1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ম্যার্কেলের শাটল ডিপ্লোম্যাসি

মার্সেল ফ্যুর্স্টটেনাউ / এমএসএইচ / এআই১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

অভ্যন্তরীণ, ইউরোপীয় এমনকি সামরিক – সব সমস্যা সমাধানে এখন মূল ভূমিকা পালন করছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ এতে তাঁর ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ যেমন হচ্ছে, তেমনি ঝুঁকিও সৃষ্টি হচ্ছে, মনে করেন ডয়চে ভেলের মার্সেল ফ্যুর্স্টটেনাউ৷

https://p.dw.com/p/1EbHG
EU Angela Merkel nach EU-Gipfelberatungen in Brüssel
ছবি: DW/B. Riegert

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জার্মানি অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এখন মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন৷ এর মধ্যে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যকার অঘোষিত যুদ্ধ ও ইউরোজোনের সংকট অন্যতম৷ আর এসব সংকটের তুলনায় ম্যার্কেলের নিজের দেশে বলতে গেলে তেমন কিছুই হচ্ছে না৷ মাঝে একদল ক্ষুব্ধ নাগরিক জার্মানির ‘‘ইসলামীকরণ'' হচ্ছে বলে সরব হয়ে উঠেছিল, কিন্তু ইউরোপের মাটিতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কাছে গুরুত্ব হারিয়েছে সে দাবি৷

বিভিন্ন নেতিবাচক সংকটের বিপরীতে ম্যার্কেল কূটনীতি ব্যবহার করছেন৷ এজন্য তাঁকে কিয়েভ থেকে মস্কো, ব্রাসেলস থেকে বার্লিন বা ওয়াশিংটন থেকে মিনস্ক পর্যন্ত যেতে হচ্ছে৷ আর তাঁর এসব চেষ্টার ফলও পাওয়া যাচ্ছে৷ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওঁলদকে সঙ্গে নিয়ে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সংঘাত যাতে না বাড়ে সেটা নিশ্চিত করছেন তিনি৷ যে এই সাফল্যকে ছোট করা চেষ্টা করবেন সে নিজেকে নিন্দুকদের দলে ভাবতে পারে, আর অ্যাটলান্টিকের দুই পাড়েই এমন মানুষ রয়েছে৷

Merkel und Gesprächen mit Putin in Moskau
ম্যার্কেল এবং পুটিনছবি: Reuters/Ria Novosti/M.Klimentyev

ম্যাচো পুটিন এবং ‘মুটি' ম্যার্কেল

কৌশলগত যত ব্যবধানই থাক মানবিক দিক দিয়ে কিছু বিষয় ম্যার্কেল এবং পুটিনকে মেলাতে পারে৷ পুটিনের মাতৃভাষায় ম্যার্কেল অনর্গল কথা বলে যেতে পারেন৷ আর পুটিনও তাঁর অতীতের প্রয়োজনে শিখেছিলেন জার্মান ভাষা৷ তাই দু'জনের মধ্যে যোগাযোগটা অনেক সহজ৷ তা সত্ত্বেও যে কেউ তাদের মধ্যকার ব্যবধান সহজেই ধরতে পারেন৷ রাশিয়ার পুটিনকে বিবেচনা করা হয় ম্যাচো রাজনৈতিক ‘পোস্টার-বয়' হিসেবে৷ অন্যদিকে, নিজের দেশে ম্যার্কেলের উপাধি হচ্ছে ‘মুটি' বা মা৷ আর এই উপাধি শ্রদ্ধারও হতে পারে, আবার বিদ্রূপ অর্থেও ব্যবহারের সুযোগ আছে৷ উপাধিটি কোন অর্থে ব্যবহার হচ্ছে সেটা তাই নির্ভর করে ব্যক্তির আচরণের উপর৷ ম্যার্কেল ধৈর্য সহকারে, শান্তভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন৷ তিনি মানুষের কথা শোনেন, তাদের উপর আস্থা রাখেন এবং প্রয়োজনে মডারেট করেন৷ অনেকে এটাকে মনে করেন জার্মানির ‘প্রেসিডেনশিয়াল' উপায়ে সরকার পরিচালনার মতো ব্যাপার৷ জার্মানির প্রেসিডেন্ট পদটি আসলে একটি আনুষ্ঠানিক পদ মাত্র৷ আর ম্যার্কেল হচ্ছেন চ্যান্সেলর৷ সরকার প্রধান হিসেবে তাঁর ক্ষমতা অনেক, কিন্তু সেগুলো তিনি ঠিক দেখাতে চান না৷ অনেকের এর প্রশংসা করেন, কেউ কেউ সমালোচনাও করেন৷

তবে ম্যার্কেল পরিষ্কারভাবে নিজের অবস্থান নিতেও সক্ষম৷ আর এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার প্রাণঘাতী সংঘাত বন্ধে তাঁর ভূমিকা৷ রাশিয়ার উপরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ছিলেন ম্যার্কেল, কিন্তু সামরিক হস্তক্ষেপের পুরোপুরি বিরোধী তিনি৷ আর এই অবস্থানের কারণে তিনি তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সম্ভবত হতাশ করেছেন৷মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরকার বিভিন্ন শক্তি ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেয়ার পক্ষে জোর চেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী সে চেষ্টায় জল ঢেলে দিয়েছেন৷ সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেখানে জীবন-মৃত্যুর ব্যাপার সম্পর্কিত, ম্যার্কেল সেখানে অনমনীয় অবস্থান নিতে প্রস্তুত৷ আর একারণে সম্মান, স্বীকৃতি এবং ধন্যবাদ তাঁর প্রাপ্য৷

Kommentarfoto Marcel Fürstenau Hauptstadtstudio
মার্সেল ফ্যুর্স্টটেনাউছবি: DW/S. Eichberg

বর্তমানে ম্যার্কেল বিশ্বে শান্তি ফেরানোর বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ আর এটা করতে গিয়ে অনেক কিছু হয়ত তাঁর নজর এড়িয়ে বেড়ে চলেছে৷ হয়ত তিনি সেগুলোকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না৷ কিন্তু সেসব দিকেও তাঁর নজর প্রয়োজন৷ বিশেষ করে গ্রিসের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ‘‘ইউরো-সংকট'' আবার নতুন মাত্রা পেয়েছে৷

নিজের দেশ এবং দলের বিভিন্ন বিষয়েও ম্যার্কেলের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে৷ ‘অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি' বা এএফডি মতো ইউরো-সংশয়বাদী দলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে৷ পেগিডা আন্দোলনও মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছিল৷ ম্যার্কেলকে তাই নিজের দলের ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য