1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্রে আবর্জনা তিমি মাছেদের জান নিচ্ছে

১০ জুলাই ২০১১

আবর্জনা বলতে প্রধানত প্লাস্টিক৷ কোটি কোটি টন প্লাস্টিক আবর্জনা প্রতিবছর সাগরে গিয়ে পড়ে৷ সেটা যে তিমি, শুশুক ইত্যাদি প্রাণীদের জন্য কতো বড় বিপদ হয়ে উঠতে পারে, তা’ ধীরে ধীরে উপলব্ধি করছেন বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/11sP9
স্পার্ম হোয়েলছবি: AP

প্লাস্টিকের ব্যাগ অথবা মাছ ধরার জালে জড়িয়ে যে বহু সামুদ্রিক পাখি, কচ্ছপ অথবা অন্যান্য ছোটখাটো সামুদ্রিক প্রাণী মারা যায়, সেটা অনেকদিন ধরেই জানা ছিল৷ কিন্তু সমুদ্রে থাকে, এমন বড় আকারের স্তন্যপায়ী জীবগুলি যে এই ধরনের প্লাস্টিক খেয়ে শেষমেষ বিপন্ন হতে পারে, তার আন্দাজ অতি সম্প্রতি পাওয়া যেতে শুরু করেছে৷ ২০০৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে দুটি স্পার্ম হোয়েল গোত্রীয় তিমি মাছ ভেসে ওঠে, অর্থাৎ আটকে পড়ে - এবং মারা যায়৷ তাদের একটির পেটে ২০৫ কিলোগ্রাম মাছ ধরার জাল এবং অন্যান্য সিন্থেটিক আবর্জনা পাওয়া গেছিল৷

পেটে সুপারমার্কেটের প্লাস্টিকের ব্যাগ

তিমি দু'টি আকারে খুব ছোট নয় - লম্বায় প্রায় ৫০ ফুট৷ দেখা যায়, একটির পাকস্থলী ফুটো হয়ে গেছে৷ অন্যটির পাকনালিতে তাল পাকানো প্লাস্টিক আটকে সেটি বদ্ধ হয়ে গেছে, কাজেই তিমিটি বস্তুত না খেয়ে মরেছে৷ এ'ধরনের আরো অনেক ঘটনা আছে৷ ২০০৯ সালে দক্ষিণ ইটালির উপকূলে সাতটি স্পার্ম হোয়েল আটকা পড়ে৷ তাদের পেটে ছিল মাছ ধরার বঁড়শি, কাছি, অন্যান্য প্লাস্টিক পদার্থের এক জঙ্গল৷ ২০০২ সালে ফ্রান্সের নর্মান্ডি উপকূলে ভেসে ওঠা একটি মরা মিঙ্কে হোয়েলের পেটে ছিল প্রায় এক টন প্লাস্টিক, তার মধ্যে দু'টি ব্রিটিশ সুপারমার্কেটের প্লাস্টিকের ব্যাগ৷

লাশ কেটে দেখা তো দূরের কথা, রেকর্ডই নেই

সমস্যাটা যে কতো ব্যাপক, তা বোঝার পথে মূল প্রতিবন্ধক হল, বিশ্বের অধিকাংশ এলাকাতেই ভেসে ওঠা কিংবা আটকা পড়ে তিমি মাছের লাশ কেটে পরীক্ষা করে দেখা হয় না, এমনকি নথিবদ্ধও করা হয় না৷ এছাড়া পেটে এ'ধরনের প্লাস্টিক আবর্জনা নিয়ে যে সব তিমি মাছ মারা পড়ে, তাদের অধিকাংশের লাশই সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়৷ ওদিকে গবেষণা থেকে দেখা গেছে, যে সব এলাকায় হাওয়া অথবা সামুদ্রিক স্রোতের কারণে তিমি মাছেরা পর্যাপ্ত খাদ্য পায়, সামুদ্রিক আবর্জনাও ঠিক সেখানে গিয়েই জমা হয়৷ এছাড়া আছে প্লাস্টিক থেকে কালে যে সব বিযাক্ত পদার্থ সৃষ্টি হয়, সেগুলির বিষক্রিয়ার বিপদ৷

তিমি মাছেদের বিপদের কোনো কমতি নেই: আছে জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লাগার বিপদ, সাগরে তেলের খোঁজ এবং ড্রিলিং থেকে শব্দদূষণের বিপদ, আর সেই সঙ্গে জাপান, আইসল্যান্ড, নরওয়ের তিমি শিকার তো আছেই৷ এখন কথা হল, শেষমেষ ক্ষতিটা কার? তাদের, না আমাদের, মনুষ্য জাতির?

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়