1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে শিক্ষানবিসি

লরা ডোইং, সুজান্নে কর্ডস/এসি৩০ আগস্ট ২০১৩

জার্মান সরকারের এই কর্মসূচিটির নাম হলো ‘‘জব অফ মাই লাইফ’’, যার উদ্দেশ্য, তরুণ ইউরোপীয়দের জার্মানিতে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া৷ আর্থিক হিসেবে দুর্বল বিভিন্ন ইইউ দেশ থেকে গত ফেব্রুয়ারি যাবৎ এই শিক্ষানবিসদের আনা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/19Yg7
ছবি: Bundesagentur für Arbeit

স্পেনের জারাগোজা থেকে ২৪ বছর বয়সি বায়রন খাভিয়ার সিগচা পাটাঙ্গোকেই ধরা যাক৷ বায়রন সেখানেই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে শুরু করেছিলেন, কিন্তু ছেড়ে দিতে হয় এদিক সেদিক চাকরি করে কোনোরকমে জীবনধারণের জন্য৷ আপাতত তিনি জার্মানিতে টাইলার, মানে যারা বাথরুম, কিচেন কিংবা বসা কি শোয়ার ঘরের মেঝে কি দেয়ালে টাইল, অর্থাৎ টালি বসায় – সেই কাজ শিখছেন৷

ভালোই শিখছেন বায়রন – অন্তত হাতের কাজটা৷ তার চেয়ে মুশকিল হল জার্মান ভাষাটা শেখা – অন্তত বায়রনের সেরকমই মনে হচ্ছে৷ বাড়ি ছেড়ে ১৬শ' কিলোমিটার দূরে এসে বায়রন একটি অ্যাপ্রেন্টিসশিপ পাবার আশা করছেন, কেননা স্বদেশে, অর্থাৎ স্পেনে তিনি চাকরি-বাকরি পাবার আর কোনো আশা দেখেন না৷ স্পেনে ২৫ বছরের কম বয়সি তরুণ-তরুণীদের অর্ধেকই বেকার৷

Bucerius Law School
জার্মান শেখাটাও এই ‘‘জব অফ মাই লাইফ'' কর্মসূচির অঙ্গছবি: Law Clinic/Ruf

বায়রনের ইন্টার্নশিপের খরচের একাংশ দিচ্ছেন জার্মান সরকার৷ জার্মান সরকারের নিজেরও তা-তে স্বার্থ আছে, কেননা জার্মানিতে বহু অ্যাপ্রেন্টিসশিপের জন্য যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায় না বলে সে জায়গাগুলো খালি পড়ে আছে৷ ২০১২ সালে এভাবে ৩৩ হাজার অ্যাপ্রেন্টিসশিপের জায়গা খালি ছিল৷ এবং সেটা শুধু জার্মানিতে সাধারণভাবে কম শিশু জন্ম নিচ্ছে বলে নয়৷

আরেকটা সমস্যা হলো, হালের জার্মানিতে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা সময়ানুবর্তিতা, কর্মক্ষেত্রে ঊর্ধতন কর্মচারীদের সম্মান দেখানো, তাদের কথা শোনা কিংবা সাধারণ সৌজন্য ইত্যাদির বিশেষ ধার ধারে না৷ অন্তত পূর্ত শিল্পের প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কার্যনির্বাহি পরিচালক টোমাস মুরাওয়ারের তাই অভিজ্ঞতা৷ তিনিই বায়রনের অ্যাপ্রেন্টিসশিপের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন৷ এমনকি বায়রনের প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার আগে তার কোম্পানি আর বায়রন একত্রে বসে ঠিক করবে, তারা পরবর্তী তিন বছর পরস্পরের সঙ্গে কাটাতে পারবে কিনা৷

জার্মানিতে ওস্তাদ মিস্ত্রিদের স্কুল ছাড়ার পর প্রশিক্ষণ নিয়ে, সেই সঙ্গে বেশ ক'টা পরীক্ষা পাস করে তবে সেই পেশার সমিতির কাছ থেকে ‘মাইস্টার' বা ওস্তাদ উপাধি পেতে হয়৷ বায়রনের কোম্পানির এক মাইস্টার সেবাস্টিয়ান কপেনের গোড়ায় সন্দেহ ছিল, স্পেনীয় মনোবৃত্তি যা, তা-তে বায়রন দুপুরে ‘সিয়েস্তা' করতে, অর্থাৎ ঘুম দিয়ে নিতে চাইবে কিনা৷ এমনকি বায়রনকে একটু বেশি লম্বা টিফিনের ছুটি দেবার কথাও ভেবেছিলেন সেবাস্টিয়ান৷ পরে দেখেন, বাড়তি বিরতি তো দূরের কথা, বায়রন একজন ক্লান্তিহীন কর্মী৷

কাজ শেষ হলেই বায়রনের ছুটি নয়, কেননা তখন শুরু হয় তার জার্মান শিক্ষা৷ জার্মান শেখাটাও এই ‘‘জব অফ মাই লাইফ'' কর্মসূচির অঙ্গ৷ ভাষাশিক্ষার খরচ দেন জার্মান সরকার, যেমন অ্যাপ্রেন্টিসশিপ চলাকালীন থাকা-খাওয়ার খরচের একাংশ দেন জার্মান সরকার৷ সব মিলিয়ে সরকারি বাজেটে এই কর্মসূচির জন্য ২০১৬ সাল অবধি ১৪ কোটি ইউরো বরাদ্দ রাখা হয়েছে৷

‘‘সারা জীবনের চাকরি'' কর্মসূচির সমালোচকদের আশঙ্কা হলো, এই সব বাইরে থেকে আসা অ্যাপ্রেন্টিসরা তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হবার পর জার্মানিতে থাকবে না, বরং স্বদেশেই ফিরে যাবে৷ বায়রনও সেটা বুঝতে পারেন: বাড়ির টান, বন্ধুদের টান, এগুলো তো আছেই৷ সেই সঙ্গে বিদেশি ভাষা: জার্মান৷ ‘‘ভাষাটা আরেকটু ভালো বলতে পারলে ভালোই লাগত৷ আপাতত অ্যাপ্রেন্টিসশিপটা শেষ করি৷ তারপর যখন টাইলার হিসেবে কাজ করব, তখন ওটা করব৷ তখন জার্মান শিখব,'' বলেছেন বায়রন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য