1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কুমেরু সাগরের রহস্য

১২ জুলাই ২০১৩

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এত উন্নতি সত্ত্বেও সাগরের নীচের জগতের অনেকটাই এখনো অজানা৷ জার্মান এক অভিযানের আওতায় কুমেরু সাগরে অনেক নতুন উদ্ভিদ ও প্রাণী আবিষ্কৃত হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/193p4
ছবি: Mario Hoppmann, Alfred-Wegener-Institut

অ্যান্টার্কটিক বা কুমেরু সাগর সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের আজও অনেক কিছুই জানা নেই৷ গবেষণা জন্য প্রতিটি অভিযানে সেই অজ্ঞাত অন্ধকারে আরো কিছু আলোর রশ্মি এসে পড়ে৷ সাগরের পানিতে ছয় কিলোমিটার গভীরে বড় বড় গ্রিপার আর জাল ব্যবহার করে এমন অনেক কিছু আবিষ্কার করা যায়, যা আগে কোনো মানুষ দেখেনি৷

মেরিন বায়োলজিস্ট আঙ্গেলিকা ব্রান্ট জার্মান গবেষণা জাহাজ ‘পোলারস্ট্যার্ন'-এ চড়ে দক্ষিণ মেরুতে আসেন৷ ডাইভিং রোবোটগুলো সাগরের অতল থেকে কী মণিমাণিক্য তুলে এনেছে, সেটা দেখাই তাঁর জন্য সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর মুহূর্ত৷ মাছ, স্পাইডার ক্র্যাব জাতীয় কাঁকড়া, জায়ান্ট আইসোপডস আর স্কুইড – যদিও তাদের অধিকাংশই গভীর জল থেকে ওপরে আসার ধকল সহ্য করতে পারে না৷

Antarktischer Krill Euphausia superba
সমুদ্রের নীচের অজানা জগতছবি: Joachim Ploetz/Alfred-Wegener-Insitut

আঙ্গেলিকা ব্রান্ট-এর গবেষণার বিষয় হল মাইক্রো-অরগ্যানিজম বা অণুজীব, যেমন অস্ট্রাকড আর ব্রিশল ওয়র্ম৷ তবে তাঁর আসল কাজ শুরু হয় হামবুর্গ জুওলজিকাল ইনস্টিটিউটে৷ প্রফেসর ব্রান্ট বলেন, ‘‘একটা স্যাম্পল খোলার সময় দারুণ লাগে৷ টেস্ট টিউব থেকে যে কী বেরোবে, তা তো আর আগে থেকে জানা থাকে না! স্যাম্পল-এ যে সব ধরনের জীব পাওয়া যায়, বিশেষ করে কুমেরু সাগরের গভীর অংশ থেকে, তা চমকে দেওয়ার মতো৷ অন্যান্য বড় বা ছোট প্রাণীদের সাথে তাদের সম্পর্ক কোনোদিন অনুসন্ধান করে দেখাই হয়নি৷''

অনুসন্ধান করার মূল যন্ত্র হল ইলেকট্রনিক মাইক্রোস্কোপ, যা মানুষের চোখে অদৃশ্য অণুজীবকে পাঁচ লাখ গুণ বড় করে দেখায়, যেমন এই ডায়াটোম অ্যালজি৷ এক মিলিমিটারের ১৮,০০০ ভাগ ছোট অংশও দেখা যায়৷ গত কয়েক বছরে অধ্যাপক ব্রান্ট ও তাঁর সহকর্মীরা প্রায় ৭০০ নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন৷

antiker Riesenschwamm
এখনো জানা যায় নি গভীর সমুদ্রের সব রহস্যছবি: dpa

প্রফেসর ব্রান্ট বলেন, ‘‘একটা নতুন প্রজাতি খুঁজে পেলে, তা সঠিকভাবে নথিবদ্ধ করতে হবে৷ তার মানে, ড্রয়িং করতে হবে৷ হাত-পা, মুখ – সব আলাদা করে কেটে আলাদা করে নথিবদ্ধ করতে হবে৷ ড্রয়িং-এর সাথে বর্ণনাও থাকা চাই৷ তার জন্য একটা কোড আছে, আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত একটা নামকরণের পদ্ধতি, যা অনুযায়ী নতুন প্রজাতির নামকরণ করতে হবে৷ এছাড়া কী ধরনের বৈজ্ঞানিক সংগ্রহে নমুনাটা রাখতে হবে, তাও বলে দেওয়া আছে৷''

ডলিকিসকাস স্পিনেজাসেটোসুস হল একটি অণুজীবের নাম, যা আঙ্গেলিকা ব্রান্ট আবিষ্কার করেছেন৷ কুমেরু সাগরের খাদ্য-শৃঙ্খলে এই ক্ষুদ্র প্রাণীটিরও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান আছে৷ এই ধরনের ক্ষুদ্র প্রাণীরাই এই চিরতুষারের দেশে জীবনকে সম্ভব করে তুলেছে৷

কুমেরুবৃত্তের পরিবেশ প্রণালী এখনও নানা রহস্যে ভরা৷ আঙ্গেলিকা ব্রান্ট-এর মতো বিজ্ঞানীরা অস্ট্রাকডের পর অস্ট্রাকড অনুসন্ধান করে সেই অবগুণ্ঠন খোলার চেষ্টা করেছেন৷ হামবুর্গের জুওলজিকাল সংগ্রহশালার সংগ্রহ বিশ্ববিখ্যাত৷ লাল লেবেল লাগানো থাকলে তার অর্থ, প্রজাতিটি সদ্য আবিষ্কৃত হয়েছে৷ ভবিষ্যতে আরো প্রজাতি আবিষ্কৃত হবে বলে ধরে নেওয়া যায়৷

এসি / এসবি