সৌদি আরবে আপাতত লোক পাঠাবে না ইন্দোনেশিয়া
২৪ জুন ২০১১রুয়াতি বিনতি সাতুবি৷ ইন্দোনেশিয়ার এই মহিলা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন সৌদি আরবে৷ কিন্তু যার জন্য কাজ করতেন, সেই সৌদি মহিলা প্রায়ই নির্যাতন করতো সাতুবিকে৷ ফলে একদিন সহ্য করতে না পেরে সাতুবি খুন করে বসেন তাঁর মালিক ঐ সৌদি মহিলাকে৷
এরপর গ্রেপ্তার করা হলে সাতুবি পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেন৷ পরে শিরচ্ছেদও করা হয় তাঁর৷
কিন্তু সাতুবি যেহেতু বিদেশি নাগরিক, তাই শিরচ্ছেদের আগে তাঁর দেশ, অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়াকে এ ব্যাপারে জানানো উচিত ছিল সৌদি সরকারের৷ এটা কূটনীতির একটা রীতির পর্যায়ে পড়ে৷ কিন্তু সৌদি আরব সেটা না করায়, এর প্রতিবাদে সে দেশে আপাতত কর্মী না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইয়ুধোইয়োনো৷
তিনি বলেছেন, সৌদি বাদশা আব্দুল্লাহ'র কাছে তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠাবেন৷ টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইয়ুধোইয়োনো ঘটনাটিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তার তীব্র প্রতিবাদ জানান৷ প্রেসিডেন্ট'এর কথায়, যতোদিন পর্যন্ত না কর্মীদের কাজের পরিবেশ আরও উন্নত করা সংক্রান্ত চুক্তি হচ্ছে, ততোদিন পর্যন্ত সৌদি আরবে কর্মী পাঠানো বন্ধ থাকবে৷
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ১০ লক্ষ নাগরিক কাজ করেন৷ এর মধ্যে বেশিরভাগই গৃহকর্মী৷
এর আগে ইন্দোনেশিয়ার সাধারণ জনগণ সাতুবির শিরচ্ছেদের ঘটনায় নিন্দা জানায় এবং তাঁকে প্রয়োজনীয় আইনগত সুবিধা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে৷
তবে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টি নাটালেগাওয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সাতুবির মালিকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল৷ বলা হয়েছিল, তারা যেন সাতুবিকে মাফ করে দেয়৷ দেয়া হয়েছিল সেরকমই এক প্রস্তাব ৷ কিন্তু সরকারের এই চেষ্টা ব্যর্থ হয় বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
অন্যদিকে অপর একটি ঘটনায়, ইন্দোনেশিয়ার আরেক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অপরাধে এক সৌদি মহিলাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল৷ পরে গত এপ্রিল মাসে অন্য একটি আদালত সেই দণ্ড মওকুফ করে দেয়৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ