1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৫৫ ভাগ শ্রমিক এখনো বেকার

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৪ এপ্রিল ২০১৫

রানা প্লাজা ধস থেকে বেঁচে যাওয়া শতকরা ৫৫ ভাগ শ্রমিক গত দু'বছরেও কোনো কাজ পাননি৷ তাঁর বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন৷ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইডের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে৷

https://p.dw.com/p/1FEL5
Bangladesch Demonstration der Textilarbeiter in Dhaka
ছবি: Imago/Xinhua

আর দু'বছরেও ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা পাননি তারা৷

অ্যাকশনএইডের ‘পোস্ট রানা প্লাজা: হোয়্যার উই স্ট্যান্ড' শীর্ষক এই সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রানা প্লাজা ধসে আহত শ্রমিকদের ৫৫ শতাংশ এখনো বেকার৷ বাকি ৫৪ শতাংশ শ্রমিক দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন৷ শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে না পারার বড় কারণ শারীরিক প্রতিকন্ধকতা৷ ৬৯ শতাংশ শ্রমিক নানা জটিলতায় ভুগছেন৷ ১৫ শতাংশ পছন্দসই কাজ পাচ্ছেন না৷ আর ৭ শতাংশ শ্রমিককে এখনো রানা প্লাজার আতঙ্ক তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে৷'

চলতি বছরের ১৩ থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত রানা প্লাজা ধসে আহত এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবারের দুই হাজার ২০০ জনের ওপর এ সমীক্ষা চালান হয়৷ এক হাজার ৪১৪ জন আহত শ্রমিক ও নিহত শ্রমিকের পরিবারের ৭৮৬ জনের সঙ্গে কথা বলেছে অ্যাকশনএইড৷

সমীক্ষা অনুযায়ী, আহত শ্রমিকদের ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ মনে করেন তাদের শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভালো হয়েছে৷ তবে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ বলেছেন, তাদের অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে৷ আর এক দশমিক ৫ শতাংশ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন৷ ৬১ দশমিক ২ শতাংশ শ্রমিককে এখনো চিকিত্‍সকের কাছে যেতে হয়৷ প্রতি মাসে গড়ে একজন শ্রমিককে চিকিত্‍সা বাবদ ব্যয় করতে হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা৷ ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের মানসিক অবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়নি৷ ৫৯ শতাংশ শ্রমিকের আতঙ্ক ও হতাশা রয়েছে৷ ছয় দশমিক ৬ শতাংশ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন৷

সমীক্ষায় আহত শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত, মানসিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতিসহ রানা প্লাজার ঘটনায় ন্যায়বিচারের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷ সমীক্ষায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২৮৬ জন রানা প্লাজার মালিক এবং ২৫০ জন কারখানা মালিকের শাস্তি দাবি করেছেন৷ এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত চার্জশিট দিতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷

এদিকে দুই বছরেও শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা পুরো পাননি৷ তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে চলছে নানা টালবাহানা৷

আইএলও-র নেতৃত্বে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল সেখানে এখন পর্যন্ত ২৪ মিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে৷ এখনো ৬ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি আছে৷ শ্রম অধিকার বিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিলসের হিসাব অনুযায়ী, দুই বছরে ২,৯০৯ জনকে ৭০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ৷ ক্ষতিপূরণের জন্য পাঁচ হাজার শ্রমিক আবেদন করলেও বাকিদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনা হয়নি৷

শ্রম মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রধান ইসরাফিল আলম এমপি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা সব শ্রমিক যাতে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পায় তার জন্য কাজ করছি৷ আশা করি আগামী জুন-জুলাই মাসের মধ্যে সব ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে৷''তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি অনেক শ্রমিক এখনো বেকার আছে৷ যারা আর কাজ করতে পারবেন না তাদের জন্য পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হবে৷ আর যারা কর্মক্ষম আছেন কিন্তু নান ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন তাদের নিয়ে আমরা পোশাক কারখানার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি৷''

আর রানা প্লাজার ঘটনায় মামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘বিচার প্রক্রিয়া খুবই হতাশাজনক অবস্থায় আছে৷ শ্রম আইনে আমরা নয়টি মামলা করেছি৷ সেগুলোর অগ্রগতি নেই৷''

বিজিএমইএ-র সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজীম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রানা প্লাজায় হতাহত ৪৫ শ্রমিকের সন্তানের লেখাপড়া ও ভরণপোষণের দায়িত্ব বিজিএমইএ নিয়েছে৷ অনেক আহত শ্রমিককে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে৷ ভবন ধসে হতাহতদের সঙ্গে বিজিএমইএ নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে৷ এখন পর্যন্ত ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিজিএমইএ-র পক্ষ থেকে অনুদান দেয়া হয়েছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকরা আমাদের লোক, তাদের জন্য আমাদের আন্তরিকতা ও চেষ্টার কমতি নাই৷''

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৮ শ্রমিক নিহত ও প্রায় আড়াই হাজারের শ্রমিক আহত হন৷ আর ধসের সময় সেখানে কমপক্ষে ৫,০০০ শ্রমিক পাঁচটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য