‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’
২০ এপ্রিল ২০১৩শুক্রবার ঢাকায় ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ' ব্যানারে নাগরিক সমাজের জাতীয় নাগরিক সম্মেলনে এই দাবি জানান হয়৷ এই নাগরিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে৷ শিক্ষাবিদ অধাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন৷ তাঁরা বলেন, জামায়াতে ইসলামী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের দলগতভাবে বিরোধিতা করেছে৷ আর তখন তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে৷ তারা কখনোই তাদের এই অবস্থান থেকে সরে আসেনি৷ আর সাম্প্রতিক সময় সারা দেশে ব্যাপক সহিংসতার মাধ্যমে জামায়াত নিজেকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে প্রামাণ করেছে৷ তাই অবিলম্বে সরকারকে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে৷
সাংবাদিক আবেদ খান ডয়চে ভেলেকে জানান, পৃথিবীর কোন দেশে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি রাজনীতি করতে পারেনা৷ তাদের কোন রাজনৈতিক দলকে অনুমোদন দেয়া হয়না৷ আর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী শক্তি হিসেবে সাংবিধানিকভাবেই জামায়াতের এদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই৷
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘‘জামায়াতকে রাজনৈতিক দল বলাই ঠিক না৷ তারা হত্যা, নৈরাজ্য, ও ঘৃনার সৃষ্টি করেছে৷ এরকম দলকে দুনিয়ার কোন দেশে রাজনীতি করতে দেয়া হয়না৷ জামায়াতকে রাজনীতি করতে দেয়া একটি জাতিগত ভুল৷'' এই ভুল শুধরিয়ে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলেন তিনি৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত তার যে সহিংস রূপ প্রকাশ করেছে তাতেই এই দলটি নিষিদ্ধ করা দরকার৷ তারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে৷ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে প্রমাণ করেছে তারা একটি ফ্যাসিষ্ট দল৷ কোন ফ্যাসিষ্ট দল বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবেনা৷''
টিআইবি'র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন, ‘‘জামায়াত- শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ত্বরান্বিত করতে হবে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে যেতে হবে৷ বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানাবার পাঁয়তারা রুখতে হবে৷''
সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ড. জাফর ইকবাল, সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক, ড. সনজীদা খাতুন, কামাল লোহানী, খুশী কবির, ড. আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অজয় রায়, রামেন্দু মজুমদার, কাইয়ুম চৌধুরীসহ আরো অনেক বিশিষ্ট নাগরিক৷
সম্মেলনের ঘোষণা পাঠ করেন ড. সারওয়ার আলী৷ সংগঠকদের একজন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. এ আরাফাত ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা তাদের এই ঘোষণাপত্রকেই দাবি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবেন৷ আর এরপর পর্যায়ক্রমে বিভাগ এবং জেলা পর্যায়ে সম্মেলন করবেন৷ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা থামবেন না৷