1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘প্রাতিষ্ঠানিক সহিংসতা’

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

গত ২রা ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রাক্তন ছাত্রদের সমন্বয়ে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট চূড়ান্ত হয়েছে৷ শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে৷

https://p.dw.com/p/1B4wM
Proteste gegen Wahl in Bangladesh
ফাইল ফটোছবি: Getty Images/Afp/Munir uz ZAMAN

আরিফ রেজা মাহমুদ জানান, হামলার পরদিন তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ৮ জন ছাত্রের সমন্বয়ে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেন৷ এবং কমিটি তারপর থেকেই টানা কাজ করে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ করেছে৷ প্রাথমিক অনুসন্ধানে তারা পত্রপত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবি, ভিডিও ফুটেজ, প্রতিবেদন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ দায়িত্বশীলদের বিবৃতি, মামলার এজাহার এবং অপ্রকাশিত ৬৫০টি ছবিকে (স্থির চিত্র) কাজে লাগিয়েছেন৷ তিনি বলেন, এসব বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছেন, হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য এবং পুলিশ যৌথভাবে অংশ নিয়েছে৷ আরিফ রেজা মাহমুদ দাবি করেন, এই যৌথ হামলার প্রমাণ হিসেবে তাদের কাছে ছবি রয়েছে৷ তারা এই হামলাকে তাই সাধারণ ছাত্রদের ওপর ‘প্রাতিষ্ঠানিক সহিংসতা' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন৷

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখেছে, এই ঘটনায় মোট ৬টি মামলা হয়েছে৷ আর কোনো মামলায়ই হামলাকারী হিসেবে যাদের চিহ্নিত করা গেছে, তাদের কাউকেই আসামি করা হয়নি৷ আসামি করা হয়েছে আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্র, বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী , শিবিরের লোকজন এবং অজ্ঞাতপরিচয় বহিরাগতদের৷ তিনি বলেন, প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত ছবি দিয়ে তারা হামলাকারীদের চিহ্নিত করেছেন৷

সমন্বয়কারী আরিফ রেজা মামুদ ছাড়া ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির ৭ জন সদস্য হলেন উদিসা ইসলাম, আরাফাত সিদ্দিকী, ফেরদৌস আহমেদ, সালাহউদ্দিন সুমন, সরোয়ার সুমন, বাঁধন অধিকারী এবং জাহিদ জন৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তন ছাত্ররা এখন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন৷

তারা জানান, এই অনুসন্ধানের চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে ১৮ই ফেব্রুয়রি৷ তার আগে তারা সরেজমিন অনুসন্ধান শেষ করবেন৷ সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ক্রাইম সিন ইনভেস্টিগেশন ও সাক্ষাত্‍কার ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের কাজ এখন চলছে বলে জানান তারা৷

আরিফ রেজা মাহমুদ জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে তারা নিশ্চিত হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স ফি বাড়ানো এবং সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর প্রতিবাদে সাধারণ ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে নামেন৷ এর পিছনে কোনো রাজনৈতিক বা কোনো ছাত্রসংগঠনের ইন্ধনের কোনো প্রমাণ তারা পাননি৷ হামলার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে এই আন্দোলন শুরু হয়৷ আর হামলার দিন ২রা ফেব্রুয়ারি ৮ খেকে ১০ হাজার ছাত্রছাত্রী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করছিলেন৷ তিনি জানান, এই আন্দোলনে কয়েকজন শিক্ষকের নৈতিক সমর্থন থাকলেও তারা আন্দোলনের পরিকল্পনা বা আন্দোলনের সঙ্গে কোনোভাবেই সরাসরি যুক্ত ছিলেন না৷

প্রাক্তন ছাত্রদের কেন এই ফ্যাক্ট ফাউন্ডিং কমিটি এবং এই কমিটির বৈধতা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফ রেজা মাহমুদ বলেন, ‘‘প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা আমরা এড়িয়ে যেতে পারিনা৷ আমরা সঠিক তথ্য জানতে চাই৷ দেশের মানুষকে তা জানাতে চাই৷ আর দেশের নাগরিকদের যে কোনো ঘটনা অনুসন্ধান বা তদন্তের অধিকার আছে৷ অতীতেও এর নজীর আছে৷'' এ নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, নাগরিকরা এ ধরনের তদন্ত কমিটি বা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করতে পারেন৷ এতে আইনে কোনো বাধা নেই৷ আবার আইনের দিক থেকে এর কোনো গুরুত্বও নেই৷ তবে তিনি মনে করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে সরকারের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত৷

উল্লেখ্য, হামলার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য