1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুন্দরবনে আগুন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৩ মে ২০১৪

বাংলাদেশের দক্ষিণে সুন্দরবনের আগুন তিন দিনেও নেভেনি৷ বনবিভাগ আর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও এখনো বনের ভিতরে ধিকি ধিকি আগুন জ্বলছে৷ তবে আগুনের প্রকৃত কারণ জানতে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি৷

https://p.dw.com/p/1C58k
ছবি: picture-alliance/dpa

ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের গুলিশাখালী ক্যাম্পসংলগ্ন পয়ষট্টি ছিলা এলাকায় গত বুধবার বিকেলে আগুন লাগে৷ আগুনে অন্তত পাঁচ একর বনভূমি পুড়ে গেছে বলে খবর৷ আগুন লাগার পর পরই বনবিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন৷ তাঁরা মূলত ‘লাইন অফ ফায়ার' কেটে দিয়ে আগুন যাতে ছাড়াতে না পারে, সেই চেষ্টাই করেন৷ বনবিভাগ জানায়, বুধবার বিকেলে চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় বনের ভেতরে বনকর্মীরা ধোয়ার কুণ্ডলী দেখে আগুন লাগার বিষযটি বুঝতে পারেন৷

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের যেসব এলাকায় প্রতিবছর আগুন লাগার ঘটনা ঘটে, গুলিশাখালীর ওই এলাকা এর মধ্যে অন্যতম৷ তিনি জানান, এবারে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ তবে বনের সাত-আট একর এলাকা জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে৷ এতে ঝোপ, লতা ও গুল্মজাতীয় কিছু গাছ পুড়ে গেছে৷ তিনি আরো জানান, সাধারণত ‘লাইন অফ ফায়ার' কেটে দিয়েই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়৷ চারপাশে যাতে আগুন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, এ জন্য যেসব লতা-গুল্ম এবং ঘাস জাতীয় উদ্ভিদের মাধ্যমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে – তা কেটে দেয়া হয়৷

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা ফায়ার স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক জানান, বনের প্রায় সাত-আট একর এলাকাজুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে আগুনের ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে উপরে উঠছে৷ যেখানেই ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে, সেখানেই পানি ছিটানো হচ্ছে৷ তিনি বলেন, আগুনের কারণ সম্পর্কে এখনো তাঁরা নিশ্চিত নন৷ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত কমিটি কাজ করছে৷

বনবিভাগ জানায়, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের বনভূমির উত্তর ও উত্তর-পূর্বাংশে কিছু নীচু এলাকায় প্রায় প্রতিবছর বসন্তের শেষে ও গ্রীষ্মকালের শুরুতে তীব্র বাতাস ও দাবদাহে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে৷ এই নীচু এলাকায় বর্ষাকালে পানি জমে, শীতকালে শুকিয়ে যায়৷ সব এলাকায় সাধারণত গুল্ম, ঘাস, লতাপাতা ও ঝোপজাতীয় গাছ রয়েছে৷ সারা বছর গাছের পাতা ঝরে পানিতে পড়ে আধা পঁচা পাতার স্তর তৈরি হয়৷ শুকনো মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে ঝরা পাতার এই স্তরের ভাঁজে মিথেন গ্যাস জমে৷ এ অবস্থায় প্রখর সূর্যতাপ বা বনজীবীদের ব্যবহৃত আগুন থেকে বনের এ সব এলাকায় আগুন লাগে৷

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এ কে এম মাকসুদ কামাল জানান, তীব্র দাবদাহই বনের আগুনের কারণ৷ তবে আগুনের উৎস না থাকলে আগুন লাগে না৷ গাছের গুড়িতে ঘর্ষণের কারণে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে৷ আবার কারুর ফেলে দেয়া দাহ্য পদার্থের কারণেও আগুন লাগতে পারে৷ মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হলেই যে আগুন লাগবে – তা নয়৷ আগুনের উৎস ছাড়া আগুন লাগার কোনো কারণ নেই৷ এছাড়া এই আগুন কখনো কখনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেও লাগানো হতে পারে বলে মনে করেন তিনি৷ এ জন্যই এর সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন৷

তিনি জানান, বনে এই আগুন লাগার ঘটনা সারা বিশ্বেই ঘটে৷ বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার বনে সর্বগ্রাসী এই আগুন দাবানল নামে পরিচিত৷ সুন্দরবনে প্রায় প্রতিবছরই এ ধরণের আগুনের খবর পাওয়া যায়৷ তবে এই আগুন মোকাবেলায় সুন্দরবনের বনকর্মী এবং স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নেই বলে জানান তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য