1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশু মৃত্যু

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২

বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থা ডাব্লিএইচও’র তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১৯ কোটি (১৯০ মিলিয়ন)শিশু ভিটামিন-এর অভাবে নানা অসুখ বিসুখ, যেমন রাতকানা রোগ, রক্তাল্পতা ইত্যাদিতে আক্রান্ত হচ্ছে৷ দুর্বল হয়ে পড়ছে তাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা৷

https://p.dw.com/p/149wx
Dank eines EU-finanzierten Hilfsprojekts können die Einwohner des Dorfs Ghora Chara in Bangladesh sauberes Wasser trinken. Viele Familien in der Region haben bei den häufiger werdenden Überschwemmungen Vieh und Land verloren.
ছবি: EU pressefoto

ভিটামিন এ'র অভাবে হাম ও ফুসফুসের সংক্রমণের মত রোগ ব্যাধিও সহজেই বাসা বাঁধতে পারে৷ বিশেষ করে বাচ্চারাই এসব রোগের কবলে পড়ে৷ এ কারণে বেশ কিছু উন্নয়নশীল দেশে কয়েক দশক ধরে শিশুদের জন্য ভিটামিন-এ সরবরাহের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে৷

দরিদ্র দেশের শিশুদের প্রথম কয়েকটা বছরই বেশ বিপজ্জনক৷ ৮০ লক্ষ শিশু পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করে৷ সোমালিয়া থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান সব দেশেই প্রায় একই রকম অবস্থা৷ অধিকাংশ শিশুই অপুষ্টিতে ভোগে, যার ফলে সংক্রামক রোগগুলিও সহজেই তাদের পেয়ে বসে৷ পাকিস্তানের করাচি শহরের আগা খান ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকের শিশু চিকিত্সক ডা. জুলফিকার ভুট্টাএই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাচ্চাদের ভিটামিন এ-র ড্রপ খেতে দেয়া হয়৷ এগুলো থাকে ক্যাপসুলের মধ্যে৷ ক্যাপসুলটি শুধু খুলে ফেললেই হল৷ কাজটা খুব সহজ৷''

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগ

বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থা সেই ১৯৮৭ সাল থেকেই অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ভিটামিন-এ সরবরাহ করার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে৷ তবে অনেক বিশেষজ্ঞ ভিটামিন এ'র কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে থাকেন৷ কেননা কেউ ঠিক মত জানেনা, ভিটামিন-এ শিশুদের কতটা সাহায্য করে৷ কোনো কোনো চিকিত্সক ভিটামিন- এ'র আদৌ কোনো উপকারিতা আছে কিনা, সে বিষয়ে সন্দিহান৷ এ কারণে জুলফিকার ভুট্টা ও তাঁর টিম নতুন করে ভিটামিন-এ নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে তা প্রকাশ করেছেন৷ জুলফিকার ভুট্টা জানান, ‘‘আমাদের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভিটামিন-এ'র বেশ বড় উপকারিতা রয়েছে৷ ভিটামিন-এ চার জনের মধ্যে এক জন শিশুর জীবন রক্ষা করতে পারে৷ বিশেষ করে সেই সব দেশে, যেখানে শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে এবং যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন পায় না৷''

Two emaciated Bangladeshi children wait among hundreds of other refugees at a rail station in New Jalpaiguri, India along the Bangladesh border to be returned to their country Thursday October 7, 1999. 253 refugees were captured by Indian authorities and sent back to their homeland. (AP Photo/Tarun Das)
অপুষ্টির শিকার শিশুরাছবি: AP

বহু শিশুর জীবন রক্ষা করতে পারে

গবেষকরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত ভিটামিন-এ প্রতি বছর ৬ লক্ষ ছেলেমেয়ের জীবন রক্ষা করতে পারে৷ বছরে দুটি ডোজই যথেষ্ট৷ ভিটামিন-এ শরীরে জমা হয়ে থাকে, যা প্রয়োজনে কাজে লাগে৷ ডা. জুলফিকার ভুট্টা মনে করেন, এই ভিটামিন বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রামক ব্যাধিকে সহজেই মোকাবেলা করতে পারে৷

তাঁর ভাষায়, ‘‘আমাদের বিশ্লেষণে লক্ষ্য করেছি যে, ভিটামিন- এ মৃত্যুর ঝুঁকিই শুধু কমায় না, এটি ডায়রিয়া ও হামের মত রোগকেও প্রতিরোধ করে৷ পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের এক পঞ্চমাংশ মারা যায় ডায়রিয়ায়৷ এই ধরনের রোগে মৃত্যু কমাতে ভিটামিন যে কতটা জরুরি তা সহজেই বোঝা যায়৷''

ভিটামিন এ ক্যাপসুলের দাম খুব বেশি নয়৷ উন্নয়নশীল অনেক দেশে হামের টিকার সঙ্গেও এই ভিটামিন দেয়া হয়৷ বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থার নিউট্রেশন ফর হেল্থ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ফ্রানচেস্কো ব্রাংকা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘টিকার মাধ্যমে দেয়ার পরিবর্তে অনেক দেশে এখন সাধারণ স্বাস্থ্যসেবার আওতায় ভিটামিন দেয়া হচ্ছে৷ সে ক্ষেত্রে, আমরা লক্ষ্য করেছি, বেশ কম শিশুই ভিটামিন-এ পাচ্ছে৷ এই দেশগুলির উচিত হবে তাদের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে লক্ষ্য রাখা, যাতে করে যত বেশি সম্ভব বাচ্চা এই ভিটামিনের সুফল পেতে পারে৷''

মা বাবাকে সচেতন হতে হবে

ডা. জুলফিকার ভুট্টা মনে করেন, বাবা মাকেও এই ব্যপারে এগিয়ে আসতে হবে৷ তাঁর স্বদেশ পাকিস্তানে বাচ্চারা টিকা কর্মসূচির মাধ্যমে ভিটামিন-এ পেয়ে থাকে৷ কিন্তু অনেক বাবা মা বাচ্চাদের টিকা দেয়ার ব্যাপারে উত্সাহ দেখান না৷ এছাড়া ভিটামিন-এ ক্যাপসুল অনেক সময় সঠিকভাবে সংরক্ষিত এবং দ্রুত বিতরণ করা হয় না৷ তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানে আমরা এক বড় জরিপ চালিয়ে লক্ষ্য করেছি যে, অনেক শিশুই ভিটামিনের অভাবে ভুগছে৷ গত পাঁচ বছরে এই প্রবণতা আরো বেড়ে গেছে৷ বৃদ্ধি পেয়েছে দারিদ্র্যও৷ পাকিস্তানে আমাদের ভিটামিন- এ প্রদানের কর্মসূচি রয়েছে৷ কিন্তু এই কর্মসূচির উন্নয়ন করতে হবে, যাতে সব মানুষের কাছেই এই ভিটামিন পৌঁছাতে পারে৷''

সব শিশুরই পুষ্টিকর খাবার পাওয়ার অধিকার আছে, মনে করেন ডা. জুলফিকার ভুট্টা৷ কম পক্ষে তাদের কাছে ভিটামিন এ পৌঁছে দিতে হবে৷ আর তা না হলে ব্যাপারটা হবে অনৈতিক৷ তাঁর সমীক্ষা এটাই প্রমাণ করেছে৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য