1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাহিত্যে ২০১০ এর নোবেল পেলেন মারিও ভার্গাস লোসা

৭ অক্টোবর ২০১০

সাহিত্যে ২০১০ সালের নোবেল পুরস্কারের ঘোষণাটি হয়ে গেছে৷ ইতোমধ্যেই গোটা বিশ্ব জেনে গেছে, এবারের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারটি কে পেয়েছেন৷ এবারের এই বিশেষ নোবেলটি যিনি জিতেছেন, তাঁর নাম মারিও ভার্গাস লোসা৷

https://p.dw.com/p/PY9I
মারিও ভার্গাস লোসাছবি: AP

তাঁর প্রথমদিকের উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে দ্য গ্রিন হাউস, কনভারসেশন ইন দ্য ক্যাথেড্রাল৷

জন্মেছিলেন ২৮ মার্চ ১৯৩৬ সালে৷ পেরুর দক্ষিণাংশের আরেকিপায় জন্মগ্রহণকারী লাতিন আমেরিকার ডাকসাইটে এই লেখক বহুমাত্রিক আর বহু বর্ণীল জীবনের অধিকারী৷ তাঁর সাহিত্যকর্ম আদতে তাঁর যাপিত জীবনের নানান অধ্যায়, যেখানে তিনি তাঁর জীবনের দর্শন আর চারপাশের পৃথিবীর সব রূঢ় বাস্তবতার ছবি এঁকেছেন৷

৭৪ বছর বয়স্ক এই লেখক সম্পর্কে এককথায় কোনকিছু প্রকাশ করাটা আসলেই রীতিমত এক দুঃসাধ্য কাজ৷ তিনি তাঁর পেশাদারি লেখক জীবনের শুরুটা করেছিলেন ছাত্রাবস্থাতেই, পেরুতে – রেডিও আর সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা দিয়ে৷

১৯৫৫ তে, মাত্র উনিশ বছর বয়সে লোসা বিয়ে করেছিলেন জুলিয়া নামে সম্পর্কে তাঁর এক চাচীকে৷ পরে তাঁর একটি উপন্যাসও লিখেছিলেন ‘আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার' নামে৷ এরপর ১৯৬৫ সালে সম্পর্কে এক বোনকে বিয়ে করেছিলেন লোসা৷

Peru Schweden Großbritannien Russland Nobelpreis Literatur 2010 Mario Vargas Llosa
লোসা জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকায়ছবি: picture alliance/dpa

জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকায়৷ ১৯৯৫ সালে স্পেনের বিখ্যাত সারভান্তেস পুরস্কার, ১৯৯৬ সালে জার্মান পিস প্রাইজ সহ অসংখ্য পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন লোসা৷ তাঁকে ইউরোপিয় ভাবধারার লেখক হিসেবেই দেখা হয়ে থাকে৷ ফুহিমোরির শাসনামলে তিনি পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দিতাও করেছিলেন৷ কিন্তু হেরে যাওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ১৯৯৩ সালে তিনি স্পেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন৷

একসময় বামপন্থায় আস্থা ছিল তাঁর, অবশ্য শেষপর্যন্ত মুক্তবাজারের ছন্দেই নিজেকে ফিরে পেয়েছিলেন এই লেখক৷ যাকে বলে সব্যসাচী, লোসা হচ্ছেন তেমনই একজন৷ দুহাতে লিখেছেন, এ পর্যন্ত প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ৩০ পেরিয়ে গেছে৷ এই উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক উপন্যাস, রগরগে রোমান্স, অপরাধ কিসসা, হালকা চালের কমেডি সহ নানান বিচিত্র সব বিষয়৷ লিখেছেন নাটক আর স্মৃতিকথাও৷

লোসা অপরাপর লেখকদের মতো সংবাদপত্রে লেখা আর সামাজিক হুলুস্থুলের বাইরে থাকতে চাননি৷ সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লিখেছেন, নিয়মিত পত্রিকাতেও লেখেন তিনি৷

তাঁর লেখায় বা সাহিত্যকর্মে তিনি প্রায়শই বাস্তবের রূঢ় ঘটনাকে এঁকেছেন৷ এটি তার লেখার একটি বৈশিষ্ট্যও বটে৷ এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, ধর্ষণ, আর সহিংসতার বিভিন্ন নিষ্ঠুরতার বর্ণনা৷ সম্ভবত লেখক জীবনের শুরুর দিকের লিমা'র ট্যাবলয়েড পত্রিকা ‘লা ক্রোনিকা'য় অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদকের কর্ম অভিজ্ঞতার প্রভাব তার উপন্যাসে অবচেতন ছায়া ফেলেছে৷

খুব ঘুরে বেড়ান, অর্থাৎ ভ্রমণ ভালবাসেন৷ প্রায়শই বক্তৃতা আর বেড়ানোর কাজে তাঁকে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ছুটে বেড়াতে দেখা যায়৷ সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, একজন লেখকের কখনোই স্থবির হওয়া উচিত নয়৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমি কখনোই মনে করি না একজন লেখককে পৃথিবী বিচ্ছিন্ন হয়ে কেবল পাঠাগারের চৌহদ্দিতেই আটকে থাকতে হবে৷ যেমনটি প্রুস্ত ছিলেন৷ বাস্তবের হৃৎস্পন্দনটি আমি অনুভব করতে চাই প্রতি পল, চারপাশে কি ঘটছে.. তা লক্ষ্য করতে চাই৷''

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন