1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৩ জানুয়ারি ২০১৪

সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করাই বর্তমান মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ পাশাপাশি সহিংসতা থামাতে হবে এবং দৃশ্যমান সংলাপ শুরু করতে হবে, যাতে জনগণ আশ্বস্ত হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/1AphD
Bangladesch Parlamentswahlen
ছবি: AFP/Getty Images

নতুন মন্ত্রীদের সামনে চ্যালেঞ্জ কী? ডয়চে ভেলের এমন প্রশ্নের জবাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এই মন্তব্য করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশে চলমান সংঘাত ও সহিংসতা দ্রুত থামাতে হবে৷ এক্ষেত্রে অবশ্য খানিকটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে৷ তবে বিরোধী পক্ষ সহিংসতা থামালে সরকারকেও ধড়পাকড় বন্ধ করতে হবে৷ তার ওপর সংলাপ শুরুর ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশিদের চাপ তো রয়েছেই৷ কারণ পাঁচ বছর পর নির্বাচন আসলে আবারো একটা সংকট তৈরি হবে, এটা কারুরই কাম্য নয়৷ এ জন্য স্থায়ী একটা সমাধান দরকার৷ দলীয় সরকারের অধিনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়, তা গত ৫ জানুয়ারি জনগণ দেখেছে৷ এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিও একই ধরনের নির্বাচন এ দেশে হয়েছে৷ তাই নির্বাচনের স্থায়ী একটা কাঠামো সংলাপের মাধ্যমে বের করতেই হবে৷ যাতে একই পরিস্থিতিতে আমাদের বারবার পড়তে না হয়৷''

অধ্যাপক ইমতিয়াজ মনে করেন, ‘‘যত দ্রুত সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়, ততই দেশ ও জনগণের জন্য মঙ্গল৷ কারণ যে নির্বাচন করে সরকার গঠিত হলো, সেই নির্বাচন কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি৷ তাই বিরোধী শিবিরকে আস্থায় নিয়ে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে৷ এখন নতুন সরকারের মন্ত্রীরা কত দ্রুত সেই কাজটি করতে পারেন, সেটা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে৷ অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি হরতাল-অবরোধ থেকে আপাতত সরে আসছে বলে মনে হচ্ছে৷ তবে লংমার্চ, সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচি তারা দিতেই পারে৷ তাদের সেই কর্মসূচি পালনের সুযোগ দিতে হবে৷ তাহলেই এক ধরনের সমঝোতা হতে পারে৷''

নতুন মন্ত্রীদের সামনে চ্যালেঞ্জ কি? এমন প্রশ্ন ছিল নবনিযুক্ত আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের কাছেও৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সব কাজই চ্যালেঞ্জিং, এই দায়িত্বটিও অনেক চ্যালেঞ্জের এবং এ এক গুরুদায়িত্ব৷ এখনও অগ্রাধিকার ঠিক করিনি৷ আসলে এটা অনেক বড় একটা মন্ত্রণালয়, আগে বুঝে নেই৷ পরে অগ্রাধিকার জানাতে পারবো৷ অবশ্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার শেষ করে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে৷ এখানে কোন ছাড় নয়৷''

তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার সরকার বদ্ধপরিকর৷ যেভাবেই হোক, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে৷ জেল হত্যার বিচার হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার বিচার হয়েছে৷ বঙ্গবন্ধু হত্যারও বিচার হয়েছ, গত আমলে বিচারের দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে৷ স্বাধীনতার ৪২ বছর পর এই সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে অনেকাংশেই সেই প্রক্রিয়াটি শেষ করার সাফল্য অর্জন করেছে৷ এর ধারাবাহিকতা থাকবে৷

একই ধরনের মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর৷ তিনি বলেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে যারা, তাদের ওপর হামলা হচ্ছে৷ এ রকম একটি সংকটময় সময়ে আমি মনে করি, এ ধরনের অন্ধকারের শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সংস্কৃতি একটি বড় হাতিয়ার৷ এ জায়গাটিতে ব্যাপক কাজ করার সুযোগ রয়েছে৷ এই কাজগুলো ঠিকমতো করতে পারলে, মানুষের চেতনায় বাঙালি সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশের প্রতি ভালোবাসা আনতে পারলে অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ হবে৷''

নির্বাচনের পর ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘‘বিষয়টি পরিকল্পিতভাবেই হয়েছে৷ হামলাকারীদের দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ছিল বলেই আমার ধারণা৷'' ‘অপশক্তি'-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ অতীতেও জয়ী হয়েছে, এবারো তারা জয়ী হবেন৷

ওদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আইন ও সংবিধান অমান্যকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে৷ প্রথমবারের মতো প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া ঢাকার এই সংসদ সদস্য বলেন, যারা আইন মানে না, সংবিধান মানে না তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে৷ পুলিশের প্রতি কোনো নির্দেশনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সবেমাত্র আজকে এসেছি৷ আগে দেখবো, বুঝবো এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো৷'' আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকমতো কাজ করছে বলেও মনে করেন আসাদুজ্জামান কামাল৷ নৈরাজ্য ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রত্যয় ব্যক্ত করে এক্ষেত্রে জনগণের সম্পৃক্ততা প্রত্যাশা করেন নতুন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য