1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতীয় পার্টিতেও সংঘাত

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৮ নভেম্বর ২০১৩

নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরের মধ্যে দ্বন্দ্ব এখন চরমে৷ ঘটেছে বহিষ্কার, পাল্টা-বহিষ্কারের ঘটনা৷ ফলে আরেক দফা ভাঙনের মুখে পড়তে পারে জাতীয় পার্টি৷

https://p.dw.com/p/1APyh
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images

এরশাদ গত ১৮ নভেম্বর নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে কাজী জাফরের দ্বন্দ্ব শুরু৷ জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় যোগ দেন ৭ জন৷ এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সেসময় হাসপাতাল থেকে বিবৃতি দিয়েছিলেন কাজী জাফর আহমেদ৷ এরশাদের সিদ্ধান্তে স্তম্ভিত হওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি৷ তবে তাতে এরশাদ তেমন রাগ করেননি৷ বলেছিলেন তিনি (কাজী জাফর) অসুস্থ, হয়তো অভিমান করেছেন৷ সেসময় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছিলেন এরশাদ৷

তবে কাজী জাফরের সর্বশেষ মন্তব্য এরশাদ মানতে পারেননি৷ কারণ কাজী জাফর তাঁকে ‘জাতীয় বেঈমান' এবং ‘বিশ্বাসঘাতক' বলেছেন৷ বলেছেন সুস্থ হয়ে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বসবেন৷ নেতা-কর্মীদের তিনি সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বানও জানান তিনি৷ এর প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার এরশাদ কাজী জাফরকে দল থেকে বহিষ্কার করেন৷ সাংবাদিকদের সেই খবর দিয়ে এরশাদ বলেন, ‘‘তিনি প্রতিদিন আমার বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিবৃতি দিচ্ছেন৷ তিনি আজ থেকে আমার দলে নেই৷ তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের আদেশে সই করেছি''৷ এরশাদ দাবি করেন কাজী জাফর অসুস্থ হলে তাঁর চিকিৎসার জন্য ৩০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তিনি৷ তখন কাজী জাফর এরশাদকে বলেন, ‘‘আপনি আমাকে জীবন দিয়েছেন, চিরকাল আপনার সঙ্গে থাকব''৷

তবে এর পর একই দিনে এরশাদকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন কাজী জাফর আহমেদ৷ তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী গোলাম মোস্তফা সংবাদ মাধ্যমকে এই খবর নিশ্চিত করেছেন৷ জানা গেছে ‘গণবিরোধী' অবস্থান নেয়ায় এরশাদকে বহিষ্কার করেছেন কাজী জাফর৷

Bangladesh Hussain Muhammad Ershad EX-Präsident
এরশাদকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন কাজী জাফর আহমেদছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images

এই অবস্থায় জাতীয় পার্টিতে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ৷ তারা জানান, জাতীয় পার্টিতে কাজী জাফরের নেতৃত্বে সরকার বিরোধী অংশই শক্তিশালী ছিল৷ আর এরশাদও তাদের গুরুত্ব দিতেন বেশি৷ রহুল আমীন হাওলাদারের নেতৃত্বে সরকার সমর্থক অংশ ছিল কোণঠাসা৷ তবে এরশাদের ডিগবাজিতে রহুল আমীন গ্রুপ শক্তিশালী হয়৷ নির্বাচনকালীন সরকারে জাতীয় পার্টির সরকার সমর্থকরাই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপদেষ্টা হয়েছেন৷ এরশাদের নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনেও কাজী জাফর গ্রুপের কেউ ছিলেন না৷ ফলে তারা এখন জাতীয় পার্টি ভেঙে নতুন একটি গ্রুপ করে সরকার বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে৷ এব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি ডয়চে ভেলের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ বহিষ্কার পাল্টা-বহিষ্কারে দল ভাঙছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না'৷ জাতীয় পার্টির নেতারা এখনো প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য এবং তীব্র হতে বেশি সময় লাগবে না বলে জানা গেছে৷

ডাকসাইটে শ্রমিক নেতা কাজী জাফর আহমেদ এরশাদের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন৷ ছিলেন এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী৷ ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে এরশাদের পতনের পর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদসহ অনেক নেতা এরশাদকে ছেড়ে চলে গেলেও কাজী জাফর আহমেদ তাঁর সঙ্গেই ছিলেন৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজী জাফরও আর এরশাদের সঙ্গে নেই৷ এর আগে বিভিন্ন সময়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জু জাতীয় পার্টি থেকে বের হয়ে গিয়ে প্রায় একই নামে আলাদা দল গঠন করেন৷ দুটি উপধারাই এখনো সক্রিয় আছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য