ল্যাঙসফেল্ড৷ অনেকদিন সংসার করার পর সেদিনই তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, তাঁর স্বামী ছিলেন স্টাসির একজন ‘ইনফর্মার' মানে গোপন তথ্যদাতা৷ নিজের স্ত্রী সম্পর্কে গোপন তথ্য পাঠানোর জন্য স্টাসি তাঁকে নিয়োগ দিয়েছিল!

ল্যাঙসফেল্ডের মতো প্রায় ছয় লক্ষ ব্যক্তির উপর নজরদারি করেছিল স্টাসি৷ তাদের সম্পর্কে তথ্য রাখা রয়েছে যেসব ফাইলে সেগুলো একসঙ্গে করলে প্রায় ১১১ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে৷ ছবি বা তার নেগেটিভ রয়েছে প্রায় ১৬ লক্ষ৷ বর্তমানে এগুলো একটি বিশেষ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে রয়েছে৷ ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই গোপন নথিগুলো দেখতে পাওয়া যাবে৷ ১৯৫০ সালে গঠিত হওয়া স্টাসিতে বিভিন্ন সময়ে কাজ করেছেন প্রায় পৌনে তিন লাখ ব্যক্তি৷ এর মধ্যে গোপন তথ্যদাতা হিসেবে শুধু পূর্ব জার্মানিতে কাজ করা ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় পৌনে দুলক্ষ৷ আর পশ্চিমে কাজ করেছে ১,৫৫৩ জন৷ এসবই সরকারি হিসেব৷ তবে কোনো কোনো সূত্রের মতে, গুপ্ত তথ্যদাতার সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ৷

Ein Mitarbeiter der Bundesbehörde für die Stasiunterlagen zieht am 21.11.2001 im ehemaligen Ministerium für Staatssichheit der DDR in Berlin eine Akte. Auf einer Pressekonferenz wurde das Findbuch "Archivbestand 2" vorgestellt. Das Buch beinhaltet ein Aktenverzeichnis, das durch Angaben zur Geschichte desjenigen, der die Akten angelegt hat und durch Angaben zur Überlieferung und Aussagen zu Art und Bedeutung der Unterlagen ergänzt wird.
ফাইল ছবিছবি: picture-alliance/dpa

জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার বিশ বছর পর এখনও আলোচনায় স্টাসির সেইসব তথ্য৷ হবেই বা না কেন! সেখানে যে লুকিয়ে আছে অনেক ইতিহাস৷ সেসময়কার পূর্ব জার্মানির সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যায় এই তথ্যগুলো থেকে৷ এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ লক্ষ জন এই নথিগুলো পড়েছেন৷ যাদের উপর নজরদারি করা হয়েছিল তারা বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়েছেন নথিগুলো৷ কারা তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতো সেটা জানার আগ্রহ ছিল অনেকের৷ কেননা এমনও দেখা গেছে যে, বন্ধু ভেবে যাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেশা হয়েছিল, আসলে তারাই ছিল স্টাসির গোপন তথ্যদাতা৷ অবশ্য উল্টোটাও হয়েছে৷ যেমন স্টাসির লোক ভেবে অনেকের সঙ্গে হয়তো মেশা হতোনা৷ কিন্তু পরে দেখা গেল আসলে তা সত্য নয়৷

লুৎস রাথেনো একজন কবি ও লেখক৷ তিনি বলছেন, ১৯৯২ সালে যেদিন স্টাসির নথিগুলো উন্মুক্ত করা হলো সেদিনটা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ তিনি ঐ দিনটার জন্য অনেক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন বলে জানান৷ কেননা তিনি বলছেন, যদি গোপন নথিগুলো পড়া না যেত তাহলে পূর্ব জার্মানির শাসন ব্যবস্থার যারা বিরোধী ছিলেন তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে যেত৷ কেননা স্টাসি তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চালিয়েছিল৷

বিরোধীদের কীভাবে শায়েস্তা করা যায় তার সবরকম বন্দোবস্ত করতো স্টাসি৷ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে শুরু করে সামাজিকভাবে হেনস্তা করা হতো তাদের৷ সে সম্পর্কে বলছিলেন মানবাধিকার কর্মী উলরিকে পপে৷ নিজের নথি দেখতে প্রথম দিনই তিনি হাজির হয়েছিলেন৷ পপে বলেন, তাঁর ভাবমূর্তি ধ্বংস করে দেয়ার সব পরিকল্পনা করেছিল স্টাসি৷ তিনি যেখানে বাস করতেন সেই রাস্তায় ক্যামেরা বসানো হয়েছিল৷ কারা তাঁর বাড়িতে যাতায়াত করেন সেটা লক্ষ্য রাখাই ছিল এর উদ্দেশ্য৷ পপে বলেন, তিনি যতজনকে তথ্যদাতা হিসেবে সন্দেহ করেছিলেন, আসল সংখ্যাটা ছিল তার চেয়েও বেশি৷ পপে এখন ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে সরকারি চাকরি করেন৷ রাজ্যটি পূর্ব জার্মানির অংশ ছিল৷ পপে বলেন, বর্তমান প্রজন্মের কাছে সাবেক পূর্ব জার্মানি তথা স্টাসি সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরতে হবে৷ তাদেরকে ইতিহাস জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে৷ এদিকে রাথেনো মনে করেন, ২০১৯ সালের পরও যেন সকলে নথিগুলো পড়তে পারে সে ব্যবস্থা করা উচিত৷

স্টাসি গোয়েন্দা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন শিল্পী হারি সান্তোস৷ তিনি বলেন সন্দেহভাজনদের ধরে এনে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই চলতো দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ৷ মাটির নিচের ঘনকালো অন্ধকার কুঠুরিতে সবটুকু সময় কাটাতে হতো ভয় আর আতঙ্কে৷ বন্দিদের কেউ জানতো না, তারা কোথায়? কিংবা পরের মুহূর্তটি কেমন হবে? আর মুক্তিই বা মিলবে কখন?

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য