রাজীব হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপতি বনাম আদালত
৩১ আগস্ট ২০১১ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলার তিন ফাঁসির আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করার পর মাদ্রাজ হাইকোর্ট কেন ফাঁসি কার্যকর করার ওপর আট সপ্তাহের জন্য অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি এই অহেতুক বিলম্বের দরুণ আসামিদের প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়৷ তাই তাঁদের ফাঁসি মকুব করা হোক৷
এই অন্তর্বর্তী রায়ের ফলে আরো যাঁরা ফাঁসির আসামি আছে তারাও আদালতে যেতে পারে৷ রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করার পর আদালত কী তার পুনর্বিবেচনা করতে পারে ? সম্প্রতি ৩২জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৬জনের সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে৷ পাঁচ জনের আর্জি খারিজ হয় এবং২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হামলার আসামি আফজল গুরুসহ দুজনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়া বাকি থাকে৷
রাষ্ট্রপতি আবেদন খারিজ করার পর আদালতের এক্তিয়ার কতটা সে সম্পর্কে বিচারপতি এন.কে পাঁজা ডয়চে ভেলেকে বললেন, এবিষয়ে সংবিধানে সুস্পষ্ট কিছু বলা নেই৷ সংবিধানে রাষ্ট্রপতিই হলেন বিচার বিভাগের প্রধান৷ তিনি আবেদন খারিজ করেছেন৷ স্বভাবতই আইনের প্রশ্ন আসতে পারে৷ তবে মূল শাস্তি মকুবের কথা বলেনি আদালত৷ বিলম্বের কারণটা শুধু জানতে চেয়েছেন৷ বিলম্বের যাথার্থতা কতটা গ্রহণযোগ্য সরকারকে তা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে৷ আদালতের নির্দেশ কেস-টু-কেস পৃথক হতে পারে৷ প্রতিটি কেসের মেরিট বা গুণবত্তা বিচার করতে হবে৷ অতীতে একটা নজির আছে যেখানে সুপ্রিম কোর্ট এই ধরণের বিলম্বের জন্য আসামির ফাঁসি রদ করে তাঁকে যাবজ্জীবন দেন৷
উল্লেখ্য, তামিলনাড়ু বিধানসভায় এক সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে তিন রাজীব ঘাতকের প্রাণদণ্ড মকুব করার আর্জি জানানো হয়৷এর প্রেক্ষিতে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার মন্তব্য বিতর্কটি আরো উসকে দিয়েছে৷ তিনি বলেছেন, জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় অনুরূপ প্রস্তাব পাশ করে যদি সংসদ হামলার আসামি আফজল গুরুর ফাঁসি রদ করার কথা বলা হয়, তাহলে ? বিচারপতি পাঁজার মতে, তাতে দেশে এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক