1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উপন্যাস লেখা

আশীষ চক্রবর্ত্তী২০ জানুয়ারি ২০১৩

প্রতিভা এবং প্রশিক্ষণ – সাফল্যের জন্য কোনটা বেশি জরুরি? খেলা হলে দুটো থাকলেই সবচেয়ে ভালো৷ কিন্তু লেখালেখিতে, বিশেষ করে উপন্যাস লেখায়? জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয় বাজারকাটতি উপন্যাস লেখারও কৌশল শেখাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/17NiB
ছবি: DW/R. Traube

‘‘আসলে নিজের চিন্তা, কল্পনা এসব দিয়ে লেখা হয়৷ একটা মানুষকে তো শেখানো যায় না যে তুমি এটা চিন্তা করো, করে এটা লেখো৷'' পশ্চিমবঙ্গের কবি মিতুল দত্ত প্রথমেই সংশয় প্রকাশ করলেন ‘বেস্টসেলার' লেখা শেখানোর কার্যকারীতা নিয়ে৷ একাধারে কবি, সংগীত শিল্পী এবং অভিনেত্রী মিতুলের কাছে প্রশ্ন ছিল, পাঠকের সমাদর পাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের এমন লেখালেখি শেখানোটা কেমন? এ প্রশ্ন জার্মানিতে উঠেছিল কমপক্ষে ১৪ বছর আগে৷ ‘ফ্রায়া ইউনিভার্সিটেট বার্লিন' বা বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটি ১৯৯৮ সালেই এমন ধারণাকে যুগোপযোগী মেনে শুরু করে ‘বেস্টসেলার' লেখার কায়দা-কানুন শেখানো৷ যেনতেন লোক নয়, শেখানো হচ্ছে নানা দেশের বেস্টসেলার লেখকদের দিয়েই!

এ মুহূর্তে এ দায়িত্বে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের লেখক অ্যান্ড্রু শন গ্রিয়ার৷ ‘দ্য কনফেশন অফ ম্যাক্স টিভোলি' এবং ‘দ্য স্টোরি অফ আ ম্যারেজ'-এর মতো বেস্টসেলারের এই লেখকের সেমিনার ছাত্র-ছাত্রীরা উপভোগও করছেন খুব৷ বার্লিন ফ্রি ইউনিভার্সিটির ৩০ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীকে সাহিত্য এবং তুলনামূলক সাহিত্য শেখাচ্ছেন গ্রিয়ার৷ কেমন শেখাচ্ছেন? ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ তো রীতিমতো মুগ্ধ! ব্রাজিলের রাওনি ডুরান উপন্যাসের চমৎকার কিছু প্লট নিয়ে লেখা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে৷ কিন্তু অভিজ্ঞতার অভাব সংশয়ে রেখেছিল তাঁকে৷ ২৬ বছর বয়সি এই তরুণ এখন সংশয় মুক্ত, তাঁর ধারণা, গ্রিয়ার তাঁর অভিজ্ঞতার ডালি পুরোপুরি মেলে ধরলে কাজ হবেই৷

Architektur Universitäten Deutschland Henry-Ford-Bau der Freien Universität Berlin
বার্লিন ফ্রি ইউনিভার্সিটির হেনরি ফোর্ড ভবনছবি: Bernd Wannenmacher

কবিতার বই ‘জানলা জুড়ে মেঘ', ‘মরণ!', ‘বিদূষক ও সৌদামিনী, ‘মায়াবী লিবিডো', ‘যে মেয়েটি গোপনে গীটার' ও ‘রঙ্গিলাজন্ম' এবং গল্পের বই ‘কচ্ছপের ডিম' ও ‘রঙ্গিলাজন্ম'-এর লেখক মিতুল দত্ত তারপরও মানতে রাজি নন যে শিখিয়ে পড়িয়ে কাউকে সফল লেখক বানাতে যাওয়া খুব কাজের কথা৷ তাঁর ধারণা, পশ্চিমবঙ্গে শুধু ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রছাত্রীদের এভাবে বাংলায় লেখা শেখালে হয়ত খানিকটা লাভ হবে, ‘‘নিজের চেনাজানা প্রচুর ছেলে-মেয়ে আছে তারা লেখে, কিন্তু ইংরেজিতে লেখে৷ তাদেরকে যদি শেখানো হয় এবং বাবা-মায়েরা যদি উৎসাহিত হয়ে ছেলে-মেয়েদের সেখানে ভর্ত্তি করেন, আমার মনে হয় তখন মাতৃভাষার প্রতি তাদের একটা আগ্রহ তৈরি হতে পারে৷''

বাংলাদেশের তরুণ কবি জুয়েল মুস্তাফিজ৷ ‘জুয়ার আসরে কোনো আঙুলই মিথ্যা নয়' এবং ‘ভাতের ভূগোল' – তাঁর এই দুটো কবিতার বই পাঠক বেশ নিয়েছে৷ তাঁর কাছেও চাওয়া হয়েছিল গ্রিয়ারের লেখা শেখানোর ব্যাপারে খোলামেলা মন্তব্য, জুয়েল বললেন, ‘‘কোনো তরুণ তাঁর লেখার হাতেখড়ি থেকেই যদি সেই কৌশলগুলো তাঁর লেখার মধ্যে আনতে পারে তাহলে মনে হয় সেই তরুণ প্রথম থেকেই তাঁর চিন্তাভাবনা এবং শিল্প-সাহিত্যের যে ধ্যানজ্ঞান সেগুলোকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে পারবে৷''

Week 3/13 Youth - MP3-Mono

তবে সৃষ্টিশীল লেখালেখির বিষয়ে দু'দেশের দুই বাঙালি কবির ভাবনাই একেবারে এক৷ মিতুল দত্তর মতো জুয়েল মুস্তাফিজেরও তাই বার্লিনের বিশ্ববিদ্যালয়টির দেখানো পথের অন্ধ অনুসরণে বেশ আপত্তি৷ জুয়েল অবশ্য আপত্তিটা জানিয়েছেন সংশয়ের মোড়কে, ‘‘শিল্প তো মাটিলগ্ন ভাবনা এবং জীবনাচরণের বিষয়, কিন্তু শিল্পকে যখন কোনোভাবে কোনো কাঠামোর মধ্য দিয়ে শিক্ষা দেয়া হবে তখন সেটা শিল্প বা আদৌ কোনো উপন্যাস হবে কিনা বা সেটা বাজারসফল হবে কিনা, এ প্রশ্ন রয়েই যায়৷''

তাই বলে বাংলাদেশেও বিভিন্ন দেশ থেকে বিখ্যাত লেখকরা আসবেন, এসে তাঁরা তরুণ লেখক বা লেখক হতে ইচ্ছুকদের বাণিজ্যসফল লেখক হতে শেখাবেন – এমন স্বপ্ন দেখতে আপত্তি নেই তাঁর, বরং এর পক্ষে জোরালো যুক্তিই দেখালেন জুয়েল মুস্তাফিজ, ‘‘বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো ইন্সটিটিউট যদি এমন উদ্যোগ নেয় তাহলেও একই ঘটনা ঘটবে৷ যদি জার্মানিতে হতে পারে, সেটা বাংলাদেশেও হওয়া সম্ভব৷ এখানে যখন এমন পদ্ধতি চালু হবে তখন বাইরের লেখকরাও এখানে আসবেন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য