শুধু পোষা প্রাণীর জন্য ‘পেট এয়ারওয়েজ’
১০ জুলাই ২০০৯তেমনই এক চমকানো খবর নিয়ে আগামী ১৪ জুলাই অ্যামেরিকাতে শুধু পোষা প্রাণীর জন্যই চালু হতে যাচ্ছে পেট এয়ারওয়েজ-এর ফ্লাইট৷ সাবার্বান এয়ারের পরিচালিত এই বিশেষ ফ্লাইট কেবলই আদরের অতি প্রিয় প্রাণীদের জন্য৷
দিন যত যাচ্ছে পৃথিবীতে মানুষের ব্যস্ততা ততোই বাড়ছে৷ শুধু কি তাই, ব্যস্ত মানুষের জীবনের অন্যতম সঙ্গী পোষা প্রাণীও মানুষের সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে উঠছে৷ সামাজিক নানা নিয়মকানুনের মধ্যে তাদের জন্যও জীবন এখন আর ততোটা সহজ নয়৷ কারণ চাইলেই কোন প্রাণী তার নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য প্লেন বা ট্রেনে করে যাতায়ত করতে পারে না৷ আবার মনিব ছুটিতে গেলে অনেক সময়ই পোষা প্রাণীটিকে একা কাটাতে হয় দীর্ঘ সময়৷ কারণ মনিবের ইচ্ছা থাকলেও, অনেক এয়ার লাইন্সই অনুমতি দেয়না, চায়পেয়ে কোন প্রাণীকে প্লেনে বহন করার জন্য ৷ যদিবা কোন কোন এয়ার লাইন্স নিতে রাজি থাকে সেখানে থাকে নানা বাধ্য বাধকতা৷ যেমন প্রাণীটিকে প্রায়ই বিমানে একটি খাঁচার মধ্যে, ব্যাগ রাখার জায়গায় আটকে রাখা হয়৷ আর যাদেরকে কেবিনে আনতে দেয়া হয় তাদের অবশ্যই হতে হয় অনেক ছোট, যেনে বসার সিটের নিচেই তাদের জায়গা হয়৷
নিউইয়র্কের এক বেসরকারি সংস্থার গবেষণা মতে আমেরিকাতে ৯ কোটি বিড়াল, ৭ কোটি ৩০ লাখ কুকুর, ১কোটি ৬০ লাখ পাখি আর ২ কোটি ২০ লাখ অন্যান্য পোষা প্রাণী রয়েছে৷ আর প্রতি বছর প্রায় ৭ কোটি পোষা প্রাণী তাদের মনিবের সঙ্গে ছুটি কাটাতে বা আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে ভ্রমণে বেরিয়ে থাকে ৷ সান ফ্রান্সিসকো সোসাইটি নামের পশুপ্রাণী অধিকার রক্ষার কাজে নিয়োজিত একটি প্রতিষ্ঠান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছে যে, প্রতি বছর ২ কোটি পোষা প্রাণী বিমানে ভ্রমণ করে৷ কিন্তু এর মধ্যে ৫ হাজার প্রাণীই অসুস্থ হয়ে পড়ে বা আহত হয়৷
এই সব সমস্যার সমাধানের জন্য এলিসা বাইন্ডার বিন্ডার এবং ড্যান উইজেল নামে এক দম্পতি পোষা প্রাণীদের জন্য আরামদায়ক এবং নিরাপদ একটি ফ্লাইট চালু করার সিদ্ধান্ত নেন৷
তাদের ভাষায়, মনিব কখনোই তার আদরের প্রাণীটিকে কোন অন্ধকার কক্ষে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে মানসিকভাবে স্থির থাকতে পারবে না৷ তাছাড়া বিশ্বব্যাপী পোষা প্রাণীর সংখ্যা একদিকে যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে তাদের যাতায়াতের মাত্রাও৷ এই সব দিক খেয়াল রেখেই আমরা পোষা প্রাণীর জন্য ফ্লাইট চালুর আবেদন জানাই সাবআর্বান এয়ার-এর কাছে৷ তারা রাজিও হয়৷
উল্লেখ্য, সাবআর্বান এয়ারই পৃথিবীর একমাত্র এয়ার লাইন্স যার কিছু তেজস্ক্রিয় পদার্থ বিমানে বহন করার অনুমতি আছে৷
যে বিমানে করে পোষা প্রাণীদের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে তা হবে একেবারেই তাদের উপযোগী৷ সেখানে চালক এবং কেবিন ক্রু ছাড়া বাকি সবাই হবে চারপেয়ে প্রাণী বা দু পেয়ে পাখি৷ প্রতিটি প্রাণীকে খাঁচায় বন্দি করে প্লেনের সিট থাকে যেখানে, সেখানেই রাখা হবে৷ আর প্রতি ১৫ মিনিট পর পর কেবিন ক্রু তাদের খাওয়া, ঘুমানো বা প্রাকৃতিক কাজ সারার বিষয়টি তাদারক করেবেন৷ ১৭ জন যাত্রী ধারণ করতে পারে এমন একটি প্লেনে ৫০টি করে পোষা প্রাণী থাকবে বলে নিশ্চিত করছে বিমান কর্তৃপক্ষ৷
প্রাথিমকভাবে প্রতি সপ্তাহে একটি করে ফ্লাইট যাবে নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, শিকাগো, ডেনভার এবং লস এ্যান্জেলেসে৷ তবে চাহিদা বাড়লে ফ্লাইট ২০টিতে উন্নীত করা হবে৷ আর ওয়ান ওয়ে যাত্রা পথের ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ১৪৯ ডলার৷
বাইন্ডার দম্পতি বলছেন, তারা আশা করেন খুব শিঘ্রই এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠবে৷ মানুষকে আর তার পোষা প্রাণীর যাতায়তের নিরাপত্তা নিয়ে কোন চিন্তাই করতে হবে না৷
প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক