1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমাবেশে জামায়াত নেই

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২১ জানুয়ারি ২০১৪

জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিয়েই নির্বাচনের পর সোমবার বিএনপির নেতৃত্ব ১৮ দলের প্রথম গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো ঢাকায়৷ বিএনপি নেতারা বলেছেন, সমাবেশটি ১৮ দলের নয়, বিএনপির৷

https://p.dw.com/p/1Atvh
Khaleda Zia 2013
ছবি: Getty Images

মঞ্চে তো নয়ই, এমনকি সমাবেশেও জামায়াত-শিবিরের কোনো ব্যানার-ফেস্টুনও দেখা যায়নি৷ দেখা যায়নি তাদের নেতাদের মুক্তির দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড৷ মঞ্চে জামায়াত নেতার জন্য নির্ধারিত আসনে এবার দেখা গেছে জাতীয় পার্টির একাংশের নেতা কাজী জাফর আহমেদকে৷ এছাড়া সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বর্তমান সরকার অল্প সময়ের মধ্যেই বিদায় নেবে৷ তবুও তিনি নির্বাচনের জন্য সংলাপের আহ্বান জানান সরকারকে৷

গত ১৫ই জানুয়ারি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ১৮ দলের পক্ষ থেকে সোমবার ঢাকায় গণসমাবেশ ও সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি দেন৷ আর ১৯শে জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনালের ডা. শফিকুর রহমান ১৮ দলের এই গণসমাবেশ সফল করতে তাদের নেতা-কর্মীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান বিবৃতির মাধ্যমে৷ তবে সোমবার বিকেলের এই সমাবেশে শেষ পর্যন্ত দেখা যায়নি জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের৷

এ ঘটনা বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে৷ এমনকি সমাবেশে আসা বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও এ নিয়ে পরস্পরের কাছে জানতে চান, কথা বলেন৷ কারণ গত এক বছর ধরে ১৮ দলের যে কোনো সমাবেশে জামায়াত-শিবিরের নেতারা প্রবলভাবে উপস্থিত থেকেছেন৷ নেতারা একই মঞ্চে বসেছেন আর একাধিক নেতা বক্তৃতা করেছেন৷

Bangladesch Abdul Quader Mollah Hinrichtung Unruhen in Dhaka 13.12.2013
নির্বাচনের সময় তাণ্ডব সৃষ্টির পিছনে জামায়াতের হাত ছিল – এমন অভিযোগ রয়েছে...ছবি: DW/M. Mamun

অথচ সাধারণত, সমাবেশের সামনের জায়গা থাকতো জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের দখলে৷ পুরো সমাবেশ স্থলে জামায়াত এবং তাদের নেতারদের মুক্তির দাবি লেখা ব্যানার, ফেস্টুন আর প্ল্যাকার্ডে ভরে যেত৷ এছাড়া ১৮ দলের সরকার বিরোধী হরতাল অবরোধে জামায়াত-শিবিরই ছিল মূল শক্তি৷

নেতারা যা বলেন

সমাবেশে জামায়াত না থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলেন৷'' তবে চেয়ারপার্সনের আরেকজন উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গণসমাবেশটি ছিল বিএনপির, ১৮ দলের নয়৷ তারপরও জোটের শরীক অন্যান্য দলের নেতারা এসেছেন৷ কিন্তু জামায়াত আসেনি৷ তাদের আসায় কোনো বাধা ছিল না৷ আসলে আসতে পারতেন৷ কেন আসেননি তা জামায়াত নেতারাই ভালো বলতে পারবেন৷ তবে তাদের কিছু সমস্যা আছে, যা সবাই জানে৷'' কিন্তু কি ধরণের সমস্যা আছে, তার ব্যাখ্যা দেননি তিনি৷

এটা জামায়াতকে জোট থেকে বাদ দেয়ার কোনো ইঙ্গিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘বিএনপির সমাবেশে যোগ না দেয়ার সঙ্গে জোটে থাকা না থাকার কোনো সম্পর্ক নেই৷'' খালেদা জিয়া তো ১৫ই জানুয়ারি কর্মসূচি ঘোষণার সময় ১৮ দলের গণসমাবেশের কথা বলেছেন৷ এর জবাবে দুদু বলেন, ‘‘রবিবার সংবাদ সম্মেলনে তা পরিষ্কার করা হয়েছে৷ বলা হয়েছে বিএনপির সমাবেশ৷ সমাবেশের ব্যানারে বিএনপির গণসমাবেশের কথা লেখা ছিল৷''

এ ব্যাপারে জামায়াতের বক্তব্য জানতে কোনো নেতাকেই পাওয়া যায়নি৷ তবে সোমবার সন্ধ্যায়ও জামায়াতের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের সমাবেশকে ‘১৮ দলের গণসমাবেশই' বলা হয়েছে৷

জামায়াত নিয়ে যত কথা

৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপ এবং সমঝোতার জন্য বিএনপিকে আগে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের আহ্বান জানান৷ বিদেশি কূটনীতিকরা সহিংসতা ছাড়তে বলেন বিএনপিকে৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সন্ত্রাসী দলকে নিষিদ্ধ করার কথা বলে৷ আর বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাত্‍কারে বলেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট স্থায়ী নয়৷ বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের আদর্শিক মিল নেই৷ এটা নির্বাচনি জোট৷ এছাড়া বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমর বলেছেন, সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলে বিএনপি বেঁচে যায়৷ বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান গত সপ্তাহে ডয়চে ভেলেকে বলেন, সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলে বিএনপির সঙ্গে তাদের আর জোট থাকবে না৷ জানা গেছে, নেতাদের মন্তব্য আর পরিস্থিতির কারণে জামায়াত সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের সমাবেশে যায়নি৷ অন্যদিকে, বিএনপিও বিষয়টি সুবিধাজনক হিসেবেই নিয়েছে৷ তবে চট্টগ্রামের সমাবেশে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত ছিল বলে জানা গেছে৷

সমাবেশে খালেদা জিয়া

সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের গণসমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি কলঙ্কিত সরকার গঠিত হয়েছে৷ আগামী ২৯শে জানুয়ারি যে দশম জাতীয় সংসদ বসবে, সেখানে কোনো সংসদ সদস্য থাকবেন না, বরং থাকবে কিছু সং৷''এর প্রতিবাদে তিনি ২৯শে জানুয়ারির কালো পতাকা মিছিল সফল করার আহ্বান জানান তিনি৷

খালেদা জিয়া বলেন এই সরকার মনে করছে যে তারা নানা কৌশলে বেশি দিন টিকে থাকবে৷ তারা টিকে থাকতে পারবে না৷ অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের বিদায় নিতে হবে৷ তখন জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে৷ তাই তিনি নির্বাচন নিয়ে সরকারকে আবারো সংলাপ এবং সমঝোতার আহ্বান জানান৷

খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আটক এবং দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে৷ তিনি নির্যাতন বন্ধ এবং সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান৷

সমাবেশে জামায়াত না থাকলেও ১৮ দলের শরীক জাগপা, কল্যাণ পার্টি, লেবার পার্টি, এনপিপি, ইসলামিক পার্টি, এনডিপি ও ন্যাপসহ সমমনা অন্যান্য দলের নেতারা ছিলেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য