1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিরিয়া ইস্যুতে মধ্যস্থতা

গুন্টার বিরকেনস্টক/এপিবি (এএফপি/এপি/রয়টার্স)৮ অক্টোবর ২০১৩

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বলেছেন, সিরিয়া সংকটে জার্মানি মধ্যস্থতা করলে স্বাগত জানাবেন তিনি৷ বলা বাহুল্য, আসাদের এ আহ্বান নাকচ করেছে বার্লিন৷ বিশ্ব নীতিনির্ধারকরা অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেই মত দিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/19w1g
ছবি: Reuters

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিরিয়া সরকার৷ ঠিক এ সময় সিরিয়া সংকটে মধ্যস্থতা করার জন্য জার্মানিকে বড় ভূমিকা পালন করতে আসাদ সরকারের আহ্বান সবাইকে বেশ চমকে দিয়েছে৷

জার্মান পত্রিকা ‘ডের স্পিগেল'-এ খুব সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সিরিয়া সংকটে জার্মানিকে মধ্যস্থতা করতে আহ্বান জানান৷ এবং একইসাথে সিরিয়ায় সহিংসতার জন্য তার দায়ভারকে অস্বীকার করেন৷ আসাদ বলেন, মধ্যস্থতা করার অর্থ এই নয় যে সিরিয়ার সরকারকে সমর্থন করতে হবে৷ বরং আলোচনা করে সত্য কী তাই তুলে ধরারই আহ্বান জানান আসাদ৷

সহযোগিতার আহ্বান নাকচ

সোমবার আফগানিস্তান সফরের সময় জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে এ প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেন৷ বলেন, জাতিসংঘের বিশেষ দূত লাখদার ব্রাহিমি সেখানকার রাজনৈতিক সংকট সমাধানে যেভাবে মধ্যস্থতা করছেন, সেটাকে পূর্ণ সমর্থন করেন তারা৷ ২১শে আগস্ট রাসায়নিক হামলা চালানোর ব্যাপারে আসাদ সরকারের দায় অস্বীকারের সমালোচনা করেন তিনি৷ দায় এড়ানো কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন ভেস্টারভেলে৷

epa03797202 German Foreign Minister Guido Westerwelle speaks to members of the media during a foreign affairs council meeting at the EU Council headquarters in Brussels, Belgium, 22 July 2013. European Union foreign ministers were set to tackle the thorny question of whether Hezbollah's military wing should be blacklisted as a terrorist organization, as well as talks on Egypt and Syria. EPA/JULIEN WARNAND pixel
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলেছবি: picture-alliance/dpa

জার্মানির সিদ্ধান্ত সঠিক

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে একমত জার্মান বিশেষজ্ঞরা৷ জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্স-এর মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ গিডো স্টাইনব্যার্গ জার্মানির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেছেন, প্রস্তাব নাকচ করে সঠিক কাজই করেছেন তারা৷ কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক টোমাস ইয়েগারও সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, সিরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে৷ জার্মানি যদি এই দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে, তবে সেটা রাজনৈতিকভাবে ঔদ্ধত্য দেখানো হবে৷

জার্মানির জন্য সঠিক পন্থা

স্টাইনব্যার্গের মতে সিরিয়া ইস্যুতে জার্মানির সঠিক কাজটি করা উচিত৷ প্রথমত, শরণার্থীদের জন্য কিছু করা, যাতে সিরিয়ার জনগণ মনে করে যে তাদের জন্য জার্মান সরকার ভাবছে৷ তাঁর মতে, শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে সীমান্ত খুলে দিতে পারে তুরস্ক৷ আর সেক্ষেত্রে সেখানে সব ধরনের সহায়তা দিতে পারে জার্মানি৷ এমনকি, লেবানন এবং জর্ডানে যেসব শরণার্থী রয়েছে তাদেরও সাহায্য করতে পারে তারা৷

দ্বিতীয়ত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন শরণার্থীদের জন্য যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেখানে অংশ নিতে পারে জার্মানি৷ তাই ইয়েগারও মনে করেন যে, সিরিয়ায় মানবিক সহায়তা দেয়াটাই জার্মানির জন্য সঠিক পন্থা হবে৷

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একমত

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন মঙ্গলবার বলেছেন, প্রেসিডেন্ট আসাদ আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র পরিদর্শকদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করছেন৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি জানান, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র কিভাবে ধ্বংস করা হবে সে ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছেছে৷ ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এশীয় প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক বাণিজ্য সম্মেলনে তাদের এ বৈঠক হয়৷ এক বছরের মধ্যেই বিশেষজ্ঞরা সিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্র মুক্ত করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পুটিন৷

বান কি-মুনের পরামর্শ

এদিকে, সিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্র মুক্ত করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ১১ পৃষ্ঠার চিঠি পাঠিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন৷ সেখানে বলা হয়েছে, সিরিয়ার বিষাক্ত গ্যাসের সম্ভার ধ্বংসের এই ভয়ংকর অভিযানে জাতিসংঘের অন্তত ১০০ বিজ্ঞানী, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্বে রাসায়নিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ‘অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অফ কেমিক্যাল উয়েপেন্স'-এর উপস্থিতি প্রয়োজন, যারা সেখানে থেকে পুরো বিষয়টি তদারকি করবেন৷

USA, on September 27, 2013. Photo by Cem Ozdel/AA/ABACAPRESS.COM
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনছবি: picture alliance/abaca

তিনি লিখেছেন, সিরিয়ার ১ হাজার টন রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করতে অভিযান শুরু হবে এ বছরের ১লা নভেম্বর আর শেষ হবে আগামী বছরের ৩০শে জুন৷ সাধারণত এত বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ধ্বংস করতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়৷ আর সে কারণেই যৌথভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন বান কি-মুন৷

অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অফ কেমিক্যাল উয়েপন্স বা ওপিসিডাব্লিউ এবং জাতিসংঘ এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, সিরিয়ায় যে সহিংসতা চলছে তাদের অভিযান সেটা বন্ধ করতে সক্ষম নয়৷ তবে সিরিয়া থেকে এ সব অস্ত্র নির্মূল করা গেলে সহিংসতা দমনে তা বড় ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করেন জাতিসংঘের মহাসচিব৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য