1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে সাধারণ নির্বাচন

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৮ মার্চ ২০১৪

ভারতের মত দেশে ৮১ কোটি ভোটারকে নিয়ে বিশাল নির্বাচন প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার অভিযানে খরচ হতে পারে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা, যেটা অনুমোদিত অঙ্কের চেয়ে বহুগুণ বেশি বলা হয়েছে এক সমীক্ষায়৷

https://p.dw.com/p/1BWid
অর্থবল ছাড়া নির্বাচনি প্রচার অনেকের কাছে এখনো অকল্পনীয়ছবি: Getty Images/Afp/Narinder Nanu

আগামী ৭ই এপ্রিল থেকে পাঁচ সপ্তাহ ধরে সংসদের ৫৪৩টি আসনের জন্য যে ভোট-পর্ব শুরু হচ্ছে, তার সমগ্র নির্বাচনি প্রক্রিয়ার জন্য খরচের বহর হবে ৩০ হাজার কোটি টাকার মত৷ এই বিপুল অর্থ সংগৃহীত হয় কী ভাবে, কারা দেয়, কী ভাবে দেয় সেটা বেশ ধোঁয়াটে অস্পষ্ট৷ কোনো স্বচ্ছ কাঠামো বা মাপকাঠি নেই৷ সেই সুযোগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সব লেনদেন হয় টেবিলের নীচে কালো টাকায়, বলেছে এক দুর্নীতি-বিরোধী সংগঠন৷

এই বিপুল পরিমাণ ব্যয় নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে বহুগুণ বেশি৷ নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত প্রার্থী পিছু ব্যয় ধরা হয় সংসদীয় আসনের জন্য মোটামুটি এক কোটি টাকা৷ এই বাড়তি টাকার একটা মোটা অংশ আসে রিয়েল এস্টেট, নির্মাণ শিল্প, আবাসন প্রকল্প ও কনট্র্যাকটারি কোম্পানিগুলির কাছ থেকে হিসেব বহির্ভুতভাবে৷ সব রাজনৈতিক দলগুলিকেই কমবেশি দেয়া হয়ে থাকে, তবে এর সিংহভাগ যায় সেইসব বড় বড় জাতীয় দলগুলির তহবিলে, ভোটের পর যাদের সরকার গঠনের সম্ভাবনা থাকে বেশি৷ কারণটা সহজবোধ্য৷ এই ধরনের কোম্পানিগুলির ব্যবসা বা কাজের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে হাজার রকম সরকারি অনুমতি ও ছাড়পত্র৷ যেমন জমি অধিগ্রহণ, পরিবেশ ছাড়পত্র ইত্যাদি৷ নির্মাণ কনট্র্যাক্ট পেতেও লবি দরকার হয়৷

Indien Wahlen in Delhi Arvind Kejriwal
আম আদমি দল রাজনীতিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেছবি: Reuters

তাই তাকালেই ইদানিং চোখে পড়বে নির্মাণ শিল্পের ভারি ভারি ক্রেন, মাটি কাটার যন্ত্রপাতি, ড্রিলিং মেশিন ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির আওয়াজ স্তব্ধ৷ একদিকে পার্ক করা আছে৷ কাজকর্ম সাময়িকভাবে বন্ধ৷ খরচ করার টাকা কোম্পানিগুলি যুগিয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার অভিযানের ভাঁড়ারে৷ বলা হচ্ছে কাজ বন্ধ, কারণ আর্থিক মন্দা৷ ভোটের সময় রাজনৈতিক দলগুলিকে অবৈধভাবে টাকা দেয়াটা তাদের এক ধরনের বিনিয়োগ বলা যেতে পারে৷ অতীতের নির্বাচনি অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্লেষকরা মনে করেন, রিয়েল এস্টেট ও নির্মাণ শিল্প রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রচার অভিযানে টাকা দেবার প্রস্তাব দেয়৷ অনেক সময় তারা সরাসরি নগদ টাকা দেবার পরিবর্তে পরিষেবা খরচ মেটাতে চায়৷ যেমন ভোটের প্রচারে গাড়ি ও বিমান ভাড়া, পোস্টার ছাপানো ইত্যাদি৷ তবে হ্যাঁ, কিছু কোম্পানি আছে, যারা ঘোষিতভাবে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিয়ে থাকে নির্বাচনকালে৷

বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী প্রধান বিরোধী দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতিকে নির্বাচনি ইস্যু করে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন ভোট বাক্সের দিকে তাকিয়ে৷ কিন্তু এমন বহু প্রমাণ আছে, যেখানে অন্য সব দলও প্রচার অভিযানে অবৈধ অর্থ ব্যয়ে পিছিয়ে নেই৷ নির্বাচনি অর্থ ব্যয়ে বেশি লাভবান হয় ছোটোখাটো ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ীরা আর বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি৷

নির্বাচনি ব্যয়ে কালো টাকার খেলা বন্ধ করতে নির্বাচন কমিশন চোখ বুজে নেই৷ প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেবে অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখাকে কাজে লাগিয়েছে৷ বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলির ওপর নগদ টাকা বহনের ওপর চাপিয়েছে নিষেধাজ্ঞা৷ মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রতি প্রার্থীকে স্থাবর-অস্থাবর পরিসম্পদের লিখিত ঘোষণাপত্র জমা দিতে হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে৷ কিন্তু তাতে প্রার্থীর পুরো খরচের হিসেব ধরা পড়েনা৷ অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার দিকে কড়া নজর রাখা হয়েছে৷ কিন্তু তাতে কতটা কাজ হবে বলা মুশকিল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য