1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া

১৯ নভেম্বর ২০০৯

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়৷ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত কিছু কর্মকর্তা ও জওয়ান এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন৷

https://p.dw.com/p/KbC2
ছবি: AP

সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পুরো রাজনীতির মোড় পরিবর্তিত হয়ে যায় এ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে৷ এ ঘটনার পর প্রায় দেড়দশকজুড়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সেনাশাসন চলে দেশটিতে৷

প্রায় দশকব্যাপী সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে ১৯৯০ সালে জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সরকার পতনের মধ্য দিয়ে পুনরায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ কিন্তু জেনারেল জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তখন নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসে এবং তারা মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি৷

এ ঘটনার দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করে৷ অবশেষে হত্যাকাণ্ডের ৩৪ বছর পর বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মামলাটির চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করল৷

মামলার ঘটনাক্রম:

১৫ আগস্ট, ১৯৭৫: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার স্ত্রী বেগম ফজিলতুন্নেছা মুজিব এবং তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয়৷ দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান মুজিবের দু'কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা৷ সেদিনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে তাঁর দুই পুত্রবধূ, ছোটভাই, বোনের ছেলেমেয়ে ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এবং তাঁর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ নিহত হন ২৬ জন৷

২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫: এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে খন্দকার মোশতাক সরকার ইমডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করে৷

২ অক্টোবর, ১৯৯৬: হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকার সময় তাঁর রিসেপসনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ আ ফ ম মুহিতুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় ২৪ আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন৷

১২ নভেম্বর, ১৯৯৬: আওয়ামী লীগ সরকার দায়মুক্তি অধ্যাদেশটি বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করে৷

১৫ জানুয়ারি, ১৯৯৭: তদন্ত শেষে পুলিশ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে৷

১২ মার্চ, ১৯৯৭: চার আসামি মারা যাওয়ায় ২০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকায় দায়রা জজ আদালতে বিচার শুরু৷

৮ নভেম্বর, ১৯৯৮: ঢাকার দায়রা জজ গোলাম রসুল ২০ আসামির মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন৷ এর বিরুদ্ধে কারাবন্দি চার আসামি বজলুল হুদা, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মহিউদ্দিন আহমেদ হাইকোর্টে আপিল করেন৷

২৮ জুন, ২০০০: হাইকোর্টের বিচারপতিরা কয়েক দফা বিব্রত হওয়ার পর ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু৷

১৪ ডিসেম্বর, ২০০০: হাইকোর্ট এ মামলায় বিভক্ত রায় দেয়৷ বিচারপতি মো. রুহুল আমিন ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন৷ অপর বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ১৫ আসামির ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন৷

১২ ফেব্রুয়ারি, ২০০১: হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চের বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমের আদালতে মামলার শুনানি শুরু৷

৩০ এপ্রিল, ২০০১: তৃতীয় বেঞ্চ ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে তিনজনকে খালাস দেয়৷

১৩ র্মাচ, ২০০৭: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ল্যান্সার এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার৷ একই বছরেরর ১৮ জুন তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়৷

২ আগস্ট, ২০০৭: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের দায়ের করা লিভ টু আপিলের ওপর শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠন এবং শুনানির প্রক্রিয়া শুরু৷

৩০ অক্টোবর, ২০০৭: পেপারবুক তৈরি করে জমা দিতে আসামি পক্ষের শেষ সময়৷ তারা পেপারবুক ও যুক্তির সংক্ষিপ্তসার আদালতে জমা দেয়৷

২৩ আগস্ট, ২০০৯: রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তির সংক্ষিপ্তসার আপিল বিভাগে জমা দেওয়া হয়৷

২৪ আগস্ট, ২০০৯: আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আপিল শুনানির জন্য ৫ অক্টোবর তারিখ ধার্য করে দেন৷

৪ অক্টোবর, ২০০৯: মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে একটি বেঞ্চ গঠন৷

৫ অক্টোবর ২০০৯: মামলার আপিল শুনানি শুরু৷

১৯ নভেম্বর ২০০৯: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির আপিল আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ ফলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোট ১২ আসামিরই মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে৷

প্রতিবদেক: মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য